আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এক রাত থাকার নতুন এ ফি কার্যকর হবে, যা পরের চার বছর বহাল থাকবে।
Published : 27 Aug 2023, 12:04 AM
কোভিডের সময় হারিয়ে ফেলা পর্যটকদের আবার ফিরিয়ে আনতে পাহাড় ঘেরা ভুটান সেখানে ভ্রমণকারীদের এক দিন থাকার ফি অর্ধেক কমিয়ে ১০০ ডলারে নামিয়ে এনেছে।
বছর তিনেক আগে দুনিয়া পাল্টে দেওয়া মহামারীর বিধিনিষেধ কাটার এক বছর পরও ধুকতে থাকা পর্যটন খাতের উন্নয়নে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। সেই অবস্থার পুনরুদ্ধারে ২০২২ সালে তিনগুণ বাড়ানো ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি’ (এসডিএফ) ২০০ ডলার থেকে অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
শুক্রবার সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এক রাত থাকার নতুন এ ফি কার্যকর হবে, যা পরের চার বছর বহাল থাকবে।
কোভিডের আগে এ ফি ছিল ৬৫ ডলার; যা পরিবেশ রক্ষায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে নেওয়া হত। মহামারীকালের দুই বছর পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তোলার সময় ২০২২ সালে তা প্রায় তিনগুণ বাড়ানো হয়।
তখন বলা হয়েছিল, পরিবেশের ক্ষতি করে এমন পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করতেই এ সিদ্ধান্ত। এসডিএফ ফি পর্যটকদের কারণে সৃষ্ট কার্বন উৎপন্ন হওয়া ঠেকাতে ব্যবহার করা হবে।
এর আগে গত জুনে চার দিন বা এর বেশি সময় থাকলে প্রতি রাতের ফি কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তখন চার দিনের এসডিএফ পরিশোধ করে বাড়তি আরও চার দিন থাকার সুযোগ তৈরি করা হয়। এছাড়া ১২ দিনের এসডিএফ ফি দিয়ে থাকা যাবে পুরো মাস।
এবার সেই এসডিএফ ফি অর্ধেকে কমিয়ে আনা হল।
এর যুক্তি হিসেবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিদেশি মুদ্রা অর্জন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে দেশটির পর্যটন খাতের শক্তিশালী ভূমিকা বিবেচনায় নেওয়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে ফি কমানোর সবশেষ বিবৃতিতে বলে রয়টার্স লিখেছে।
বজ্র ড্রাগনের দেশ নামে পরিচিত পাহাড় ঘেরা দেশটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বিচ্ছিন্ন ছিল। বিদেশি পর্যটকদের জন্য ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো দরজা খুলে দেয় দেশটি। ৩০০ পর্যটক দিয়ে প্রথম বছর শুরু করা দেশটিতে কোভিডের আগের বছর ২০১৯ সালে গিয়েছিলেন ৩ লাখ ১৫ হাজার জন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের তুলনায় তা ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করেছেন। এদের প্রায় ৪২ হাজার ভারতীয়; যাদের দৈনিক ফি এক হাজার ২৯৯ ভারতীয় রুপি (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী সাড়ে ১৪ ডলার)। এ বছর পর্যটক আসার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৬ হাজার।
দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট দেশটি দীর্ঘদিন থেকে ব্যাপক হারে পর্যটনকে নিরুসাহিত করছে। পাহাড় চূড়াগুলোর পবিত্রতা রক্ষায় পর্বতারোহণ নিষিদ্ধও করেছে। যে কারণে ভুটানের চেয়ে নিকটবর্তী নেপালে পর্যটক যাচ্ছে বেশি।
এমন অবস্থায় তিন বিলিয়ন ডলারের ভুটানের অর্থনীতিতে পর্যটন খাতের অবদান প্রায় ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় সরকার।
ভ্রমণ কর অর্ধেকে নামিয়ে আনায় আগামী সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর পর্যটনের ভরা মৌসুমে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বেবলে আশা করছেন দেশটির পর্যটন বিভাগের মহাপরিচালক দর্জি ধ্রাধুল।
তিনি বলেন, ওই সময় বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশে অনেক ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। প্রতি বছর এ সময়ে পর্যটকের সংখ্যা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি এসে থাকে।
পর্যটন খাতে প্রায় ৫০ হাজার ব্যক্তি কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিড মহামারীর আগে এ খাত থেকে বার্ষিক আয় ছিল প্রায় সাড়ে কোটি ডলার।