ডায়াবেটিসের ঝুঁকি নির্ণয়ে হাতের জোর

হাতের মুষ্ঠির জোর থেকে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি শনাক্ত করা যেতে পারে, যা হতে পারে সময়োপযোগী একটি পদ্ধতি।

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2020, 06:36 AM
Updated : 7 April 2020, 06:36 AM

হাতের মুষ্ঠির স্বাভাবিক জোর পরিমাপ করে তার বিপরীতে তুলনামূলক পরীক্ষা চালিয়ে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান মানুষের ‘টাইপ টু ডায়াবেটিস’য়ের ঝুঁকির মাত্রা পরিমাপ করা যেতে পারে।

‘আমেরিকান জার্নাল অফ প্রিভেন্টিভ মেডিসিন’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই তথ্য জানানো হয়। কারণ ‘টাইপ টু ডায়াবেটিস’য়ের সঙ্গে পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার যে সম্পর্ক আছে।

নুতন এই গবেষণায় মানুষের শরীরের ওজন, লিঙ্গ ও বয়স অনুযায়ী তাদের হাতের মুষ্ঠির স্বাভাবিক জোর শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে সবার মাঝেই আগেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ধরা পড়েছিল।

গবেষণার প্রধান গবেষক, ম্যারিল্যান্ড, রোচেস্টারে অবস্থিত ওকল্যান্ড ইউনিভার্সিটির ‘ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক অ্যান্ড এনভাইরনমেন্টাল ওয়েলনেস’ বিভাগের এলিস সি ব্রাউন বলেন, “ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায় শনাক্ত করা দিন দিন আরও বেশি জরুরি হয়ে উঠছে। এমনটা করতে পারলেই ডায়াবেটিসের কারণে রক্তনালীর যে ক্ষতি হয় তা এড়ানো সম্ভব। আর এখন চিকিৎসকদের হাতে রোগটিকে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করার একটি ভরসাযোগ্য পরীক্ষা রয়েছে।”

স্বাস্থ্যবান নারী-পুরুষের মাঝে ডায়াবেটিসের কারণে হাতের মুষ্ঠির জোর কতটুকু কমবেশি হয় তা নির্ণয় করেছে গবেষণাটি। সেখানে বিবেচনায় রাখা হয় তাদের শারীরিক ওজন এবং বয়স।

প্রাথমিক পর্যায়ে ডায়াবেটিস উল্লেখযোগ্য কোনো উপসর্গ দেখায় না। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে তা শনাক্ত করা সম্ভব হলে রক্তনালীর বিভিন্ন সমস্যা যেমন ‘নিউরোপ্যাথি’, ‘রেটিনোপ্যাথি’, ‘নেফ্রোপ্যাথি’ ইত্যাদি রোগ এড়ানো কিংবা তাদের আক্রমণ বিলম্বিত করা সম্ভব।

হাতের মুষ্ঠির জোর ঠিক কোন পর্যায়ে গেলে তাকে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বিবেচনা করা হবে তা নির্ণয় করতে শরীরের ওজনের অনুপাতে আদর্শ হাতের মুষ্ঠির জোর পর্যবেক্ষণ করা হয়।

৫০ থেকে ৮০ বছর বয়সি নারীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রা হল ০.৪৯ নিচে।

এর মানে হল একজন ৬০ বছর বয়সি নারীর ডান ও বাম হাতের সমন্বিত হাতের মুষ্ঠির জোর যদি ৪৩ কেজি হয় এবং তার ওজন যদি হয় ৯০ কেজি, তবে তার আদর্শ হাতের মুষ্ঠির জোর হবে ০.৪৭৮।

যেহেতু এই মান ০.৪৯ এর নিচে, তাই ওই নারীর মাত্রা ইঙ্গিত করে যে তিনি ডায়বেটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন।

ডা. ব্রাউন বলেন, “এই পদ্ধতির খরচ কম, প্রশিক্ষণ দেওয়া জটিল নয় এবং পরীক্ষাটি করতে সময়ও প্রয়োজন হয় কম। তাই আমাদের গবেষণালব্ধ পদ্ধতিটি ডায়াবেটিস নির্ণয়ের ‘রুটিন চেক-আপ’য়ের অংশ হতে পারে। এতে রোগ নির্ণয় এবং তার প্রতিরোধ দুটোই সহজ হবে।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন