সানস্ক্রিনের ব্যবহার

উপকার পাওয়ার জন্য জানা চাই সঠিক পদ্ধতি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2015, 11:33 AM
Updated : 19 May 2015, 11:33 AM

রোদের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক বাঁচাতে সানস্ক্রিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রসাধনী। তবে অনেক ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে ব্যবহার না করার কারণে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা পাওয়া যায় না।

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে সানস্ক্রিন ব্যবহারের সাধারণ কিছু ভুলের বিষয় উল্লেখ করা হয়।

- ঠিক আগের মুহূর্তে নয় বরং বের হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই মেডিকাল সেন্টারের ত্বকবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেনেট গ্রাফ বলেন, “ঘর থেকে বের হওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। এতে প্রসাধনী ঠিকভাবে কাজ শুরু করতে পারে।”

- শুধুমাত্র মুখে এবং হাতে নয় বরং পুরো শরীরের যেসব অংশ রোদের সংস্পর্শে আসতে পারে সেখানে সানস্ক্রিন লাগানো উচিত। নইলে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়, জানালেন জন হপকিন্স এসক্লেরোডারমা সেন্টারের ডা. নোয়েলে শেরবার।

- শুধু শরীরের ত্বক নয় ঠোঁটের ত্বকও রোদের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। মুখ বা শরীরের অন্যান্য অংশের ত্বকের তুলনায় ঠোঁটের ত্বক পাতলা হয়। যা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। তাই ঠোঁটে এসপিএফযুক্ত লিপ বাম ব্যবহারের পরামর্শ দেন ডা. গ্রাফ।

- ঠোঁটের মতো পা, হাত, কান, গলার পেছনে ইত্যাদি অংশেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। যা অনেক সময়ই এড়িয়ে চলেন বেশিরভাগ মানুষ। তবে এসব অংশও সূর্যের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

- গরমে ঘামের কারণে বা পানি লাগলে সানস্ক্রিন ধুয়ে যায়, এ বিষয়টি অনেকেই লক্ষ রাখেন না।

ডা. শেরবার বলেন, “যখন ঘাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বা পানির সংস্পর্শে যেতে হতে পারে তখন অবশ্যই ‘নন-ওয়াটার-রেজিস্টান্ট’ সানস্ক্রিন বেছে নিতে হবে।”

- শরীর এবং ত্বকের জন্য আলাদা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হয়, যা অনেকেরই জানা নেই।

“শরীরের ত্বকের তুলনায় মুখের ত্বক কোমল হয়। তাই মুখের ত্বকে যেন কোনো ধরনের সমস্যা বা ব্রণ না হয় সেজন্য বিশেষ ফর্মুলার সানস্ক্রিন তৈরি করা হয়। শরীরের জন্য অ্যালকোহল ছাড়া সানস্ক্রিন বেছে নিতে হবে।” বললেন ডা. শারবার।

- মেঘলা দিনে অনেকেই মনে করেন রোদের তাপে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ডা. গ্রাফ বলেন, “সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রায় ৮০ ভাগই আটকাতে পারে না মেঘ। তাই মেঘলা দিনেও অন্যান্য সময়ের মতো সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি।”

- ঘরের ভিতরে বা গাড়ির কাচ বন্ধ থাকলে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচা সম্ভব, এমন ধারণা একেবারেই ভুল।

ডা. শেরবার বলেন, “জানালা বা উইন্ডশিল্ড ‘ইউভিবি’ রশ্মি আটকে দেয় তাই রোদে পোড়া দাগ হয় না। তবে ইউভিএ রশ্মি আটকাতে পারে না জানালার কাচ। তাই ত্বক পুরোপুরি সুরক্ষিত নয় ঘর বা গাড়ির ভিতরে। এজন্য ঘরে থাকলেও এসপিএফযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

- এসপিএফ আট বা ১৫ যুক্ত প্রসাধনী সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করলেও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত নয়। তাই পর্যাপ্ত মাত্রার এসপিএফযুক্ত সানস্ক্রিন বেছে নেওয়া দরকার। এসপিএফ ৩০ যুক্ত সানব্লক শতকরা ৯৭ ভাগ সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করে। যেখানে এসপিএফ ৫০ শতকরা ৯৮ ভাগ ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়।

- একবার সানস্ক্রিন লাগালেই তা সারাদিন কাজ করবে, এমন ধারণা একেবারেই ভুল।

ডা. গ্রাফ বলেন, “ঘর থেকে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার যেমন জরুরি তেমনি কিছুক্ষণ পরপর সানস্ক্রিন লাগানো ততটাই কার্যকর। প্রতি ৮০ মিনিট পরপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।”

- বেশিরভাগ সানস্ক্রিনের মোড়কেই চোখের চারপাশের ত্বক এড়িয়ে ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া থাকে। তবে চোখের আশপাশের কোমল ত্বকের জন্য ইউভি রশ্মি অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই চোখ এবং চোখের ত্বক রোদ থেকে বাঁচাতে ইউভি প্রোটেকশনযুক্ত সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত।