তবে আন্দাজে নয়, ভয়ের সিনেমা দেখার এরকম উপকারিতাগুলো গবেষণা করে বের করা হয়েছে।
ক্যালরি পোড়ায়: ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টমিনিস্টার ১০ ব্যক্তিকে ভিন্ন ভিন্ন ভয়ের সিনেমা দেখতে বলেন। সিনেমা দেখার সময় তাদের হৃদস্পন্দনের গতি এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের এবং অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়। যে ব্যক্তি সবচাইতে ভয়ঙ্কর সিনেমা দেখছিল সে কয়েকবার ভয়ে লাফিয়ে ওঠে, যার কারণে তার ১৮৪ ক্যালরি খরচ হয়। আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজ’য়ের শারীরিক পরিশ্রম ও ক্যালরি গনন যন্ত্রের তথ্য মতে, ১৪০ পাউন্ডের একজন মানুষকে এই পরিমাণ ক্যালরি খরচ করতে প্রায় ৪০ মিনিট হাঁটতে হবে।
এই ক্যালরি খরচের ব্যাখ্যা হল, ভয়ের সিনেমা দেখার কারণে আপনি মানসিক চাপে থাকেন, ফলে নিঃসৃত হয় ‘স্ট্রেসফুল স্টিমুলি’। এর প্রভাবে নিঃসৃত হয় ‘অ্যাড্রেনালাইন’ হরমোন, যা হৃদস্পন্দনের গতি বাড়িয়ে শরীরের জমিয়ে রাখা কর্মশক্তি খরচ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ‘স্ট্রেস’ নামক জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, ভয়ের সিনেমার দেখার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, তবে সাময়িক সময়ের জন্য। রক্তসঞ্চালন বাড়ানো, বিশেষত সংক্রমণরোধক শ্বেত রক্ত-কণিকার প্রবাহ বাড়ানোর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটে। ফলে শরীরের জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে।
মন মেজাজ ভালো রাখে: নেতিবাচক মনোভাবের বিরুদ্ধে ‘স্টিমুলি’ তৈরি হওয়ার কারণে ভয়ের সিনেমা দেখার পর মন মেজাজ ভালো থাকে, এমনটা দাবি করেন অনেক সমাজবিজ্ঞানী। ফলে ভূতের সিনেমা দেখার পর মানুষ অস্বস্তি ও হতাশা অনুভব করে কম।
আসল কথা হল: ভয়ের সিনেমার রোমাঞ্চ যারা অনুভব করেন না তারা উপরোক্ত সুবিধাগুলো উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হবেন। তাই ভূতের সিনেমা দেখার সময় বেশি করে ভয় পান।
তবে অল্প বয়সি ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ভয়ের সিনেমা দেখা একটি দীর্ঘস্থায়ী ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের করা এক গবেষণা মতে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ শতাংশ শৈশবে দেখা কোনো ভয়ের সিনেমা দেখার ভয়ঙ্কয় অভিজ্ঞতা আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের ভাষায় একে বলা হয় ‘রিসিজুয়াল অ্যাঙ্জাইটি’।