স্তন ক্যান্সার শনাক্তে মেটাল ডিটেকটরের মত যন্ত্র

স্তন ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়েছে কি না তা শনাক্ত করতে মেটাল ডিটেকটরের মত শব্দ করে ওঠা একটি যন্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ রেখে নীতিমালা করা হচ্ছে যুক্তরাজ্যে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2022, 04:41 PM
Updated : 2 June 2022, 04:41 PM

বিবিসি জানিয়েছে, স্তন ক্যান্সার শনাক্ত এবং চিকিৎসার বিষয়টি আরও সহজ করতে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) জন্য এই খসড়া তৈরি করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্স বা এনআইসিই।

এই যন্ত্র্রকে বলা হচ্ছে সেন্টিম্যাগ প্রোব। এটি চৌম্বকিত তরল বা ম্যাগট্রেস চিহ্নিত করতে পারে। এই ম্যাগট্রেস ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরের সেই অংশে প্রবেশ করানো হয়, যেখানে ক্যান্সার বাসা বে঳ধে থাকতে পারে।

চামড়ার নিচ দিয়ে এই তরল যখন বয়ে যায়, যন্ত্রটি তখন বাইরে থেকে এর অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। কোথাও ক্যান্সার কোষ থাকলে সংকেত দিয়ে তা জানিয়ে দিতে পারে।

চিকিৎক তখন শরীরের ওই অংশের নমুনা নিয়ে বায়োপসি করে দেখে নিশ্চিত হতে পারেন, আসলেই ক্যান্সার তৈরি হয়েছে কি না।

এখন কিছু হাসপাতালে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন রেডিওঅ্যাকটিভ ডাই ইনজেকশন দিয়ে স্ক্যান করার পদ্ধতি চালু আছে ক্যান্সার শনাক্তের জন্য। তবে ওই পদ্ধতি বিশ্বে খুব বেশি প্রচলতি নয়।

এনআইসিই এর মেডটেক বিভাগের পরিচালক জেনেট কুসেল বলেন, “স্তন ক্যান্সারে ভোগা রোগীরা জানতে চান, তাদের ক্যান্সার কি ওই অংশেই রয়েছে নাকি পুরো শরীরেও ছড়িয়ে গেছে। যত আগেভাগে এটা জানা যায়, তত ভালো ফল মিলবে চিকিৎসায়।”

তিনি বলেন, যেসব হাসপাতালে রেডিওফার্মেসি বিভাগ নেই, সেখানে ক্যান্সার শনাক্তের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি বাড়তি সুবিধা দেবে। 

“অন্য আরো কিছু বাড়তি সুবিধা রয়েছে। এ পদ্ধতিতে রেডিওঅ্যাকটিভ আইসোটোপ আমদানি করতে হবে না। বায়োপসির জন্যও আর ছুটোছুটি করতে হবে না।”

বাদামি রঙের ম্যাগট্রেস তরলে রয়েছে আয়রন অক্সাইড, যার চুম্বকীয় আবেশ রয়েছে। ইনজেকশনের মাধ্যমে এই তরল ঢুকিয়ে দেওয়া হলে শরীরের লিমফেটিক সিসটেম তা শুষে নেয়।

স্তন ক্যান্সারের বেলায় অনেক ক্ষেত্রেই বগলে টিউমার বেড়ে ওঠে। ম্যাগট্রেস তরল লিম্ফ নোডের ওই পথ অনুসরণ করে এগিয়ে যায়। তাতে লিম্ফ নোডের পুরো পথের রঙ গাঢ় বাদামি হয়ে ওঠে। তাতে বায়োপসির সময় কাজ সহজ হয়ে যায়।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেন, “যুক্তরাজ্যে স্তন ক্যান্সার রোগী বেশ দেখা যাচ্ছে। এই গবেষণা আমাদের বিজ্ঞানীদের হাতে একটি নতুন অস্ত্র তুলে দেবে শরীরে ছড়িয়ে পড়া ক্যান্সার শনাক্তে।”

তিনি জানান, এনএইচএস এক বছরেই ২০ লাখ নারীর স্তন ক্যান্সার শনাক্তের পরীক্ষা করেছে এবং শনাক্তদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছে। তাতে করে অনেক জীবন বেঁচে গেছে এবং কোভিডের সময় রোগীর যে চাপ ছিল, তাও কাটিয়ে ওঠা গেছে।

“রোগীর জীবন বাঁচানোর হার বাড়াতে আমরা সব সময় নতুন প্রযুক্তির চিকিৎসা পদ্ধতিকে স্বাগত জানাতে চাই।”