যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ‘সার্টিফায়েড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিপিএ)’ জ্যাকলিন স্ট্রাউস রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “পেশার খাতিরে আমি অসংখ্য মানুষের কথা জানি যারা বিলাসবহুল প্রসাধনী ব্যবহার করে নিজেদের যত্ন নেন। মানসিক অবস্থা ভালো রাখতে তারা দেশ বিদেশে কেনাকাটা করেন, ব্যয়বহুল স্থানে বেড়াতে যান।”
মানসিক শান্তি এখন মানুষের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা অর্জনের আরও অনেক উপকারী উপায় আছে। যেমন- অর্থ সঞ্চয় করা, সঞ্চিত অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহারের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা কারবে এমন কোনো সরঞ্জামের পেছনের খরচ করা ইত্যাদি।
স্ট্রাউস পরামর্শ দেন যে, “আর্থিক এবং মানসিক স্বস্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক কাগজপত্র ডিজিটাল ডিভাইসগুলোতে সংরক্ষণ করতে পারেন। এজন্য অনেক অ্যাপ এখন পাওয়া যায়।”
বাজেটে আপনার সুস্থতার রুটিন রাখুন
‘ইজি বাজেট ব্লগ’য়ের লেখিকা মেরিলি স্পাইগনার বলেন, “নিজের যত্ন নিতে আর্থিকভাবে প্রতারিত হওয়া কিংবা খরচ দেখে আক্কেল গুড়ুম হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে হলে বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করতে হবে। আবার তার জন্য অন্য খরচের বাজেট কমাতে হবে এমনটাও জরুরি নয়।”
একই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের এই আর্থিক ব্যবস্থাপক আরও বলেন, “অপরদিকে অল্প খরচে নিজের যত্ন নেওয়ার উপায়গুলো তেমন তৃপ্তি দেয় না। ফলে নিজের যত্ন নেওয়ার পর মানসিকভাবে তেমন আনন্দ মেলে না। এই দুইয়ের মাঝে ভারসাম্য রাখতে প্রতিমাসের বিনোদন ও নিজের যত্নের জন্য কিছুটা অর্থ বরাদ্দ রাখতে পারেন।”
স্পাইগনার আরও উল্লেখ করেছেন যে, শুধু নারীরাই সৌন্দর্যচর্চা করে এই ধারণা এখন সেকেলে। পুরুষরাও আজকাল নিজের যত্ন নিতে ব্যয় করতে গিয়ে বেহিসেবি হয়ে উঠছেন। আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পুরুষের জন্যও একই পরামর্শ প্রযোজ্য।”
যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব থেকে সময় নিন
যুক্তরাষ্ট্রের সনদস্বীকৃত ‘ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট’ ডা. বি. নিলাজা গ্রিন তার সাময়িকি ‘ইনট্রোস্পেক্টিভ জার্নাল: থেরাপিস্ট এডিশন’য়ে বলেন, নিজের যত্ন নেওয়া নিয়ে আলোচনায় সবার আগে মনে আসে ‘ম্যানিকিউর’, ‘পেডিকিউর’, ‘মাসাজ’, ব্যয়বহুল ভ্রমণ ইত্যাদির কথা। আসলে নিজের যত্ন নেওয়ার সবচাইতে কার্যকর উপায় হল দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক রুটিন।”
নিয়মিত খাওয়া, বিশ্রামের জন্য সময় বের করা, শারীরিক পরিশ্রম করা এবং কাজের ফাঁকে বিরতি নেওয়া এই সাধারণ বিষয়গুলো নিজের যত্নে মৌলিক অংশ।
তিনি আরও বলেন, “তবে পরিবারের অংশ হিসেবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যত্ন নেওয়ার দায়িত্বও থাকে আপনার ঘাড়ে। আর অন্যদের যত্ন নিতে গিয়ে নিজের যত্ন নেওয়ার কথা মনে থাকে না। আর সেটাই আপনাকে পরিহার করতে হবে দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য।”
নিজস্ব সময় ও কর্মশক্তির সংরক্ষণ
যুক্তরাষ্ট্রের টাওসন’য়ের একজন বোর্ড-প্রত্যয়িত মনোবিজ্ঞানি সেবিকা শ্যারন ফিশার। পাশাপাশি মহিলাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও কাজ করছেন তিনি।
তার কথায়, “নিজের সময় কীভাবে ব্যয় হবে সেই সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। অন্যদের খুশি করতে, তাদের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে, তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের যত্ন প্রতিদিনই হারিয়ে যায় নারীদের। এখানেই পরিবর্তন আনতে হবে। নিজের জন্য একটা দিন রাখার চেষ্টা করুন, যেদিন পুরো সময়টা নিজের জন্যই ব্যয় করবেন।”
আরও পড়ুন