সুরকার ফুয়াদ আল মুক্তাদির যখন লিরিকসে যন্ত্রানুষঙ্গ যোগ করে তৈরি করছিলেন টি টোয়েন্টির থিম সং, অথবা আইসিসি আর অংশ নেওয়া দেশগুলোর ক্রিকেট কর্মকর্তারা যখন মিটিংয়ের পর মিটিং করছেন আসন্ন বিশ্বকাপের সাফল্য নিশ্চিত করার, তখনও সম্ভবত এদের কেউই কল্পনা করেননি এবার টি টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপকেও ছাপিয়ে যাবে থিম সংটি। আর ছাত্রছাত্রীদের নাচে ভর করে সেটি পেরিয়ে যাবে দেশের সীমানা।
Published : 23 Mar 2014, 07:24 PM
রংপুর থেকে রাশিয়া, চট্টগ্রামের জিইসি মোড় থেকে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ার-- সবখানে নাচের ভাষা এখন চার ছক্কা হইহই। কনা, এলিটা ও পান্থ কানাইয়ের কণ্ঠের সঙ্গে নৃত্যরত তরুণদের ভিডিওচিত্রগুলো দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সাড়া ফেলেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম জি-নিউজ ১৯ মার্চ শিরোনাম করে— ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির ‘বাংলা’ গান লোপেজ, পিটবুলের ফুটবল বিশ্বকাপের গানকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম অনলাইন সংবাদমাধ্যম কুরিয়ারমেইল ডটকম ডট এইউ’র শিরোনাম— ‘শুনুন আইসিসি ওয়ার্ল্ড টোয়েন্টি-টোয়েন্টি’র অফিসিয়াল থিম সং ‘চার ছক্কা হইহই।’
১৯ মার্চ কুরিয়ারমেইল তাদের খেলা বিভাগের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, বাংলা ও ইংরেজি ভাষার মিশ্রণে ‘সিক্সটিন ক্রিকেট ক্রেইজি নেইশন, হাও এক্সাইটিং’ এবং ‘বোম্বাস্টিক রকিং’ শব্দগুলো উদ্দীপনা জাগানিয়া সুরে গাওয়া এই গান ২০১৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য গাওয়া জেনিফার লোপেজ, পিটবুল ও ক্লদিয়া লেইতের গাওয়া গানগুলোকে টেক্কা দিতে পারে।
সারাবিশ্বে এই গানের জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ ‘ফ্ল্যাশ মব’। অন্তত তাই মনে করেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা গ্রে’র অপারেশন এক্সিকিউটিভ মাহবুবুর রহমান শাকিল। সেই সঙ্গে গানে রয়েছে উত্তেজনা ছড়ানোর মতো ছন্দ।
‘চার-ছক্কা’ গানের তালে তৈরি প্রথম ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্ল্যাশ মব ভিডিওচিত্রগুলো গ্রে’র তত্ত্বাবধানে তৈরি।
এ ব্যাপারে শাকিল বলেন, “তরুণদের মধ্যে ক্রিকেটের উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে আমরা আইসিসির কাছে এই ফ্ল্যাশ মব ভিডিওচিত্র তৈরির প্রস্তাব করি। প্রতিযোগিতামূলক এই ভিডিওচিত্র নির্মাণে আইসিসি রাজি হলে প্রাথমিকভাবে আমরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মোট ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রস্তাব দেই।”
শাকিল জানান, ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আছে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও এনাম মেডিকেল কলেজ। বুয়েট প্রথমে রাজি হয়েও বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই কার্যক্রমে অংশ নেয়নি।
বন্দরনগরীর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অংশ নেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটি।
সিলেটের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
“আমাদের কোরিওগ্রাফাররা নাচের প্রাথমিক মুদ্রাগুলো দেখিয়ে দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই নিজেদের উদ্যোগে ফ্ল্যাশ মবগুলো তৈরি করে জমা দেয়।” কথার ফাঁকে বললেন শাকিল।
ফ্ল্যাশ মব ভিডিওর অচিন্তনীয় সাড়ার বিষয়ে শাকিল বলেন, “ভিডিওচিত্রগুলো হাতে পাওয়ার পর ৪ মার্চ আমরা আইসিসির কাছে জমা দেই। ৬ তারিখের দিকে আইসিসির ওয়েবসাইটে ভিডিওগুলো প্রকাশ করা হয়। অল্পদিনেই এমন সাড়া পড়ল, কী আর বলব!”
তিনি আরও বলেন, “এখন তো ব্যক্তিগত উদ্যোগেও তৈরি হচ্ছে ফ্ল্যাশ মব ভিডিও। সেগুলো আমাদের কাছে জমাও পড়ছে। এতগুলো ভিডিও নিয়ে আমরা কী করব তা এখনও ভাবিনি। তবে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যারাই ভিডিও বানিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তাদের অন্তত আইসিসির পক্ষ থেকে একটি ধন্যবাদপত্র দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা।”
আসলেই ক্রিকেট পাগল জাতি হয়ত আমরা। নইলে রাস্তার মাঝে আৎকা এভাবে নাচতে কেউ রাজি হয়। উন্মাদনায় সাড়া দিয়েছেন শিক্ষকরাও।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মহিউদ্দিন মাহিন বলেন, “গ্রের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর আমার কাছে মনে হল ব্যাপারটা তো মন্দ নয়। আমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিসটান্ট প্রক্টর হেলাল উদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আরেক প্রভাষক বসুমিত্র চাকমা। বিভিন্ন বিভাগে খোঁজখবর করা শুরু করলাম। ছাত্ররা উৎসাহী হয়ে এই ডাকে সাড়া দিল ব্যাপকভাবে।”
মাহিন আরও বলেন, “ঢাকা থেকে কোরিওগ্রাফাররা এসে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তবে পুরোটাই ছাত্রদের তত্ত্বাবধানে হয়েছে।”
রাস্তার মাঝে নাচতে কোনো অস্বস্তি কাজ করেনি? এ রকম প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্ল্যাশ মবে অংশ নেওয়া সাবরিনা ফারাহ অরণী বলেন, “কোনো অস্বস্তিই লাগেনি। আমি আসলে ছোটবেলা থেকে নাচ শিখছি। মঞ্চে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। তাই নাচতে আমার তেমন অসুবিধা হয়নি। তবে রাস্তার মধ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে নাচার অভিজ্ঞতাই আলাদা।”
কথায় কথায় সমাজবিজ্ঞানের এই ছাত্র বলেন, “ফ্ল্যাশ মব নিয়ে আগে কিছুটা ধারণা ছিল। তাই যখন শুনলাম আমাদের এ রকম একটা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তখন নতুন অভিজ্ঞার স্বাদ নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এতে অংশ নিলাম।”
উল্লেখ্য এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইউটিউবের দর্শক র্যাঙ্কিংয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্ল্যাশ মবের ভিডিওটি প্রথমস্থান দখল করে রেখেছে।
এ রকম প্রশ্নের অরণীর সরল জবাব, “না না সে রকম কিছু না। আসলে সবাই মিলে মজা করেছি। ব্যতিক্রমী একটা অভিজ্ঞতা হল এটাই অনেক। আমাদের ভিডিওটা প্রথমস্থান দখল করে আছে এতেই খুশি।”
প্রায় একই রকম কথা বললেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির নাসিরউদ্দিন। তার কথায়, “আসলে বিতর্কের বাইরে কিছু একটা করতে গিয়েই এই কাজটা করা। তাছাড়া টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপ বলে কথা।”
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হয়েও নাচতে অসুবিধা হয়নি? এ রকম প্রশ্নের জবাবে নাসির বলেন, “আসলে পুরো ব্যাপারটার মধ্যে ক্রিকেটের উত্তেজনা কাজ করেছে। কোনো অডিশনের ব্যবস্থা করা হয়নি। উৎসাহী সবাই অংশ নিয়েছে। মাত্র দুদিনের প্র্যাকটিস করে এই ভিডিও তৈরি করি আমরা।”
এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে ইউটিউবের দর্শক র্যাঙ্কিংয়ে নর্থ সাউথের ফ্ল্যাশ মব ভিডিওচিত্রটি দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে।
কোত্থেকে এল এই ফ্ল্যাশ মব
ফ্ল্যাশ মবের আসল বিষয়ই হল জনসমক্ষে হঠাৎ অনেক লোক উপস্থিত হয়ে অদ্ভুত কিছু কর্মকাণ্ড করে আবার ভিড়ের মধ্যে মিশে যাওয়া। আর এই কাণ্ড ঘটানোর ইতিহাস বেশিদিনের নয়।
২০০৩ সালের জুন মাসে নিউ ইয়র্কের ম্যানহ্যাটনে ঘটে প্রথম ফ্ল্যাশ মব। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন ডটকমের প্রতিবেদন অনুসারে, ওই কার্যক্রমের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন হার্পার ম্যাগাজিনের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক বিল ওয়াসিক। যিনি ২০০৬ সালে তার একটি ব্লগ পোস্টে নিজেকে ফ্ল্যাশ মবের উদ্ভাবক হিসেবে পরিচয় দেন।
সিএনএন ডটকমে ২০০৩ সালের ৯ অগাস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ওয়াসিকের প্রথম উদ্যোগ ভেস্তে গিয়েছিল। ম্যানহ্যাটনের একটি দোকানে জড়ো হওয়ার জন্য তিনি ৫০ জনকে ই-মেইল পাঠিয়েছিলেন।
তবে তার পরের উদ্যোগটি বেশ ভালোভাবেই সফল হয়। পরিকল্পনা অনুসারে একশ’ জনেরও বেশি লোক বাড়ির সরঞ্জাম বিক্রির দোকান মেইসি’স-এ জড়ো হয়। তারপর একটি ‘প্রেম কম্বল’ কেনার জন্য বিক্রয়কর্মীকে নানান ধরনের উদ্ভট প্রশ্ন ছুড়ে তাকে বিমূঢ় করে হঠাৎ সবাই সটকে পড়ে।
আরেকটি ম্যানহাটন ফ্ল্যাশ মব ঘটে সোহো এলাকার একটি জুতার দোকানে। যারা সেখানে নিজেদের মেরিল্যান্ডের পর্যটক হিসেবে পরিচয় দেয়। পরে তাদের সেন্ট্রাল পার্কের একটা উঁচু জায়গায় বসে পাখির মতো আওয়াজ করতে দেখা যায়।
খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়তে থাকে এই পদ্ধতি। তাই সিএনএন ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম করে ‘ফ্ল্যাশ মব’ ক্রেইজ স্প্রেডস।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ইউরোপে প্রথম ফ্ল্যাশ মব ঘটে ২০০৩ সালে ২৪ জুন। রোমের একটি মিউজিক ও বইয়ের দোকানে তিনশ’ জনের মতো লোক ঢুকে এমন সব বইয়ের খোঁজ করতে থাকে যেগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই।
একই বছর ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় ঘটে বার্লিন ফ্ল্যাশ মব। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে সিএনএন এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, প্রায় ৪০ জনের মতো লোক ব্যস্ত রাস্তায় জড়ো হয়ে মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে ‘ইয়েস, ইয়েস!’ বলে চিৎকার করে ওঠে। তারপর হাততালি দিতে থাকে।
এভাবে লন্ডন, অ্যামস্টারডাম, ডাবলিন, জুরিখ ও ভিয়েনাতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ফ্ল্যাশ মব। আর এ কারণে নতুন শব্দ হিসেবে ফ্ল্যাশ মব অভিধানে জায়গা করে নেয়।
২০০৪ সালের ৮ জুলাই, বিবিসি নিউজের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারির ১১তম সংস্করণে বেশকিছু নতুন শব্দ যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে, ‘ডিজাইনার বেবি’, ‘স্পিড ডেটিং’ ও ‘ফ্ল্যাশ মব’।
মেরিয়াম ওয়েবস্টার অভিধানে ফ্ল্যাশ মবের ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে-- নিমন্ত্রিত হয়ে (ই-মেইল বা টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে) নির্দিষ্ট সময় ও স্থানে নির্দেশিত কোনো কাজ করা জন্য উধাও হওয়ার আগে একদল লোকের জড়ো হওয়াকে বোঝায়।বাংলাদেশে প্রথম ফ্ল্যাশ মবের ঘটনা ঘটে ২০১২ সালে।
ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এইজ ২০১২ সালে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, প্রথমবারের মতো ঢাকা দেখল নিজস্ব ভঙ্গিমায় ফ্ল্যাশ মব। কাওরান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে এই ফ্ল্যাশ মবের উদ্যোক্তা ছিল ‘দ্য প্রজেক্ট’ নামের একটি সংস্কৃতিক দল। তারা কোরিয়ান শিল্পী সাই-এর ‘গাংনাম স্টাইল’ গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করে।
এছাড়া বাংলাদেশে দুটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় আরও দুবার ফ্ল্যাশ মব হয়।
তবে মজার বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে তো বটেই, এমনকি বিশ্ব ইতিহাসেও আইসিসি টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপ ২০১৪’র এইসব ফ্ল্যাশ মবগুলো একেবারেই ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে।
বলতে গেলে নতুন করে ফ্ল্যাশ মবের ইতিহাস গড়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। কারণ এবারই প্রথমবারের মতো একটি গান দিয়ে এতবার ফ্ল্যাশ মব হল। শুধু দেশেই নয়, সীমানা পেরিয়ে বিভিন্ন দেশের বাঙালিদের মনেও সাড়া ফেলেছে এই গান।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিটি কলেজ অফ নিউ ইয়র্ক, আর্লিংটনের ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস এবং ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অফ রাশিয়ার বাঙালি ছাত্রদের তৈরি ফ্ল্যাশ মবের ভিডিওগুলো ইউটিউবের দর্শক র্যাঙ্কিংয়ে যথাক্রমে সপ্তম, আঠার ও একুশতম স্থান দখল করে আছে।
এছাড়া ২২ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অপেরা হাউজের সামনে ম্যাকাউরি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি প্রায় ৩০ ছাত্রছাত্রী একটি ফ্ল্যাশ মবে অংশ নেয়।
বিকাল ৫টার দিকে আয়োজিত এই ফ্ল্যাশ মবে অংশ নেওয়া ছাত্রী রওনক জাহান নিশা জানান, "আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ভিডিওটি আপলোড করা হবে।”
প্রবাসে অবস্থান করে ফ্ল্যাশ মবে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা সর্ম্পকে নিশা বলেন, “আমরা এক সপ্তাহ অনুশীলন করেছি। বিদেশে বসে বহুজাতিক পরিবেশে এ রকম একটি কাজে অংশ নিয়ে গর্ব বোধ করছি।”
“আরও ভালো লেগেছে এই দেখে, ভাষার তফাৎ থাকার পরও ভিনদেশিরাও এটা উপভোগ করেছে।” কথার ফাঁকে বললেন বাণিজ্যে স্নাতকে অধ্যয়নরত এই ছাত্রী।
গ্রের শাকিল বলেন, “আমার জানামতে একটা নির্দিষ্ট গান নিয়ে এতগুলো ফ্ল্যাশ মবের ঘটনা এবারই প্রথম। শুধু তাই নয়, একটি ‘থিম সং’ নিয়ে এই পরিমাণ ভিডিওচিত্র নির্মাণ হয়েছে কি না, তাও সন্দেহ আছে। তাই আমরা গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের জন্য আবেদন করার কথা চিন্তা করছি।”
বল উড়ায়া গেল কই
ক্রিকেটের বল সীমানা পেরুলেই চার-ছক্কা। আর গান যখন দেশের সীমা মানে না তখন ওয়ার্ল্ড রেকর্ড না হোক, অন্তত বাংলা গানের ছন্দে বিদেশিদের নাচতে দেখতে মন্দ লাগবে না নিশ্চয়।
তাই তো কুরিয়ারমেইল ডটকম ডট এইউ আশা প্রকাশ করেছে এই ভাষায়, “গানটি যেভাবে জনপ্রিয় হচ্ছে, তাতে লন্ডন, মুম্বাই, কেপটাউন ও সিডনির রাস্তায় চার ছক্কার তালে উজ্জ্বল পোশাকে তরুণদের আকস্মিক নৃত্য এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।”