সাম্প্রতিক সময়ে ‘ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়’য়ের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে বেশিরভাগ মানুষই পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন এ, সি এবং ডি গ্রহণ করতে পারেন না।
তাই বলে এখন ভিটামিন ট্যাবলেট বা মাল্টি ভিটামিনের ওপর ঝাপিয়ে পড়তে হবে এর কোনো মানে নেই।
বরং প্রাকৃতিক উৎস থেকেই মেটানো যেতে পারে ভিটামিনের ঘাটতি।
ভিটামিন ডি
সূর্যের আলো ত্বকে পড়লে এই ভিটামিনের শরীরে তৈরি হয়, যা আমাদের হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এই কথা এখন মোটামুটি সবারই জানা।
তবে এই ভিটামিন উৎপন্ন করতে যে পরিমাণ সূর্যালোক দরকার তা হয়ত আমাদের শরীরে পড়ে না।
পেনসালভানিয়া’র নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ জিনা কনসালভো ‘ইট দিস নট দ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “অভিজ্ঞতা থেকে বলছি ভিটামিন ডি’র ঘাটতি খুবই সাধারণ বিষয়। কারণ আমরা বেশিক্ষণ সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থাকি না। তাই শরীর প্রয়োজন মতো এই ভিটামিন তৈরি করতে পারে না।”
উৎস: ডিম, মাছের তেল, দুধ ও টক দই ভিটামিন ডি’য়ের উৎস বলে জানান কনসালভো।
ভিটামিন বি টুয়েল্ভ
স্নায়ু, ডিএনএ ও লাল রক্ত কণিকার জন্য প্রয়োজন এই ভিটামিন। এছাড়া দেহের শক্তি বাড়াতেও এর ভূমিকা আছে। প্রাণিজ খাবার থেকে পাওয়া গেলেও উদ্ভিজ্জ খাবারে থেকে মিলবে না এই ভিটামিন।
তাই যারা নিরামিষাশী তাদের এই ভিটামিনের ঘাটতি থাকাই স্বাভাবিক।
উৎস: ‘ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)’য়ের তথ্যানুসারে ঘাস খাওয়া গরুর মাংস, মুরগি, সামুদ্রিক ও দুগ্ধজাত খাবার এবং ডিম থেকে মিলবে বি টুয়েল্ভ।
ভিটামিন এ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারিতা, কোষের বৃদ্ধি ও নিরাময় এবং হাড়ের শক্তির জন্য এই ভিটামিন খুবই প্রয়োজন।
উৎস: ইউএসডিএ’য়ের সূত্রানুসারে বাছুরের মাংস, মিষ্টি আলু ও গাজর ভিটামিন এ’র উৎকৃষ্ট উৎস। এছাড়া ‘ফিশ লিভার অয়েল’, যকৃত, ডিমের কুসুম, মাখন ও দুধের সর থেকেও পাওয়া যায় এই ভিটামিন।
ভিটামিন সি
কোভিড-১৯ মহামারীর শুরুর পর এই ভিটামিনের কথা কারও জানতে বাকি নেই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর, বিশেষ করে ঠাণ্ডা জনিত রোগ দূরে রাখতে ভিটামিন সি দরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ আরও জানায় এই ভিটামিন শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বক সুস্থ রাখার পাশাপাশি ধমনীও ভালো রাখে।
‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা’র গবেষকদের করা নিরীক্ষায় দেখা গেছে ব্যায়ামের সময় চর্বি পোড়াতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি। দেখা গেছে উপযুক্ত মাত্রায় ভিটামিন সি’র সঙ্গে দেহের চর্বি ও কোমরের মাপের সম্পর্ক রয়েছে।
উৎস: টক-জাতীয় ফল ভিটামিন সি’র সবচেয়ে ভালো উৎস। কমলা ছাড়াও লাল ক্যাপ্সিকাম, মরিচ, ব্রকলি, স্ট্রবেরিতের রয়েছে ভিটামিন সি।
পটাসিয়াম
‘ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়’য়ের গবেষণায় দেখা গেছে সুস্থ হৃদযন্ত্র এবং বৃক্কের (কিডনি) কাজের জন্য এই খনিজের প্রয়োজন।
এছাড়া দুভাবে এই উপাদান পেট সমতল রাখতে সাহায্য করে। এক হল- ব্যায়ামের পর শরীর সারিয়ে তোলা এবং দেহের অতিরিক্ত পানি ও সোডিয়াম বের করে দেওয়া, যা পেটফোলাভাব কমে।
উৎস: কলা, পত্রলশাক ও সবুজ সবজি এই খনিজের ভালো উৎস। ইউএসডিএ’র তথ্যানুসারে গুড় থেকে সবচেয়ে বেশি মিলবে পটাসিয়াম।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন