একটি গবেষণার বরাত দিয়ে ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানায়, নারীর মা হওয়ার ক্ষমতা বয়সের সঙ্গে হ্রাস পেতে থাকে। কারণ, জীনগত ক্ষয় নারীর ডিম্বানুকেও প্রভাবিত করে।
এই জেনেটিক বা বংশানুক্রমিক ক্ষতি মায়ের কাছ থেকে নারী সন্তানের মধ্যে প্রবাহিত হয়, ফলে নারী সন্তানের ডিম্বানুর গুনগত মান নষ্ট হয়।
তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এরসঙ্গে নারী সন্তানের বাবার বয়সের কোনো উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক নেই।
আটলান্টার রিপ্রোডাক্টিভ বায়োলজি অ্যাসোসিয়েটস’য়ের পিটার নাগি বলেন, “একজন মায়ের সন্তান নেওয়ার বয়স শুধু তার জন্যই নয়, তার কন্যা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তার কন্যা সন্তানের গর্ভধারণের ক্ষমতাও নির্ভর করে মায়ের গর্ভধারণের সঠিক সময়ের উপর।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চিকিৎসা করছি চল্লিশোর্ধ নারীদের, সাহায্য করছি তাদের সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখতে। সেই সঙ্গে এটাও বুঝতে পারছি যে এই শিশুগুলোর বন্ধ্যাত্বের রোগী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।”
রজোঃবন্ধের বয়স নারী ভেদে ভিন্ন, তবে তা পঞ্চাশের কাছাকাছি। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সময় নারীর বয়স রজোঃবন্ধের যত কাছাকাছি থাকবে, তার সন্তানের বন্ধা হওয়ার আশংঙ্কা ততোই বাড়বে।
নিউ অর্লিন্সে অনুষ্ঠিত আমেরিকান সোসাইটি অফ রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিন’য়ে এই গবেষণা উপস্থাপন করার সময় গবেষকরা বলেন, “এই প্রভাবের ফলাফল সম্পর্কে ভবিষ্যত বাণী করার সময় এখনও আসেনি।”
তবে এই যুগে দম্পতিরা সংসার শুরু করছেন ত্রিশের মাঝামাঝিতে কিংবা আরও বেশি বয়সে। ফলে দেরিতে সংসার শুরু করা এই দম্পতিদের নারী সন্তানের গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা কমছে।
গবেষণায় একদল নারীর উপর পর্যালোচনা করা হয় যাদের পিতা-মাতা কিছুটা তরুণ, বাবার বয়স ছিল গড়ে প্রায় ২৮ ও মায়ের বয়স ছিল গড়ে প্রায় ২৬ এবং এই দলের নারীরা গর্ভধারণ করেন।
অপরদিকে আরেকদল নারীর বাবাদের বয়স ছিল গড়ে প্রায় ৩২ আর মায়েদের গড়ে প্রায় ২৮। আর এই দলের নারীরা গর্ভধারণে ব্যর্থ হন।
এছাড়াও যারা গর্ভধারণে অক্ষম হয়েছেন তাদের যখন জন্ম হয়েছে, তখন তাদের মায়ের বয়স রজোঃবন্ধের দিকে অন্যান্য নারীদের তুলনায় গড়ে পাঁচ বছর বেশি এগিয়ে গিয়েছেন।
গর্ভধারণে অক্ষম নারীরা যখন জন্ম নিয়েছে তখন তাদের মায়েরা তাদের রজোঃবন্ধ থেকে গড়ে প্রায় ১৯.৬ বছর দূরে ছিল।
সেই তুলনায় সেসব নারীর জন্মের সময় তাদের মায়েদের রজোঃবন্ধ থেকে ২৪.৭ বছর দূরে ছিলেন তারা গর্ভধারণে সক্ষম হয়েছেন।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন