আর্থিক টানাপোড়েন, এখন থেকেই প্রস্তুতি

সঞ্চয় বাড়ানোর পাশাপাশি কমাতে হবে বাড়তি খরচের খাত।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2020, 08:00 AM
Updated : 15 April 2020, 08:00 AM

চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ‘লকডাউন’ পরিস্থিতি কবে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফলে ক্রমেই প্রতিটি মানুষের উপার্যনের পথগুলোতে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। আর পরিস্থিতি দ্রুত সামালে না উঠলে তা সামনে তা আরও ভয়াবহ হবে।

তাই ভবিষ্যত আর্থিক সমস্যার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। আর্থিক ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হলো কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন সে সম্পর্কে।

বিপদ মোকাবেলার সঞ্চয় বাড়ানো: পুরো পৃথিবীর অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দুর্বল করে দিয়েছে এক করোনাভাইরাস। যার দীর্ঘমেয়াদি পরিণতিতে ভুগতে হতে পারে আমাদের সবাইকেই। এই সঙ্কটপূর্ণ অবস্থায়, প্রতিটি মানুষের উচিত হবে খরচের সর্বোচ্চ লাগাম টানা। লক্ষ্য হতে হবে সঞ্চয়কে এমন অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাতে আগামী ছয় মাসের আবশ্যক খরচগুলো সামলানো সম্ভব হয়। সামর্থবানদের উচিত হবে আরও বেশি সময়ের জন্য প্রস্তুতি রাখা।

পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য যত সঞ্চয় করা সম্ভব করতে হবে। কারণ আপনার সর্বোচ্চ সঞ্চয়ও অপর্যাপ্ত হতে পারে।

দৈনিক খরচের হিসাব: ‘লকডাউন’য়ের কারণে সারাদিন ঘরে থাকায় অনেকটা খরচ কমছে ইতোমধ্যেই। তবে বিরক্তি কাটানোর জন্য হয়ত অনেক অপ্রয়োজনীয় খরচও করে ফেলছেন। তাই সবার আগে জরুরি কাজ হল নিজের উপার্জন অনুযায়ী বাজেট তৈরি করা। ঠিক যতটুকু না হলেই নয়, ততটুকুই খরচ করবেন এমন মানসিকতা নিয়েই বাজেট তৈরি করতে হবে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বাজেট থেকে বাইরে গিয়ে খরচ করার বিলাসিতা হয়ত ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা একেবারেই নেই। চাহিদার তুলনায় প্রয়োজনীয়তাকে বড় করে দেখতে হবে।

অপ্রয়োজনীয় খরচ: অনেক প্রয়োজনীয় খরচও বর্তমান পরিস্থিতিতে অপ্রয়োজনীয় হিসেবে গণ্য করতে হবে। সেটা হতে পারে বাজারের ক্ষেত্রেও। প্রতিবেলা তিন-চার পদের খাবার না খেয়ে দুই পদ দিয়েও ক্ষুধা মেটানো সম্ভব। সন্তানের বায়না মেটানোর খরচে লাগাম টানতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় হাতে বাড়তি অর্থ হয়ত নিজের পুরানো কোনো শখ মেটানোর ইচ্ছাকে প্রবল করে তুলতে পারে, তবে সেটাও দমাতে হবে।

লেনদেনের মাধ্যম: ‘লকডাউন’য়ের কারণে ব্যাংকসহ অন্যান্য অর্থ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যক্রম সীমিত হয়েছে। আবার বাইরে বের হওয়া যেহেতু ঝুঁকিপূর্ণ তাই ইচ্ছেমতো ‘এটিএম’ বুথে গিয়ে টাকা তোলাও উচিত হবে না।

নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য হাতে নগদ অর্থ থাকা জরুরি। একইভাবে যেসব ক্ষেত্রে ‘ডিজিটাল ব্যাংকিং’ সুবিধা কাজে লাগানো সম্ভব যেমন- ঋণের কিস্তি, ‘ক্রেডিট কার্ড’য়ের ‘ইএমআই’ পরিশোধ, সুপারশপে বাজার ইত্যাদির ক্ষেত্রে নগদ লেনদেন এড়ানো আবশ্যক।

চিকিৎসা খরচ: অসুস্থতার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী চিকিৎসা খরচের তহবিল আপনার থাকতেই হবে। আর তা নগদ হওয়াই ভালো। শুধু অর্থ নয় পাশাপাশি যাতায়াত ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ এসব ব্যাপারেই ভেবে রাখতে হবে। আর করোনাভাইরাসে ক্ষেত্রে যাতায়াত এবং রোগীর পরিচর্যার জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথাও খেয়াল রাখতে হবে। অন্যের ওপর ভরসা করে বসে না থেকে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে।

আরও পড়ুন