স্বাস্থ্য রক্ষায় গুড়

শীতমৌসুমের নতুন গুড়ের পিঠার কথা ভাবলে কার না মুখে জল আসে। তবে শুধু স্বাদের জন্য নয়, মিষ্টি হিসেবে গুড় স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2017, 09:38 AM
Updated : 25 Dec 2017, 11:16 AM

গুড়ের স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে জানিয়েছেন ভারতের ‘ম্যাক্স হেলথকেয়ার ইনস্টিটিউট’য়ের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ মানজারি চন্দ্র।

প্রাকৃতিক পরিষ্কারক: শ্বাসনালী, ফুসফুস, অন্ত্র, পাকস্থলী এবং খাদ্যনালী অত্যন্ত কার্যকরভাবে পরিষ্কার করতে পারে গুড়। তাই দুষিত পরিবেশে কাজ করেন এমন কর্মী যেমন কারখানা কিংবা কয়লা খনির শ্রমিকদের গুড় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে থাকে প্রচুর লৌহ, ফলে রক্তশুন্যতা সারাতে গুড় আদর্শ প্রাকৃতিক সমাধান। পাশাপাশি এতে রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি হয়।

রয়েছে ‘অ্যান্টি-অ্যালার্জিক’ উপাদান। যা অ্যালার্জির উপাদান থেকে রক্ষা করে শ্বাসযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কাশি ও হাঁপানির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

রক্ত পরিশোধণ: সামন্য পরিমাণে প্রতিদিন গুড় খেতে পারলে রক্ত পরিষ্কার হয়। ফলে দেহ সুস্থ রাখার পাশাপাশি ত্বকের কালচে দাগ দূর করে, ব্রণ প্রতিহত করে এবং বলিরেখা পড়তে দেয় না।

চুল উজ্জ্বল করতে:
লৌহের প্রাকৃতিক উৎস গুড়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে গুড় খেলে শরীরে লৌহ ভালোমতো শোষিত হয়। কারণ ভিটামিন সি দেহে লৌহ শোষণে সহায়তা করে। তাই লেবু বা পেয়ারার শরবতে চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করলে উপকার বেশি পাওয়া যাবে। আর চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, লম্বা ও কালো দেখাতে লৌহ অন্যতম  খনিজ উপাদান।

ওজন কমাতে: যেখানে অন্যান্য মিষ্টিতে বাড়ে মেদ, সেখানে গুড় ওজন কমাতে সহায়তা করে। পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস গুড়। এই খনিজ উপাদান শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে পেশি গঠন দ্রুত হয়, বিপাকীয় ক্ষমতা বাড়ায়। পটাশিয়াম শরীরে পানি ধারণের মাত্রা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। 

সর্দি-কাশির চিকিৎসা: গুড়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং দস্তা ও সেলেনিয়াম’য়ের মতো খনিজ উপাদান। যা শরীরের মুক্ত-মৌলজনীত ক্ষয় কমায় এবং রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ তৈরি করে। কুসুম গরম পানিতে গুড় গুলে পান করতে পারেন। চায়ে চিনির পরিবর্তেও গুড় ব্যবহার করতে পারেন।

হাঁপানির চিকিৎসায়: গুড়ের অ্যালার্জিরোধী উপাদান হাঁপানির চিকিৎসায় আদর্শ। পাঁচ চা-চামচ হলুদ, এক চা-চামচ মাখন এবং ছোট্ট এক টুকরা গুড় একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। হাঁপানির কষ্ট কমাতে এই মিশ্রণ প্রতিদিন তিন থেকে চারবার খেতে হবে।

গুড়ের গুণগত মান বুঝতে হবে এর রং দেখে। রং যত গাঢ়, গুড় ততই খাঁটি। হলদে আভা থাকলে বুঝতে হবে এতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন