অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর দিক

উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ভীতিকর। তবে লক্ষণ জানা থাকলে ঝুঁকি এড়ানো যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2022, 08:03 AM
Updated : 16 June 2022, 11:57 AM

অতিরিক্ত কোলেস্টেরল দেহে ভয়ানক প্রভাব ফেলতে পারে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক’স উইমেন’স কার্ডিওভাস্কুলার সেন্টার’য়ের পরিচালক ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট লেসলি চো বলেন, “কোলেস্টেরল কমানোর নানান প্রমাণিত উপায় রয়েছে।

ইট দিস নট দ্যাট ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন “বংশগত ভাবে এই সমস্যা থাকলেও হৃদরোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায়।”

কতটা বেশি মানে অতিরিক্ত

প্রতিবেদনে, জন্স হপকিন্স মেডিসিন’য়ের ‘অ্যাডভান্সড লিপিড ডিজঅর্ডার প্রোগ্রাম অ্যান্ড ডিজিটাল হেল্থ ক্লাব, চিক্কারোনে সেন্টার ফর দি প্রিভেনশন অফ কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ’য়ের পরিচালক ডা. শেথ শে মার্টিন বলেন, “যাদের ধমনীতে ‘প্লাক’ আছে বা যাদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে তাদের জন্য বিশেষজ্ঞরা এলডিএল’য়ের মাত্রা ৭০ মি.লি. গ্রাম/ডিএল-এর নিচে রাখতে পরামর্শ দেয়।”

যাদের এই ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই তাদের জন্য এলডিএল এর মাত্রা ১৯০ মি.লি. গ্রাম/ ডিএল বা তার বেশি হলে ১শ’র নিচে রাখার সুপারিশ দেন বিশেষজ্ঞরা।

ডায়াবেটিস আছে এরকম ৪০ থেকে ৭৫ বয়সিদের মধ্যে এলডিএল ৭০ বা তার ওপরে থাকলে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।

উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণ

বংশগত হতে পারে। তবে সবক্ষেত্রে নয়। 

ডা. চো’য়ের মতে, “কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়ামের অভাব ও বার্ধক্যজনিত কারণকে দোষারোপ করা অনেকটা সেকেলে ব্যাপারের মতো। বর্তমানে  ১৮ বছর বয়সেও এর কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে দেখা গেছে।”

নারী ও উচ্চ কোলেস্টেরল

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে, সমস্ত স্ট্রোকজনিত মৃত্যুর মধ্যে ৬০ শতাংশ হয় নারীদের।

যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ডা. ডলোরা উইসকো বলছেন, “নারীদের বিশেষভাবে সচেতন থাকা প্রয়োজন। যদি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরল থাকে, অথবা মুখে গর্ভনিরোধক বড়ি গ্রহণ করেন এবং ধূমপান করেন তবে তা নারীদের ক্ষেত্রে স্ট্রোক হওয়ার প্রধান ঝুঁকিকর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।”

উচ্চ কোলেস্টেরলের ভয়ানক ক্ষতিকারক দিক

উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে হৃদরোগ এবং স্ট্রোক হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যানুসারে, উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে হওয়া প্রধান রোগ হল ‘করোনারী হৃদরোগ’। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে ধমনীতে দেয়াল তৈরি হয় যা পরে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস নামে পরিচিতি লাভ করে।

এই অবস্থার কারণে ধমনী সংকুচিত হয়ে যায় এবং সংকীর্ণ রক্তনালীগুলো হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়। ফলে হৃৎপিণ্ডে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহ না হওয়া থেকে ‘অ্যানজাইনা (বুকে ব্যথা) হয়।

অথবা রক্তনালী সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেলে এবং হৃদপেশি অকেজো হতে শুরু করলে হার্ট অ্যাটাক হয়।

কোলেস্টেরল কমানোর উপায়

প্রথমত রক্ত পরীক্ষা করে কোলেস্টেরলের মাত্রা জানতে হবে।

নিউ ইয়র্ক’য়ের হৃদরোগ-বিশেষজ্ঞ হাইথাম আহমেদ বলেন, “রক্তে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকলেও যা এলডিএল আছে তা ক্ষতিকারক হতে পারে।”

এই কোলেস্টেরল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আঠালো হতে পারে যা প্লাক তৈরি করে। এর কণাগুলো ছোট বা ঘন হতে পারে যার মানে অনেক বেশি কণা থাকে।

ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া’র পেন মেডিসিনের নিউরোলজির অধ্যাপক ব্রেট কুচিরা বলেন, “জীবনযাপনের ধরনও এর ওপর প্রভাব রাখে। যা খাওয়া হচ্ছে তা সরাসরি স্ট্রোকের ঝুঁকিতে অবদান রাখে।”

গবেষণায় দেখা গেছে, মেডিটেরিয়ান ঘারানার খাদ্যাভ্যাস এর ঝুঁকি কমাতে পারে। শরীরচর্চা ও কর্মক্ষম থাকা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুন: