লেমনগ্রাস খাওয়ার উপকারিতা

থাইপাতা হিসেবে পরিচিত লেমনগ্রাস আমাদের দেশে সাধারণত থাই সুপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

লাইফস্টাইলডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2020, 12:32 PM
Updated : 13 Sept 2020, 12:32 PM

‘ঘাস খাও’- কথাটা ব্যঙ্গাত্মক অর্থে বুদ্ধিহীনতার উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার হলেও লেমনগ্রাস বা থাই পাতা খাওয়া কিন্তু মোটেই বোকার পরিচয় নয়।

থাই সুপ তৈরিতে এই পাতা ব্যবহার করা হয়। তাই লেমনগ্রাস আমাদের কাছে থাই পাতা নামে পরিচিত। এর সুগন্ধ মনকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে।

শুধু তাই নয়, এর রয়েছে নানান উপকারী গুণ।

পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় পুষ্টিবিদ ও খাদ্য পরিকল্পক গরিমা গোয়ালের দেওয়া ভেষজ উপাদান হিসেবে লেমনগ্রাস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানানো হল।

হজমে সহায়তা করে: চাইনিজ ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত লেমনগ্রাস পাকস্থলির নানা রকম সমস্যা যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব বা বদহজম থেকে রক্ষা করে। এতে রয়েছে পেট ঠাণ্ডা রাখার মতো উপাদান যা হজম ক্রিয়া উন্নত রাখে।

লেমনগ্রাসের প্রাথমিক উপাদান হল ‘সিট্রাল’ যা হজমে সাহায্য করে। তাই খাবারের পরে লেমনগ্রাস সমৃদ্ধ পানীয় পান উপকারী। এছাড়াও, গবেষণা থেকে জানা যায় যে, এটা পেশিকে আরাম দিতে সাহায্য করে এমনকি ‘পিএমএস’য়ের নানান লক্ষণ যেমন-মাথাব্যথা, পেশি ও অস্থির সংযোগস্থলের ব্যথা ইত্যাদি উপশমে সহায়তা করে। তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক উপাদান থাকায় তা নিয়মিত খাওয়া সার্বিকভাবেই শরীরের জন্য উপকারী।

অ্যানিমিয়া দূর করে: রক্তে লোহিত কণিকা বা হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কারণে দেখা দেয় অ্যানিমিয়া।

গরিমা বলেন, “সুস্থ লোহিত রক্ত কণিকার অভাবে রক্তে অক্সিজেনের সরবারহ কমে যায়। ফলে শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে লোহিত রক্ত কণিকা বাড়াতে লেমন গ্রাস ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।”

এতে ফলিক অ্যাসিড, তামা, থায়ামিন, লৌহ, দস্তা ইত্যাদি উপস্থিত থাকায় তা লোহত কণিকা বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফার্মালজিকেল উপাদান।

মেডিকেল নিউজের করা এক গবেষণায় জানা গেছে যে, ৩০ দিন ধরে প্রতিদিন লেমনগ্রাস চা পান করা হলে তা হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব, কোষের ঘনত্বের পরিমাণ এবং দেহের লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়াতে সহায়তা করে।

ওজন কমায়: ‘লেমন গ্রাস টি’ সারা পৃথিবীতে ‘ডেটক্স টি’ হিসেবে পরিচিত। এটা বিপাক বাড়িয়ে ওজন কমাতে সহায়তা করে। লেমন গ্রাস প্রাকৃতিকভাবেই মূত্রবর্ধক হওয়ায় তা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করে। এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।

তবে ওজন কমাতে নিয়মিত এটা না খাওয়ার পরামর্শ গরিমা। কেননা প্রতিনিয়ত লেমন গ্রাস খাওয়া ওজন কমানোর পাশাপাশি নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে। 

রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে: গরিমা জানান, “রক্ত চাপ কমানোর প্রাকৃতিক ও কার্যকর উপায় হল লেমন গ্রাস।”

পুষ্টিবিদরা একে ‘সুপার ফুড’ বলে ব্যাখ্যা করেন। কারণ এতে আছে পটাসিয়াম যা, রক্ত সঞ্চালনকে উদ্দীপিত করে ও রক্তচাপ হ্রাস করে।

তিনি আরেও বলেন, “এটা যকৃত সুস্থ রাখে এবং অন্ত্র থেকে নিঃসৃত কোলেস্টেরল শোষণ করে শরীর সার্বিকভাবে সুস্থ রাখে।”

উজ্জ্বল ত্বক ও চুলের জন্য: ‘লেমন গ্রাস’ ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাসরোধী উপাদান সমৃদ্ধ এবং এটা ত্বক পরিষ্কার করতেও খুব ভালো কাজ করে। তাই টোনার শেষ হয়ে গেলে এর পরিবর্তে লেমন গ্রাসও ব্যবহার করতে পারেন।

গরিমা জানান, লুয়ামন গ্রাস ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’য়ের ভালো উৎস। যা ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতে সহায়তা করে। এটা মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের ফলিকলকে শক্তিশালী করে, মাথার ত্বকের অস্বস্তি দূর করে। আর চুলকানির সমস্যা দূর করে।

এটা ত্বকের বাড়তি তেল শুষে নিয়ে ত্বককে পরিষ্কার করে। ব্রণ, একনি ও একজিমার মতো ত্বকের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করে।

Image by WONJAE LEE from Pixabay
 

আরও পড়ুন