মুখের লোম কামাতে চাইলে

শেইভ বিষয়টা পুরুষের হলেও মেয়েরাও মুখের অবাঞ্ছিত লোম কামিয়ে ফেলতে পারেন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2018, 08:09 AM
Updated : 18 March 2018, 08:10 AM

প্রচলিত ধারণায়, ক্ষৌরকর্মের কারণে আরও ঘন হয়ে ওঠে দাড়ি। তবে বিষয়টা সত্যি না। বরং শেইভ করার ফলে মুখমণ্ডল এক্সফলিয়েট হয়।

তবে নারীদের ত্বক পুরুষের চাইতে আলাদা। তাই তারা যদি মুখের অবাঞ্ছিত লোম কামাতেই চায় তবে কিছু দিক খেয়াল রাখতে হবে।

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের রূপবিশেষজ্ঞ ফাত মু বলেন, “মুখ শেইভ করার আগে কী কারণে তা করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করে নিন। যারা ওয়াক্সিং বা থ্রেডিংয়ের কষ্ট ও ঝামেলা এড়াতে চান তাদের জন্য শেইভ করাই ভালো। তবে মনে রাখতে হবে, মুখে শেইভ করতে চাইলে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।”

মুম্বাইয়ের ‘কিউটিস স্কিন স্টুডিও’র ত্বক বিশেষজ্ঞ ও লেজার সার্জন ডা. অপ্রতীম গোয়েল বলেন, “মুখের লোম যদি ঘন, মোটা ও কালো হয় তাহলে লেজার পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। কয়েক সেশনের মাধ্যমেই মুখের লোমের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান করা যায়।”       

শেইভ করা নিয়ে প্রচলিত ধারণা

মুখ শেইভ করলে পরে লোম আরও মোটা ও ঘন হয়ে বেড়ে ওঠে- এই প্রচলিত ধারণাটি একদম সত্যি নয়। লোমের রং, ঘনত্ব বা পুরুত্ব রেজারের উপর নয় বরং শরীরের রাসায়নিক উপাদান ও হরমোনের উপর নির্ভর করে।

ডা. গোয়েলের কথায়, “শেইভ করার পর লোমগুলো দেখতে মোটা লাগে। কারণ তখন সব লোম একসঙ্গে বেড়ে ওঠে। আর লোমকূপ থেকে লোম মোটা হয়েই বের হয়। পরে আগার দিকে চিকন হয়ে যায়। তাই নতুন গজানো লোম দেখতে মোটা লাগে। 

শেইভিংয়ের সৌন্দর্য গুণ

বলা হয়ে থাকে পুরুষেরা নিয়মিত শেইভ করলে দেখতে দীর্ঘদিন তরুণ লাগে। কারণ এটা ত্বককে এক্সফলিয়েট করে।

ডা. গোয়েলের মতে, “এটা সত্যি। শেইভ করলে ত্বকে এক্সফলিয়েটের মতো কাজ করে। যা নাক বাদে মুখের অন্যসব অংশে অ্যান্টি এইজিংয়ের কাজ করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এটা ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও তরুণ রাখতে সাহায্য করে।”          

শেইভ করার আগে লক্ষ্যণীয় বিষয়

* মুখ ও শরীরের অন্যান্য অংশে একই রেইজর ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে অস্বস্তি ও সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

* লোমের বৃদ্ধি যেদিকে সেদিকে শেইভ করা হলে ও চামড়া সামান্য টানটান করে ধরা হলে অস্বস্তি কম হবে।

* ত্বক বেশি শুষ্ক হলে এর আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য ফেইশল তেল, শেইভিং ক্রিম অথবা শেইভিং জেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

* পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য ব্যবহারের পর রেইজর ভালোভাবে ধুয়ে অ্যালকোহল বা  আফটার শেইভ লোশনে ডুবিয়ে রাখুন।

শেইভ করার আগের ও পরের যত্ন

নয়া দিল্লির লুমিয়ার ডার্মাটোলজি ক্লিনিকের, চর্মবিশেষজ্ঞ ডা. কিরন লোহিয়া পরামর্শ দেন যে, “নতুন লোম গজানো প্রতিহত করতে স্যালাসিলিক অ্যাসিড বা বেটা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড সমৃদ্ধ পরিষ্কারক ব্যবহার করুন। শেইভের পরে জ্বালাভাব কমাতে জেল বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। শেইভ করার আগে ত্বক শুষ্ক লাগতে পারে, তাই প্রথমে ত্বকে সামান্য লোশন মাখিয়ে নিন। ত্বক তা শুষে নেওয়ার পর শেইভ করুন এবং পরে আবার ময়েশ্চারাইজার বা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। শেইভ করার পরে ত্বকে এক্সফ্লয়েন্টস বা অ্যালকোহল সমৃদ্ধ পণ্য ব্যবহার না করাই ভালো।”  

পদ্ধতি

ধারালো ব্লেড ব্যবহার করুন এবং লোমের বৃদ্ধির দিকে শেইভ করুন। এতে বাড়তি লোম গজাবে না। ত্বক টান টান করে ধরুন এবং নিচের দিকে শেইভ করুন। এছাড়াও জ্বালাভাব প্রতিরোধে রেইজর ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে ধরুন। খুব বেশি চাপ না দিয়ে শেইভ করার বিষয়ে সতর্ক করে দেন ডা. লোহিয়া।  

খুব বেশি শেইভ না করা

ডা. গোয়েলের কথায়, “কত দিন পর পর শেইভ করতে হবে তা নির্ভর করে লোমের বৃদ্ধির উপরে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা না থাকলে চার বা ছয় সপ্তাহে একবার শেইভ করতে পারেন। তবে কোনো বিশেষ অংশে লোমের বৃদ্ধি বেশি হলে তা আলাদাভাবে শেইভ করা যেতে পারে। ত্বক সংবেদনশীল হলে দীর্ঘ বিরতিতে শেইভ করা ভালো।”

তিনি আরও বলেন, “নিজের সুবিধা মতো শেইভ করতে পারেন। তবে কোনো ভাবেই সপ্তাহে একবারের বেশি না।”

রেইজর নির্বাচন

 

মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি আলাদা রেইজর ব্যবহার করার পরামর্শ দেন ডা. গোয়েল। একাধিক ব্লেড আছে ও প্রযুক্তিগতভাবে জেল উৎপন্ন হয় এমন রেইজর ব্যবহার করা নিরাপদ। কেটে যাওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে। তাছাড়া কয়েকবার ব্যবহার করার পর এটা পরিবর্তন করারও সুযোগ থাকে।

কেউ চাইলে পুরুষের রেইজরও ব্যবহার করতে পারেন, যতদিন এর বাঁকানো অংশ ঠিক থাকে। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ধরনের রেইজর ধারালো থাকা অবস্থায় ব্যবহার করা ভালো। ধারালোভাব কমে আসলে তা বদলে ফেলাই উচিত।

আরও পড়ুন