সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় কম হলে তা হৃদযন্ত্রের জন্যেও ঝুঁকির হয়।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে- বয়স যাদের পঞ্চাশের নিচে এবং শরীরে উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা যাদের অস্বাভাবিকভাবে কম, তাদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা যথেষ্ট। ক্ষেত্র বিশেষে এ অভাবের ফল অপকারী কোলেস্টেরলের চেয়েও বেশি ঝুঁকির হতে পারে।
‘এলডিএল-সি’— যাকে শরীরের জন্য অপকারী কোলেস্টেরল বলা হয়, বেশি মাত্রায় থাকলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। কারণ এই কোলেস্টেরল রক্তনালীতে ‘প্লাক’ তৈরি করে রক্ত জমাট বাধায়। ফলে রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায়।
অপরদিকে শরীরের জন্য উপকারী কোলেস্টেরলকে বলা হয় ‘এইচডিএল-সি’, যা কাজ করে ঝাড়ুদার হিসেবে। রক্তনালী থেকে বাড়তি চর্বি ও বাজে কোলেস্টেরল ঝেঁটিয়ে বিদায় করে।
প্রধান গবেষক, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ছাত্র ব্র্যাডলি কলিন্স বলেন, “তরুণ হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের উপর করা এই গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৯০ শতাংশ পুরুষ এবং ৭৫ শতাংশ নারীর মধ্যে ‘এইচডিএল-সি’র মাত্রা কম।”
চল্লিশোর্ধ পুরুষ এবং পঞ্চাশোর্ধ নারীদের শরীরে ‘এইচডিএল-সি’য়ের স্বাস্থ্যকর মাত্রা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের হাত থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। এই সুরক্ষার পেছনে কিছুটা অবদান ‘এইচডিএল-সি’য়ের রক্তনালী থেকে বাজে কোলেস্টেরল পরিষ্কার করা, প্রদাহ রোধ, রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। অপরদিকে ‘এইচডিএল-সি’ কম থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকি বাড়ব।
কলিন্স আরও বলেন, “এইচডিএল-সি’য়ের মাত্রা কম থাকাও কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হিসেবে দেখা উচিত।”
ওয়াশিংটনে আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি’র ৬৬তম বার্ষিক সম্মেলনে গবেষণাটি তুলে ধরা হবে।
গবেষণার জন্য মোট ৮১৩ জন ৪৫ বছরের নিচে পুরুষ এবং ৫০ বছরের নিচে নারীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়, যাদের হার্ট অ্যাটাকের পর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
ধূমপান ত্যাগ, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, শারীরিকভাবে কর্মচঞ্চল থাকা, ফলমূল ও শাকসবজি বেশি খাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি এড়িয়ে চলার মাধ্যমে শরীরে এইচডিএল-সি অর্থাৎ উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ানো সম্ভব বলে গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়।