খরচ নিয়ন্ত্রণের পন্থা

দৈনন্দিন খুঁটিনাটি খরচগুলো ‘পকেট ফাঁক’ করে দেয়। তবে সেদিকে নজর এড়িয়ে যায় অনেকেরই। মাস শেষে তাই খুঁজে পাওয়া যায় না বাড়তি খরচের হিসাব।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2017, 11:34 AM
Updated : 22 June 2017, 11:34 AM

জীবনযাপন-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে এই বিষয়ে পরামর্শ দিতে গিয়ে জানায়, বিলাসবহুল রেস্তোরাঁয় বসে কফি খাওয়ার আগে ভেবে দেখুন, সাধারণ দোকানের ৫০ থেকে একশ টাকার কফির স্বাদ প্রায় ওই রেস্তোরাঁর কফির মতোই, তবে গুনতে হবে প্রায় তিনশ টাকা।

এরকম খরচগুলো নিয়ন্ত্রণ করা গেলে পকেট হবে না ‘গড়ের মাঠ’।

ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনা: এই সময় বেশিরভাগ মানুষেরই ঘরে ওয়াই-ফাই আছে। আর অফিস, ইউনিভার্সিটি, রেস্তোরাঁ সবখানেই ওয়াই-ফাই থাকে। তাই বাড়তি পয়সা খরচ করে মোবাইলে ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনাটা অপ্রয়োজনীয় খরচ।

অনেকেই বেশিদিন মেয়াদ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনের চাইতে বড় প্যাকেজ কেনেন। যার অর্ধেকটাও ব্যবহার করা হয় না। টকটাইম কেনার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যেকোনো টক-টাইম বা ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনার আগে যাচাই করতে হবে সেটা আপনার জন্য কতটুকু প্রয়োজনীয়।

যাতায়াত খরচ: রিক্সা বা বাস- আমাদের নিত্যসঙ্গী। এতে খরচও তুলনামূলক কম। তবে ট্যাক্সি, সিএনজি, উবার ইত্যাদি ভাড়া করার আগে সঙ্গে আরেকজন জুটানোর চেষ্টা করা উচিত। অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে একা একটি সিএনজি’তে না নিয়ে একই পথে যাবেন এমন কয়েকজন সহকর্মীকে সঙ্গে নিন। এতে ভাড়া যেমন ভাগাভাগি করে দেওয়া যাবে তেমনি সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার মানুষও পাবেন।

ক্রেডিট কার্ডে নূন্যতম বিল পরিশোধ: ক্রেডিট কার্ডের নূন্যতম বিল পরিশোধ করার মানে হল বর্তমান ঋনের উপর যতটুকু সুদ ধার্য করা হয়েছে তা পরিশোধ করা, মূল ঋণ কিন্তু থেকেই গেল। তাই পরের মাসে আপনাকে দুই মাসের ঋণের সুদ দিতে হবে। ফলে এক মাসের ঋণের উপর দুবার সুদ দিতে হচ্ছে।

এজন্য বিল একবারে পরিশোধ করার চেষ্টা করুন। সেটা সম্ভব না হলে নূন্যতম বিলের বেশি পরিশোধ করতে হবে যাতে পরের মাসে সুদের পরিমাণ কমে।

অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা: মার্কেটে গেলে অনেক কিছুই পছন্দ হয়। কিনতে ইচ্ছা করে। তবে হুট করে কিছু কিনে ফেলার আগে ভাবতে হবে পণ্যটি আপনার কতটুকু দরকার কিংবা আদৌ দরকার কিনা।

কেনাকাটার খরচ বাঁচানোর জন্য মূল্য ছাড়ের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করুন। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে মূল্যছাড় পেলে বেশি করে কিনে রাখতে পারেন। বিশেষ কিংবা দামি কিছু কেনার আগে আর্থিক প্রস্তুতি নিতে হবে।   

সিগারেট: সিংহভাগ ধূমপায়ীর প্রতিটি সিগারেটে গুনতে হয় আট থেকে ১১ টাকা। এবার হিসাব করুন প্রতিদিন নিজে কয়টা সিগারেট পান করেন এবং বন্ধু-বান্ধবকে কয়টা খাওয়ান। সঙ্গে আছে চায়ের খরচ, মুখের গন্ধ ঢাকতে চকলেট কিংবা চুইংগাম। ধূমপান ছেড়ে দিলে মাসে কত টাকা বাঁচবে তার হিসাব দেখে চমকে যাবেন।

ব্যায়ামগারে সদস্যপদ: মাঝারি মানের একটি ব্যায়ামাগারে শুধু ভর্তি হতেই গুনতে হয় আট থেকে ১০ হাজার টাকা। আর প্রতিমাসে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। যদি ব্যায়ামাগার সঠিকভাবে ব্যবহার করেন তবে খরচটা সার্থক।

তবে বেশিরভাগ সময় কিছুদিন যাওয়ার পর ব্যায়ামাগারে আর যাওয়া হয় না- সেটা হতে পারে সময়ের অভাব কিংবা অলসতা। তাই এধরনের কাজ করার আগে ভাবুন, আসলেই ব্যায়ামাগারে যাওয়া ধরে রাখতে পারবেন কিনা।

এছাড়া ব্যাংকের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন চার্জ, শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ, মিউচুয়াল ফান্ড কেনা- এসবে অর্থ খাটানোর আগে সংশ্লিষ্ট শর্তগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন। এগুলোতে অনেক সময় অদেখানো খরচ থাকে, যাকে বলে ‘হিডেন কস্ট’, সেগুলো জিজ্ঞেস করে ভালোমতো জেনে বুঝে নিজের অর্থ পকেট থেকে বের করুন।