অন্ধ করে দিতে পারে স্মার্টফোন

যোগাযোগ থেকে শুরু করে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে হাতের ফোনটা সবার প্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এই সময়ে-ই দুঃসংবাদটি হল- স্মার্টফোন আপনার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2018, 09:21 AM
Updated : 14 August 2018, 09:23 AM

আর এই ফলাফল এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো’র করা এক গবেষণায়।

বৈদ্যুতিক যন্ত্রের পর্দা থেকে নির্গত নীল আলো চোখের রেটিনার ক্ষতি করে যা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার গতি বাড়ায়। কারণ এই নীল আলো চোখের রেটিনার গুরুত্বপূর্ণ কণিকাকে পরিণত করে কোষের মারণাস্ত্রে।

অজিত কারুনারাথনে, ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো’য়ের রসায়ন এবং জৈব রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বলেন, “নীল আলো যে চোখের রেটিনা নষ্ট করার মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস করে তা কোনো অজানা তথ্য নয়। বিষয়টি কীভাবে ঘটে সেটাই ছিল আমাদের গবেষণার বিষয়বস্তু। আর আমাদের বিশ্বাস এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে চোখের ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’য়ের গতি মন্থর করার নতুন ওষুধ তৈরি হবে। যেমন, নতুন ধরনের চোখের ড্রপ।”

অন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে একটি অন্যতম গুরুতর কারণ এই ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’, যার কারণ হল চোখের মধ্যকার ‘ফটোরিসেপটর’ কোষগুলোর মৃত্যু। এই কোষগুলো আলোর প্রতি সংবেদনশীল এবং আলো উপস্থিতি টের পাওয়ার জন্য এদের চাই ‘রেটিনাল’ নামক কণিকা, আর এভাবেই আমরা দেখতে পাই।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি’র ছাত্র এবং এই গবেষণার গবেষক কাসুন রাতনায়েক বলেন, “চোখের রেটিনার উপর নীল আলো ফেললে ‘রেটিনাল’ ধ্বংস করে ‘ফটোরিসেপটর’ কোষকে। আর এই কোষগুলো একবার মারা গেলে তা নতুন করে তৈরি হয় না।”

করণীয়

প্রথমত সকল বৈদ্যুতিক পর্দাযুক্ত যন্ত্রে ‘ব্লু লাইট ফিল্টার’ ব্যবহার করতে হবে। এদের মধ্যে স্মার্টফোন আর ল্যাপটপে এই ফিল্টার ব্যবহার সবচাইতে জরুরি। আর এই কাজের জন্য রয়েছে অসংখ্য সফটওয়ার এবং অ্যাপ।

দ্বিতীয়ত, অন্ধকারে এই যন্ত্রগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। সম্ভব হলে শোবার ঘর থেকে সকল বৈদ্যুতিক পর্দাযুক্ত যন্ত্র বিতাড়িত করতে হবে। অথবা রাতে ঘুমানোর সময় হাতের কাছে এমন কোনো যন্ত্র রাখা যাবে না।

গবেষকরা ‘ব্লু লাইট ফিল্টার’ যুক্ত রোদচশমা ব্যবহারেরও পরামর্শ দেন।

এই নীল আলো থেকে দুরে থাকতে পারলে চোখ ভালো থাকার পাশাপাশি ঘুমও ভালো হবে। কারণ ঘুমানোর আগে চোখের উপর তীব্র আলো পড়ার কারণে মস্তিষ্কে ‘মেলাটোনিন’ নিঃসৃত হয় না, আর এই হরমোনই আমাদের ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে।

ছোট্ট এই যন্ত্রের এত্ত মারাত্বক ক্ষতিকর দিক জানার পর সাবধান হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।

আরও পড়ুন