পেট কমাতে যেসব খাদ্যাভ্যাসে নজর দিতে হবে

স্ট্র দিয়ে পানীয় পানও হতে পারে পেট ফোলার কারণ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2022, 07:52 AM
Updated : 27 Oct 2022, 07:52 AM

পেটের স্ফিতভাব কমানোর লক্ষ্য ভ্রষ্ট হতে পারে বাজে খাদ্যাভ্যাসের প্রভাবে।

সাধারণভাবে ব্যায়াম আর অতিরিক্ত খাওয়া কমানোর মাধ্যমে পেটের মেদ ঝরানোর কথা বলা হয়। তবে কিছু অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে এই কৌশলও মাঠে মারা যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নেবরাস্কার নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ অ্যাম্বার প্যানকোনিন বলেন, “আমরা জানি অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে বেশি ক্যালরি গ্রহণ, মিষ্টিজাতীয় খাবার ও পানীয় পেট কমানোর অন্তরায়।”

স্বাস্থ্যকর রেসিপি’র ওয়েবসাইট ‘স্ট্যরলিস্ট’য়ের এই প্রতিষ্ঠাতা ইটদিস ডিটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলেন, “সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে পেটের ফোলাভাব হজমে গণ্ডগোল, খাবার সহ্য করার ক্ষমতা কমায় ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণে বাধা দেয়।”

নিউ ইয়র্ক’য়ের পুষ্টিবিদ ও ‘বেটার দেন ডায়েটিং’ সাইটের প্রতিষ্ঠাতা বনি টাউব-ডিক্স বলেন, “খাবার গ্রহণ থেকেও পেটে স্ফীতভাব হতে পারে।”

তাই কোন ধরনের খাবার পেটেফোলাভাব তৈরি করে সে বিষয়ে জানা থাকা ভালো।

প্রয়োজনীয় আঁশ গ্রহণ না করা

প্রতিদিন প্রয়োজনীয় খাদ্যআঁশ গ্রহণ না করলে পেটফোলাভাব তৈরি হতে পারে।

প্যানকোনিন ব্যাখ্যা করেন, “আঁশের অভাবে হজমে সমস্যা হতে পারে। অন্ত্রের পিচ্ছিলভাব তৈরিতে ভূমিকা রাখে ভোজ্যআঁশ। যে কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এড়ানো যায়। ‘বড় বাথরুম’ ঠিকভাবে না হলে পেটফোলাভাব থাকবেই।”

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিকের তথ্যানুসারে, প্রতিদিন নারীদের ২১ থেকে ২৫ গ্রাম ও পুরুষদের ৩০ থেকে ৩৮ গ্রাম আঁশ গ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে।

পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণের অভাব

প্রোটিনের অভাবেও পেট স্ফীত থাকতে পারে।

প্যানকোনিন বলেন, “দেহের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করতে দরকার পর্যাপ্ত প্রোটিন। যদি সরল কার্বোহাইড্রেইট বেশি আর প্রোটিন কম গ্রহণ করা হয় তবে দেহে তরল ধারণের পরিমাণ বাড়তে পারে’ ফলাফল পেটফোলা।”

মায়ো ক্লিনিক জানায়, একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন তার শরীরের ওজনের সঙ্গে মিলিয়ে গড়ে ০.৮ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।

যেমন- কারও ওজন যদি ৭৫ কেজি হয় তবে প্রতিদিনি তার প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা হবে ৬০ গ্রাম।

আবার বয়স, ব্যস্ততার পরিমাণ ইত্যাদি বিবেচনা করে পেশির ক্ষয় রোধ করতে প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা বাড়তে পারে। বয়স ৪০ থেকে ৫০ হলে, এই প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা কেজি প্রতি ওজন হিসেবে ১ থেতে আধা গ্রাম বাড়বে।

যদি প্রতিদিন ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকে তবে প্রয়োজন পড়বে প্রতি কেজিতে ১.১ থেকে ১.৫ গ্রাম।

চুইং গাম থেকে পেট ফোলা

বিশেষ করে চিনিহীন চুইং গাম পেটফোলাভাব বেশি মাত্রায় তৈরি করতে পারে।

পুষ্টিবিদ টাউব-ডিক্স ব্যাখ্যা করেন, “অতিরিক্ত চুইং গাম চাবানোর ফলে পেটে বাতাস ঢুকে। সেখান থেকে তৈরি হয় পেটফোলাভাব। আর চিনিহীন চুইং গামগুলো সাধারণত তৈরি হয় ‘সুগার অ্যালকোহল’ দিয়ে, যা ফোলাভাব, হজম তন্ত্রে অস্বস্তি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।”

পাইপ দিয়ে পান করা

মিষ্টি পানীয় স্ট্র বা পাইপ দিয়ে খেতে বেশ লাগে। তবে সেক্ষেত্রেও রয়েছে সমস্যা।

টাউব-ডিক্স বলেন, “যতবার স্ট্র দিয়ে পান করবেন, ততবারই বেলুন ফোলানোর মতো পেটও ফোলাবেন বাতাসে। কারণ স্ট্র দিয়ে পান করলে পেটে বাতাস ঢুকে বেশি। আর এই অবস্থা বেশি ঘটে কার্বোনেইটেড কোমল পানীয় বেশি গ্রহণ করলে।”

তাই স্ট্র বাদ দিয়ে গ্লাসে পান করতে হবে। আর স্ট্র ব্যবহার করতে চাইলে পানীয় টানতে হবে ধীরে।

কোমল পানীয় বেশি গ্রহণ

“কার্বোনেইটেড পানীয়তে এমনিতেই চিনি থাকে বেশি। তার উপর এসব গ্যাসীয় পানীয় পেটের ভেতর যেয়ে বাতাসের পরিমাণ বাড়িয়ে স্ফীতভাব তৈরি করে”, বলেন টাউব-ডিক্স।

তবে তিনি জানান, হজমজনিত সমস্যা আর পেটফোলাভাব অনুভব করলে ‘স্পার্কলিং ওয়াটার’ পান করা উপকারী। যা পেটের গ্যাস বের করে দিতে সাহা্য্য করে।

অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ

অ্যালকোহল যে ওজন বাড়ায় সেকথা নতুন করে বলার নেই।

প্যানকোনিন বলেন, “অ্যালকোহল কোমড়ের পরিধি আর ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ এতে যে ক্যালরি থাকে যা শরীরে কোনো কাজে আসে না। ফলে জমা হতে থাকে।”

পাশাপাশি অ্যালকোহল গ্রহণে অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছেও জাগে। এই কারণেও ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে পেটও বাড়ে।

আরও পড়ুন:

Also Read: পেটের মেদ গলাতে সাহায্য করে যেসব খাবার

Also Read: পেট সমতল রাখতে পালংশাক

Also Read: যেসব খাবার পেটে গ্যাস তৈরি করে