প্রাকৃতিক মেহেদির রং গাঢ় হতে সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে।
Published : 21 Apr 2023, 09:28 PM
যে কোনো শুভ ও আনন্দ অনুষ্ঠানে মেহেদি ব্যবহার করার চল রয়েছে।
মেহেদির রং গাঢ় হলে দেখতেও সুন্দর লাগে। আর দীর্ঘস্থায়ী করতে ঘরোয়া কিছু উপায় মেনে চলা যেতে পারে।
ড্রাগরিসার্চ ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় ফার্মাসিস্ট নওশাদ খান মেহেদির রং গাঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী করার উপায় সম্পর্কে জানান।
সেখান থেকে জানানো হল বিস্তারিত।
রাসায়নিক উপাদান মুক্ত মহেদি: প্রাকৃতিক মেহেদি যাতে রং গাঢ় করার জন্য কোনো রাসায়নিক উপাদান যোগ করা হয়নি এমন মেহেদি ব্যবহার করা উচিত। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারে হাত ও পায়ের কোনরূপ ক্ষতি হয় না।
ধুয়ে নেওয়া: ত্বকের মেহেদির রং গাঢ় হওয়ায় জন্য তা থেকে ময়লা বা তেল দূর করে নেওয়া প্রয়োজন। এতে ত্বকে মেহেদি ভালো মত শোষিত হয়, রং গাঢ় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
তাপ প্রয়োগ: মেহেদি দেওয়ার পরে তাতে তাপ প্রয়োগ করা রং গাঢ় করতে সহায়তা করে। ব্লোড্রায়ারের সাহায্যে হাতে তাপ প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে তা যথেষ্ট দূর থেকে এবং সীমিত পরিমাণে তাপ প্রয়োগ করতে হবে।
এসেনশল অয়েল ব্যবহার: কিছু এসেনশিয়াল তেল মেহেদির রং গাঢ় করতে পারে যেমন- লেবু, ইউক্যালিপটাস বা লবঙ্গ তেল।
লেবু ও চিনির যৌগ: মেহেদির রং গাঢ় করার সবচেয়ে সনাতন পদ্ধতি হল লেবু ও চিনি গুলে তা ব্যবহার করা। এই যৌগ মেহেদিকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাজা রাখে। চিনি ত্বকের সাথে মেহেদি আটকে রাখে এবং লেবু রং কড়া করতে সহায়তা করে।
চিনির সিরা তৈরির পর ঠাণ্ডা করে নিতে হবে। এরপর এতে লেবুর রস যোগ করে সিরাপের মতো বানিয়ে তুলার প্যাডের সাহায্যে মেহেদি শক্ত হয়ে আসলে এর ওপরে মেখে নিতে হবে।
লবঙ্গ ব্যবহার: মেহেদির রং গাঢ় করার অন্যতম প্রচলিত উপায় হল লবঙ্গ ব্যবহার। লোহার প্যানে কয়েকটি লবঙ্গ গরম করে তার ভাপ নেওয়া মেহেদির রং গাঢ় করতে সহায়তা করে। দুয়েকবার লেবু ও চিনির মিশ্রণ ব্যবহারের পরে এই ভাঁপ নিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
নিরাপদ দূরত্বে পাঁচ ছয়বার হাতের দুইপাশেই ভাঁপ নিতে হবে। এতে মেহেদির রং গাঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
লবঙ্গের ভাঁপ রং ধরে রাখে এবং স্থায়িত্ব বাড়ায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন মেহেদি গলে পড়ে না যায়।
বাম ব্যবহার: হাতের মেহেদি সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে এবং উঠে আসলে ত্বকে যে কোনো বাম যেমন- ‘ভিক্স বা টাইগার’ ব্যবহার করা রং বাড়াতে সহায়তা করে। এতে থাকা মেন্থল মেহেদির রং গাঢ় করতে ভূমিকা রাখে।
ভ্যাসলিন: গোসলের আগে মেহেদির নকশার ওপরে ভ্যাসলিন মেখে নিতে হবে। সাবান, শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্টের সংস্পর্শে মেহেদির রং সহজেই হালকা হয়ে যেতে পারে। ভ্যাসলিন মেহেদির ওপরে পাতলা আবরণ তৈরি করে সুরক্ষিত রাখে।
প্রাকৃতিক মেহেদির রং গাঢ় হতে সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে।
নারিকেল তেল: মেহেদির রং গাঢ় করতে নারিকেল তেল চমৎকার কাজ করে। এটা মেহেদির রং ফিকে হয়ে যাওয়া এড়াতে সহায়তা করে। আর্দ্রতা ধরে রেখে রং দীর্ঘস্থায়ী করতে নারিকেল তেল সহায়ক।
কফি ও বিট রুট: কফি প্রাকৃতিকভাবেই কালচে বাদামি রংয়ের। মেহেদিতে কফি পাউডার যোগ করা রং গাঢ় করতে সহায়তা করে।
বিটের রস প্রাকৃতিক রংয়ের জন্য নানান রকমের প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয়। এটা মেহেদির রং গাঢ় করতে খুব ভালো কাজ করে।
গুঁড়া অথবা রস হিসেবে বিট রুট মেহেদিতে ব্যবহার করা যায়।
মেহেদি ব্যবহারের আগে কয়েকটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে
· যেখানে মেহেদি দেওয়া হবে, সেখানে আগে ভালোমতো সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
· লোশন, তেল বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যাবে না। এতে মেহেদি ত্বকে ভালো মতো শোষিত হবে।
· ওয়াক্স বা মেডিকিউর পেডিকিউর করার প্রয়োজন থাকলে, মেহেদি ব্যবহারের আগে করে নিতে হবে।
· মেহেদি দেওয়ার সময় প্রয়োজন হতে পারে এমন সব কিছু হাতের নাগালে রাখা।
· ঢিলা ও আরামাদায়ক পোশাক পরা এবং ভালো মতো চুল বেঁধে নেওয়া উচিত।
· রাসায়নিক উপাদানের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে বাঁচতে মেহেদি ব্যবহারের আগে হাতে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস এসেনশল অয়েল মালিশ করে নেওয়া যেতে পারে।
· মেহেদির রং গাঢ় ও কড়া হলে দেখতে ভালো লাগে। ভালো রং পেতে ভালো প্রাকৃতিক মেহেদি ব্যবহার করা উচিত।
আরও পড়ুন