হাড়ক্ষয় রোগের কারণ ও সাবধানতা

‘অস্টিওপোরোসিস’ হলে হাড় দুর্বল হয়ে ক্ষয়ে যেতে থাকে। ফলে হাড় হয় ভঙ্গুর।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2021, 05:50 PM
Updated : 2 June 2021, 05:50 PM

বয়স, রজঃবন্ধ, বংশগত কারণ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি’য়ের অভাব ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে হাড়ক্ষয় রোগ হয়। তবে মুশকিল হল বেশিরভাগ মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আছে কি-না তা হাড়ের সমস্যা হওয়ার আগ পর্যন্ত টের পান না।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের ডা. আনিকা কে. আনাম স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটন ‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “অস্টিওপোরোসিস’ হলো হাড়ের অসুখ। এই রোগে হাড় দুর্বল হওয়া এবং এর গঠনগত মান কমে যাওয়ার কারণে তা ভাঙা কিংবা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি।”

“ফলে সামান্য দূর্ঘটনা থেকে হাঁড় ভেঙে যেতে পারে। রোগের মাত্রা যখন তীব্র, তখন সামান্য হাঁচি দেওয়ার কারণে রোগী বুকের হাড় ভেঙে যাওয়াও সম্ভব। আবার দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে গিয়েও হাড় ভেঙে যেতে পারে।”

রোগের লক্ষণ

ডা. আনাম বলেন, “বেশিরভাগ রোগী প্রথমবার হাড় ফেঁটে না যাওয়া পর্যন্ত কোনো লক্ষণই টের পায় না। আর এই রোগে সাধারণত মেরুদণ্ড, নিতম্ব ও হাতের কব্জির হাড়েই সবচাইতে বেশি ফাটল দেখা দেয়। তাই শরীরের এই অংশগুলোতে ‘বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট’ করার মাধ্যমে হাড়ক্ষয় রোগ হয়েছে কি-না তা জানা যাবে।”

“এই পরীক্ষায় সময় লাগে কম, ব্যথাহীন এবং নিরাপদ। পরীক্ষায় হাড়ের ঘনত্ব কম কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া অন্য কোনো কারণে হাড়ের ক্ষয় হচ্ছে কি-না তা জানার জন্য রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করা হয়।”

হওয়ার কারণ

বয়স, রজঃবন্ধ, বংশগত কারণ, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি’য়ের অভাব, ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি হাড়ক্ষয়ের প্রধান কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করেন ডা. আনাম।

তিনি আরও বলেন, “এগুলো বাদে যকৃতের রোগ, ‘রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস’, ‘ইনফ্লামাটরি বাওয়েল ডিজিজ’, দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ব্যবহার ইত্যাদিও হাড়ের ক্ষয়ে ভূমিকা রাখে। আবার ‘হাইপারথাইরয়েডিজম’, ‘অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা’, বৃক্কের সমস্যা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত রোগীদেরও ‘অস্টিওপোরোসিস’ হওয়া ঝুঁকি থাকে।”

“তবে সকল সম্ভাব্য কারণে মধ্যে সবচাইতে ভয়ানক বিষয়টি হলো ‘ইস্ট্রোজেন’ হরমোনের অভাব। যা নারীদের রজঃবন্ধ হওয়ার পর হওয়াটাই স্বাভাবিক। অর্থাৎ নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।”

“পরিসংখ্যান দাবি করে, ৫০ বা তার বেশি বয়সের প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজনের এই রোগের কারণে হাড় ফাটে।”

প্রতিরোধের উপায়

ডাক্তার আনাম বলেন, “হাড়ক্ষয় রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখাটাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও প্রোটিন সরবরাহ করতে হবে। সঙ্গে খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি।”

“দুধ ক্যালসিয়ামের আদর্শ উৎস। তবে আরও অনেক খাবার থেকে ক্যালসিয়াম যোগানো সম্ভব। শরীরচর্চার গুরুত্বকেও অবহেলা করা যাবে না। নিয়মিত ভারোত্তল ও শক্তিবর্ধক ব্যায়াম করা ভালো। বাদ দিতে হবে ধূমপান ও মদ্যপান।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন