মাঝে মাঝে অভুক্ত থাকার উপকারিতা

কয়েকদিন পর পর উপবাস করলে হৃদরোগীদের আয়ু বাড়তে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2019, 07:38 AM
Updated : 19 Nov 2019, 07:38 AM

এরকম ফলাফল পাওয়া গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটিতে অবস্থিত হেলথকেয়ার হার্ট সেন্টারের গবেষণায়।

গবেষকরা দেখেন, যেসকল হৃদরোগী কালেভদ্রে না খেয়ে থাকার অভ্যাস করেছেন তারা অন্যান্য হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তুলনায় দীর্ঘদিন জীবিত ছিলেন। পাশাপাশি তাদের হৃদযন্ত্র অকেজো হয়ে যাওয়া আশঙ্কাও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।

প্রধান গবেষক বেনজামিন হর্ন বলেন, “নিয়মিত কয়েকদিন পর পর না খেয়ে থাকা সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য যে উপকারী। তার আরেকটি উদাহরণ আমাদের এই গবেষণা। যদিও গবেষণার দাবি এই নয় যে, না খেয়ে থাকাই একজন মানুষকে দীর্ঘায়ু দেবে। তবে বড় একদল জনগোষ্ঠীর ওপর করা গবেষণার বাস্তবতাভিত্তিক ফলাফলের ইঙ্গিতটা এমনই। আর একারণেই উপবাস করায় মানুষের অভ্যস্ত হওয়া উচিত।”

২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে ‘কার্ডিয়াক ক্যাথেটেরাইজেইশন’ চিকিৎসা নেওয়া ২০০১ জন রোগীকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই গবেষণা করা হয়। প্রশ্নগুলো ছিল মূলত তাদের দৈনিক জীবনযাত্রা সম্পর্কিত, মাঝেমধ্যে না খেয়ে থাকা হয় কি না সে ব্যাপারেও প্রশ্ন করা হয়।

এরপর গবেষকরা এই রোগীদের সাড়ে চার বছর ধরে পর্যবেক্ষণে রাখেন এবং দেখা যায় তাদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা যারা না খেয়ে থাকার অভ্যাস করেন না তাদের তুলনায় বেশি।

উপবাস করলে একজন মানুষের ‘হিমোগ্লোবিন’, লোহিত রক্তকণিকা ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য দায়ি হরমোনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে এবং সোডিয়াম ও ‘বাইকার্বোনেট’য়ের মাত্রা কমায়। এছাড়াও ‘কিটোসিস’ এবং ‘অটোফ্যাজি’ প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে। এবিষয়গুলো হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে, বিশেষত হৃদযন্ত্র অকেজো হওয়া ও ‘করোনারি হার্ট ডিজিস’য়ের আশঙ্কা কমায়।

ডা. হর্ন বলেন, “জীবনকালের দুই-তৃতীয়াংশ সময় ধরে খাওয়া থেকে বিরত থাকলে শরীরে কিছু জৈবিক প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়। কয়েক বছর ধরে কালেভদ্রে উপবাসের অভ্যাস একসময় না খেয়ে থাকার উপকারী দিকগুলোকে সক্রিয় করে কম সময় অভুক্ত থাকার কারণেই। ফলে একসময় এই উপকারগুলো পেতে লম্বা সময় অভুক্ত না থাকলেও ভালো ফল পাবেন।”

গবেষকরা ব্যাখ্যা করেন, “সচরাচর ১২ ঘণ্টা খাওয়া থেকে বিরত থাকলে তার উপকারীতা উপভোগ করা যায়। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে গেলে আরও কম সময়েই একজন মানুষ উপকার পেয়ে যেতে পারেন। ফলে রাতের খাবার থেকে সকালের নাস্তা পর্যন্ত না খেয়ে থাকার কারণেও স্বাস্থ্যগত উপকার মিলবে।”

মনে রাখতে হবে, এই না খেয়ে থাকাটা সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। যেমন গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের এই অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে হবে। আবার শিশু ও বৃদ্ধদেরও খাওয়া থেকে বিরত থাকা এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়াও যারা ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, হৃদরোগ ইত্যাদির জন্য ওষুধ সেবন করছেন তাদেরও এই অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে হবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন