শুধু পানি নয়, নানান পানীয় রয়েছে যা অন্ত্রের জন্য উপকারী।
অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে সেখানকার ‘মাইক্রোবায়োম’য়ের সুস্বাস্থ্যও বজায় রাখতে হবে।
অসংখ্য ‘মাইক্রো-অর্গানিজম’ নিয়ে অন্ত্রের ‘মাইক্রোবায়োম’ সৃষ্টি হয়, যার মধ্যে কিছু উপকারী, কিছু অপকারী।
দুটোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারাটাই মুল বিষয়। আর তা না থাকলেই দেখা দেবে পেটের গোলমাল, ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম’, ‘ইনফ্লামাটরি বাওয়েল ডিজিজ’, স্থূলতা, এমনকি অন্ত্রের ক্যান্সারও হতে পারে।
নিয়মিত কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখলে অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব।
এর মধ্যে খাবার আর পানীয় গ্রহণের অভ্যাসের দিকে নজর রাখলেই অনেকটা ঝুঁকি এড়ানো যায়। এজন্য সকালে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
সেই অভ্যাসগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘অ্যাকাডেমি অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডাইটেটিকস’য়ের মুখপাত্র পুষ্টিবিদ জেন ব্রুনিং।
পানি পান করা: ইটদিসনটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্রুনিং বলেন, “শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য সবচাইতে কার্যকর হল পানি। আর সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি পান করা অত্যন্ত উপকারী একটা অভ্যাস।”
কারণ এই সময় শরীরে পানির অভাব থাকে। যে কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। পর্যাপ্ত ভোজ্য আঁশ গ্রহণ করলেও পানি প্রয়োজন আছে। কারণ পানি ছাড়া আঁশ তার কাজ করতে পারবে না। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি পান করতে হবে।
কফি পান: ব্রুনিং বলেন, “সকালে এক কাপ কফি পান করলে মলত্যাগের অভ্যাস নিয়মিত থাকবে। সাধারণ কফিই যথেষ্ট শরীরকে মলত্যাগের ইঙ্গিত দেওয়ার জন্য।”
তবে শুধু ‘ক্যাফেইন’ যে এখানে মুখ্য ভূমিকা পালন করে তা নয়। ‘ডিক্যাফ’ কফিও একই কাজ করতে সক্ষম। আবার কফি অন্ত্রের ‘মাইক্রোবায়োম’য়ের ভারসাম্য বজায় রাখতেও উপকারী।
“তবে পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে,” বলেন ব্রুনিং।
অন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে অতিরিক্ত কফি পান করা যাবে না। সকালে কফি পানের অভ্যাস যাদের আছে এবং তাতে যদি কোনো সমস্যা অনুভূত না হয় তবে অন্ত্র কফি সহ্য করে এবং উপকার পায়। তবে সবার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একই রকম হয় না।
তাই শুধু কফির উপর ভরসা করলে চলবে না।
ভোজ্য আঁশযুক্ত পানীয়: ব্রুনিং বলেন, “কিছু পানীয়তে ভোজ্য আঁশ মেলে। যেমন- টমেটো মিশ্রিত পানীয়। আবার পানি কিংবা পানীয়তে ‘ফাইবার সাপ্লিমেন্ট’ মিশিয়েও পান করতে পারে। খাদ্যাভ্যাসে ‘সল্যুবল’ এবং ‘ইনসল্যুবল’ দুই ধরনের ‘ফাইবার’ বা ভোজ্য আঁশের ভারসাম্য থাকতে হবে।”
‘সল্যুবল’ বা পানিতে দ্রবণীয় আঁশ হজমক্রিয়া সক্রিয় রাখবে আর ‘ইনসল্যুবল’ বা অদ্রবণীয় আঁশ মল অপসারণ প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।
দুইয়ের মিশ্রণ হবে অন্ত্রের জন্য আদর্শ। দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে থেকে পর্যাপ্ত ভোজ্য আঁশ যদি নিশ্চিত করতে না পারা যায় তবে সকালে ‘ফাইবার’ বা আঁশ আছে এমন কোনো পানীয় হবে অত্যন্ত উপকারী।
স্মুদি: ফল খাওয়া অসাধারণ একটা উপায় হলো স্মুদি। যে ফলগুলো সারাদিনে খাওয়া হবে না, সেগুলো স্মুদি বানিয়ে একবারে পান করে ফেলা যেতে পারে।
জামজাতীয় ফলগুলো ভোজ্য আঁশ সরবরাহ করবে। পাশাপাশি মেশানো যায় তিশির গুঁড়া, চিয়া ইত্যাদি। যা দেবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি ভোজ্য আঁশ।
আরও উপকার চাইলে এসব স্মুদিতে মেশানো যায় টক দই।
আরও পড়ুন