চল্লিশের পর ব্যায়ামে যেসব ভুল করা যাবে না

বেশি বয়সে যাতে ব্যায়াম করতে গিয়ে হাড় ও পেশিতে চাপ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2019, 10:52 AM
Updated : 17 Dec 2019, 10:52 AM

শরীরচর্চা করা শরীরের জন্য উপকারী। তবে সব বয়সে সব ধরনের ব্যায়াম করা যায় না। তাই বেশি বয়সে ব্যায়াম করা শুরু করলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ব্যায়াম প্রশিক্ষকের পরামর্শে কাজ শুরু করতে হবে।

আর চল্লিশের পর ব্যায়ামের সময় ভুল করা যাবে না কোনো মতেই। নাহলে ভুগতে হবে অনেকদিন।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে চল্লিশের পর ব্যায়ামের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোর প্রতি যত্নবান হতে হবে সেই বিষয়ে জানানো হল।  

দুর্বল স্বাস্থ্যে ভারোত্তলন: যে কোনো বয়সেরই জন্যই এই ব্যায়ামের ভুল মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। দুর্বল অবস্থায় ওজন তোলা এবং এই ধরনের ব্যায়াম থেকে বড় ধরনের জখম হতে পারে। বিশেষ করে যখন বয়স বাড়ে তখন হাড়ের সংযোগ স্থল ও পেশি ক্ষয় শুরু হয় আর ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই যেকোনো ভারী ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে।

কোমরে রক্ষাকবচ ব্যবহার না করা: বয়স বাড়ার সঙ্গে মেরুদণ্ডের সচলতা কমতে থাকে। তাই কম বয়সে যে ব্যায়াম করা সহজ হয় বেশি বয়সে সেটাই হয় কঠিন। যেমন ক্রাঞ্চ বা হাঁটু মুড়ে পেটের ব্যায়াম- এটা যতটা পেটের জন্য কার্যকর ততটাই বেশি চাপ পড়ে ঘাড় ও পিঠে। যা থেকে হতে পারে গুরুতর সমস্যা। তাই মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে এরকম ব্যায়াম এড়িয়ে সাধারণ পেটের ব্যায়াম করা নিরাপদ; যেমন- ‘প্ল্যাঙ্কস’।   

স্নিকার্স পরিবর্তন না করা: প্রতিদিন যদি ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকে তাহলে মনে করে দেখুন তো ব্যবহৃত স্নিকার্স কত দিনের পুরানো?

যদি ছয় মাসের পুরানো হয় তবে পরিবর্তন করার সময় হয়ে গিয়েছে। কারণ বেশিরভাগ স্নিকার্স ৪৫ থেকে ৬০ ঘণ্টা ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি হয়। তারপর থেকে এর কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে। অর্থাৎ ঝাঁকি কমিয়ে আনার ক্ষমতা কমতে থাকে ফলে অস্থির সংযোগ স্থল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। বয়স বাড়ার সঙ্গে যেহেতু হাড়ের সংযোগ স্থল দুর্বল হতে থাকে ফলে হঠাৎ আঘাত পেলে সারতেও সময় লাগে। তাই ছয় মাস পার হলেই ভালো মানের স্নিকার্স কিনে আনুন।   

শরীর গরম করা এড়ানো: ‘ওয়ার্ম আপ’ বা ব্যায়ামের আগে স্ট্রেচিং করে শরীর গরম করা যতই বিরক্তির হোক, এই কাজ বাদ দেওয়া যাবে না। কারণ শরীর, পেশি শিতল থাকা অবস্থায় ব্যায়াম শুরু করা মোটেই ভালো বিষয় নয়। এর ফলে পেশির ভেতরে যখম হতে পারে, হাড়ে হতে পারে ব্যথা, যা বহুদিন ভোগাতে পারে। তাই ব্যায়াম না করলেও হালকা ‘ওয়ার্ম আপ’ ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তোলা হয়ত পা মচকিয়ে বসে থাকার চাইতে ভালো ফল বয়ে আনবে।

বিক্রম ইয়োগ: সাধারণ ইয়োগা শরীর ফিটফাট রাখতে সাহায্য করে। তবে ‘বিক্রম ইয়োগ’ করাই হয় চরম গরম পরিবেশে। অতিরিক্ত গরম শরীর পানিশূন্য করে ফেলতে পারে। যা চল্লিশের পর একটা সাধারণ সমস্যা হিসেবে দেখা দেয় অনেকের মধ্যে।

অনেক দূর দৌড়ানো: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ের পরিমাণ কমাতে বলা হয়। কারণ বেশি বয়সে অনেক দূর পর্যন্ত দৌড়ানো যত উপকারী বেশি বয়সে নয়। যেটার অন্যতম একটা কারণ হল ‘ওস্টিওআর্থ্রাইটিস’ বা বাত। যদিও দৌড়ানোর কারণে এই রোগ হয় না, তবে বেশি বা অতিরিক্ত দৌড়ানোর ফলে হাঁটু, গোড়ালি, পশ্চাতের হাড়ের জোড়ে চাপ পড়ে, যা ব্যথার পরিমাণ বাড়াতেই পারে। তাই পুরো শরীরের ‘কার্ডিওভাস্কুলার’ শরীরচর্চার জন্য চল্লিশের পর সাঁতার হতে পারে ভালো ব্যায়াম।

বিরতিসহ তীব্র ব্যায়াম: সবার জন্য সব ব্যায়াম নয়। কসরৎ করার ক্ষমতা বয়সে সঙ্গে কমতে থাকে। সেই থাকে কমে হাড়ের জোড় ও পেশির স্থিতিস্থাপকতা। দ্রুত ব্যায়াম করা যেটার মধ্যে লাফানোর পরিমাণ বেশি সেগুলো সহজেই শরীরে আঘাত তৈরি করতে পারে। বরং ধীরে ব্যায়াম করলে হাড়ের সংযোগ স্থলে চাপ পড়বে কম। আর চল্লিশের পর সেভাবেই ব্যায়াম করা উচিত।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন