করোনাভাইরাস: ‘ইমিউনিটি’র স্থায়িত্ব কয়েক মাস

আক্রান্ত হয়ে ভালো হওয়ার পর শরীরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকতে পারে পাঁচ থেকে সাত মাস।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2020, 06:36 AM
Updated : 16 Oct 2020, 06:36 AM

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা’র গবেষকরা প্রায় ছয় হাজার করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে তাদের শরীরে ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরির মাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক দিপ্তা ভট্টাচারিয়া বলেন, “করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ থেকে সাত মাস পর ওই আক্রান্তদের শরীরে উন্নতমানের ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরি যে হচ্ছে তা আমরা পরিষ্কার লক্ষ্য করেছি। তবে সেই ‘অ্যান্ডিবডি’র স্থায়িত্বকাল নিয়ে আছে যথেষ্ট সংশয়। সেই সংশয়গুলো নিয়ে নিশ্চিত হতে, তা নিয়ে অনুসন্ধানে যাই এবং আমরা জেনেছি সেই ‘অ্যান্টিবডি’ প্রায় পাঁচ মাস পর্যন্ত টিকে থাকে।”

এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা’র অধ্যাপক জ্যানকো নিকোলিচ-জুগিচ। ‘ইমিউনিটি’ শীর্ষক সাময়িকীতে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

দিপ্তা ভট্টাচারিয়া বলেন, “একটি ভাইরাস যখন প্রথম কোনো কোষকে সংক্রমিত করে, তখনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্ষণজন্মা ‘প্লাজমা’ কোষ নিঃসরণ করে। এই কোষগুলো ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরি করে তৎক্ষণাত ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য। এই ‘অ্যান্টিবডি’র উপস্থিতি প্রাথমিক সংক্রমণের পর ১৪ দিন পর্যন্ত রক্তে পাওয়া যায়।”

“রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পরবর্তী পদক্ষেপ হল দীর্ঘস্থায়ী ‘প্লাজমা’ কোষ তৈরি করা। এগুলো তৈরি করবে আরও শক্তিশালী ‘অ্যান্টিবডি’, যা পক্ষান্তরে দেবে দীর্ঘস্থায়ী ‘ইমিউনিটি’।” - বলেন গবেষকরা।

যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের ‘অ্যান্টিবডি’র উপস্থিতি পাওয়া গেছে তাদেরকে কয়েক মাস ধরে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখেন গবেষকরা। দেখা যায়, পাঁচ থেকে সাত মাস পর্যন্ত ওই ‘অ্যান্টিবডি’ সক্রিয় অবস্থায় থাকে এবং গবেষকদের ধারণা ‘ইমিউনিটি’ আরও লম্বা সময় টিকে থাকতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা’র ‘হেলথ সাইন্স’ বিভাগের ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট’ মাইকেল ডি ডেক বলেন, “করোনাভাইরাস ‘অ্যান্টিবডি’ দীর্ঘমেয়াদি ‘ইমিউনিটি দেয় কি-না সেই প্রশ্নটা অত্যন্ত জটিল। এই গবেষণার মাধ্যমে একাধারে আমরা আরও কার্যকরভাবে করোনাভাইরাসের ‘অ্যান্টিবডি’ পরীক্ষা করতে শিখেছি। অপরদিকে এটাও জানিয়েছে যে দীর্ঘস্থায়ী ‘ইমিউনিটি’ অবাস্তব নয়।”

ভট্টাচারিয়া বলেন, “এবিষয়ক আগের গবেষণাগুলো কাজ করেছে সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে সৃষ্টি হওয়া ক্ষণজন্মা ‘প্লাজমা’ কোষ নিয়ে যেখানে ‘অ্যান্টিবডি’র মাত্রা দ্রুত কমে যায়। তবে ক্ষণজন্মা ওই ‘প্লাজমা’ কোষগুলোর ওপর ভিত্তি করে হওয়া গবেষণাগুলোর ফলাফল পরবর্তী ধাপে তৈরি হওয়া শক্তিশালী ‘প্লাজমা’ কোষগুলোকে বিবেচনায় হয়ত আনেন-নি।”

তিনি আরও বলেন, “সার্স ভাইরাসে যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা ১৭ বছর পরেও কিছু মাত্রায় ‘ইমিউন’। আর ওই সার্স ভাইরাসের সঙ্গে বর্তমান করোনাভাইরাসের মিল সবচাইতে বেশি। তাই দুটি ভাইরাসকে একই রকম বিবেচনা করলে ‘ইমিউনিটি’ কমপক্ষে দুই বছর থাকা উচিত এবং তার কম হওয়া সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।”

আরও পড়ুন