মূত্রত্যাগের বেগ চেপে রাখার পরিণতি

প্রস্রাবের বেগ চেপে রাখার অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব বেশ ভয়ানক।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Feb 2020, 10:02 AM
Updated : 29 Feb 2020, 10:02 AM

কাজের ব্যস্ততায় কিংবা শৌচাগারের অভাবে প্রায়শই প্রস্রাবের বেগ চেপে রাখতে হয়। অনেকে আবার আলসেমির কারণে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। যা ক্ষতিকর।

চিকিৎসা-বিজ্ঞানের সাধারণ তথ্যানুসারে মানুষের মূত্রথলি ৪শ’ থেকে ৫শ’ মি.লি.লিটার মূত্র ধারণ করতে পারে, যা প্রায় দুই কাপ পরিমাণ। এই মূত্রথলির আছে প্রসারিত হওয়ার ক্ষমতা, তাই বেগ চেপে রাখা বড় কোনো সমস্যা তৎক্ষণাৎ ডেকে আনে না। তবে বেগ চেপে রাখা নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হলে মূত্রথলির পেশি দূর্বল হতে থাকে, যার পরিণতি বেশ ভয়াবহ হতে পারে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল এই বিষয়ে বিস্তারিত।

মূত্রথলির পেশি দুর্বল হওয়াকে হালকাভাবে নেওয়া মারাত্বক ভুল হতে পারে। কারণ, এই দুর্বল পেশির কারণে মূত্রত্যাগের স্বাভাবিক প্রবাহে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি নিজের অজান্তেই মূত্রত্যাগ হয়ে যেতে পারে।

পূতিগন্ধময় প্রস্রাব

নিয়মিত প্রস্রাবের বেগ চেপে রাখার ভয়ানক পরিণতির মধ্যে অন্যতম হল মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই)’। এর কারণ হল, প্রস্রাব চেপে রাখলে মূত্রনালীতে ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। যাদের বংশে এই রোগ আছে তাদের আশঙ্কা আরও বেশি এবং চিকিৎসার পরও অভ্যাস পরিবর্তন না করলে রোগ ফিরে আসতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলেও মূত্রনালীর সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই)’য়ের পূর্বাভাসের মধ্যে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন, রক্ত আসা, তলপেটে ব্যথা, প্রস্রাবে বাজে গন্ধ হওয়া ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

মূত্রথলি প্রসারিত হয়ে থাকা

মূত্রথলির প্রসারণ ক্ষমতা আছে সেকথা আগেই বলা হয়েছে, তবে তা জরুরি মুহূর্তের জন্য। তবে নিয়মিত প্রস্রাবের বেগ চেপে রাখার কারণে মূত্রথলির প্রসারণ ক্ষমতাও নষ্ট হতে পারে। ফলে মূত্রথলি প্রসারিত হয়ে আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায় না। এমতাবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তি প্রস্রাবে অস্বস্তি হতে পারে কিংবা সবসময়েই বেগ অনুভূত হতে পারে।

পুরোপুরি খালি না হওয়া

প্রস্রাব চেপে রাখার অভ্যাসের কারণে মূত্রথলি পুরোপুরি খালি না হওয়া সমস্যাও দেখা দিতে পারে। মূত্রত্যাগের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করার কারণেই এই সমস্যা দেখা দেয়, চিকিৎসা-বিজ্ঞানে যাকে বলা হয় ‘ইউরিনারি রিটেনশন’।

স্বাভাবিক মূত্রত্যাগের হিসাব

একজন মানুষ দিনে কতবার মূত্রত্যাগ করবেন তা মানুষভেদে ভিন্ন হয়। একজন সুস্থ মানুষ দিনে চার থেকে ১০বার মূত্রত্যাগ করতে পারেন। তবে গড় হিসেব বলে দিনে ছয় থেকে আটবার। বিশেষ প্রয়োজন না হলে এই স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়ার বাধা সৃষ্টি না করাই ভালো।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন-