মায়ের কাছ থেকে পাওয়া স্বাস্থ্য ঝুঁকি

স্বাস্থ্যের ওপর জীনতত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2019, 09:29 AM
Updated : 4 Dec 2019, 09:29 AM

‘ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন’য়ের ‘ইন্সটিটিউট অফ ক্যান্সার রিসার্চ’য়ের তথ্যানুসারে, মায়ের ঋতুস্রাব যে সময় থেকে শুরু হয়েছিল তার কন্যা সন্তানের ঋতুস্রাব সেই সময়ের তিন মাসের মধ্যেই শুরু হওয়ার সম্ভাবনা ৫৭ শতাংশ। মায়ের কাছ থেকে পাওয়া এমন আরও কিছু বিষয় তার সন্তানের মাঝে আসে, আর তা ভালো খারাপ দুটোই।

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যের আলোকে জানানো হলো কয়েকটি স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে যা মায়ের কাছ উত্তরাধিকার সুত্রে লাভ করে তার সন্তানরা।

হৃদরোগ: মায়ের যদি হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে তবে সন্তানের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ২০ শতাংশ।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, মায়ের স্ট্রোক হলে সন্তানেরও স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এর কারণ হলো জিনগত বা বংশগতভাবে পাওয়া রক্তনালীজনিত অসুস্থতা হৃদযন্ত্রের ‘করোনারি আর্টারি’ এবং মস্তিষ্কের ‘সেরেব্রাল আর্টারি’ দুটোকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।

স্তন ক্যান্সার: যেসকল নারী ‘মিউটেটেড’ বা রূপান্তরীত জিন ‘বিআরসিএ ওয়ান’ এবং ‘বিআরসিএ টু’ বহন করেন তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। আর তাদের অল্প বয়সেই স্তন ক্যান্সার দেখা দেয়। তাই বয়স ৪০ পেরোলে প্রতিটি নারীর উচিত ‘ম্যামোগ্রাম করানো। বংশে কারও স্তন ক্যান্সার থাকলে সেই নারীর উচিত বংশগত স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি পরীক্ষা করানো। অনেক নারী, যাদের স্তন ক্যান্সারের বংশগত ঝুঁকি আছে, তারা ‘প্রোফাইল্যাকটিক ম্যাসটেকটমি’ করান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর উদ্দেশ্যে। 

আলৎঝাইমার’স: এই রোগের জিন মায়ের মাধ্যমে সন্তানদের মধ্যে চলে আসতে পারে। তাই মায়ের এই রোগ থাকলে সন্তানের রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ। ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা পরিচালনার মাধ্যমে ‘ডিমেনশিয়া’ বা স্মৃতিভ্রংশ এবং পক্ষান্তরে ‘আলৎঝাইমার’স রোগের ঝঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব ২০ শতাংশ পর্যন্ত।

হতাশাগ্রস্ততা: মানসিক রোগগুলো বংশগত হয়ে থাকে। একইভাবে বংশে হতাশাগ্রস্ততার ইতিহাস থাকলে তা বংশের অন্যান্য সদস্যদের আক্রমণ করার আশঙ্কা ১০ শতাংশ বেশি। ঝুঁকি এড়াতে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে, মদ্যপান বর্জন কিংবা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং মানসিক চাপ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।

মাইগ্রেইন: মায়ের মাইগ্রেইনের সমস্যা থাকলে সন্তানের একই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। ক্ষতিগ্রস্ত যে জিনগুলো মাথাব্যথা সৃষ্টি করে সেগুলো সন্তানের মাঝেও চলে যায়। মাইগ্রেইনের ব্যথাকে সক্রিয় করে চকলেট, পনির, কফি, লেবুজাতীয় ফল ইত্যাদি স্পর্শকাতর খাবার। পাশাপাশি ঋতুস্রাবের সময় নারীদের উচিত তাদের হরমোনের দিকে বিশেষ নজর রাখা। কারণ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণেও মাইগ্রেইনের ব্যথা জেগে উঠতে পারে।

অকাল রজঃবন্ধ: মায়ের রজঃবন্ধ স্বাভাবিক সময়ের আগে হলে তার কন্যা সন্তানেরও একই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ৭০ থেকে ৮৫ শতাংশ। রজঃবন্ধের গড় বয়স ৫১ বছর। তবে প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজন নারীর বয়স ৪৬ পেরোনোর আগেই রজঃবন্ধ হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়া থামানোর কোনো উপায় নেই, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

আরও পড়ুন