উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়াসহ দেশটির সাংবাদিকদের চার সংগঠন।
Published : 13 Sep 2024, 09:48 PM
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভসহ ২৫ জন সাংবাদিককে ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের সময়কার ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামী করার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে ডিআরইউ।
একই সঙ্গে পেশাদার সাংবাদিকদের এ ধরনের হত্যা মামলা থেকে অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকার প্রতিবেদকদের এ সংগঠনের নেতারা।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সহ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম ও সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন বলেন, ঢালাওভাবে পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেওয়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ রকম হত্যা মামলা চলমান থাকলে পেশাদারিত্ব রক্ষায় বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে ডিআরইউ।
তাদের ভাষ্য, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকলে তা যেমন তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, তেমনি স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে।
গত বুধবার রাজধানীর ভাসানটেক থানায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে মিরপুরে মো. ফজলু হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, যেখানে ২৫ জন সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ অন্য নেতাদের সঙ্গে মামলায় সাংবাদিকদের মধ্যে ডিআরইউর বর্তমান সভাপতিসহ অন্য সাংবাদিকদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে নিহতের বড় ভাই মো. সবুজ অভিযোগ করেন, গত ৫ অগাস্ট সরকারপতনের দিন ভাসানটেকের দিগন্ত ফিলিং স্টেশনের সামনে ছাত্র–জনতার বিজয় মিছিলে গুলি চালানো হলে ৩১ বছর বয়সী ফজলু নিহত হন।
এটি ছাড়াও সরকার পতনের পর আরও বেশ কয়েকটি মামলায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের আসামি করা হয়েছে।
ভারতীয় প্রেস ক্লাবসহ ৪ সংগঠনের উদ্বেগ
এদিকে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন ও হামলার ঘটনায় মদদ দেওয়া এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়াসহ দেশটির সাংবাদিকদের চার সংগঠন।
শুক্রবার এক চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে তাদের উদ্বেগের কথা জানান সংগঠনগুলোর নেতারা।
হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে ২৫ সাংবাদিক আসামি
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এতে বলা হয়, “দ্যা ফরেন করেসপনডেন্টস ক্লাব অব সাউথ এশিয়া (এফসিসি), প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া (পিসিআই), দ্য ইন্ডিয়ান উইমেন’স প্রেস কর্পস (ডব্ল্যুপিসি) ও প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (পিএ) বাংলাদেশে তালিকা করে সাংবাদিকদের হয়রানি ও নিষিদ্ধ করায় উদ্বিগ্ন।
“এরই মধ্যে অন্তত ৫২ জন সম্মানিত মিডিয়া ব্যক্তিত্বকে হত্যা মামলা, তাদের মধ্যে কাউকে আটক করা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের সম্মুখীন করা মত প্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতায় অন্তরায়।”
এতে বলা হয়, “স্বাধীন সাংবাদিকতায় যারা হস্তক্ষেপ করছে বা হয়রানির উদ্দেশে যারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নেমেছে, তাদের প্রকাশ্যে আনার দাবি জানাচ্ছি।”
চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তায় ‘ব্যক্তিগতভাবে’ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।