মোবাইল ফোনে কথা বলছেন আর হাত ধুচ্ছেন বাথরুমের বেসিনে। হাত না হয় পরিষ্কার হল। তবে মোবাইল ফোনটাও যে জীবাণুতে ভরপুর থাকতে পারে সেটা কি ভেবে দেখেছেন?
Published : 17 Aug 2017, 04:46 PM
নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসই আছে যা খালি চোখে দেখতে পরিষ্কার লাগলেও, সেগুলো থাকতে পারে জীবাণুতে পূর্ণ। যা থেকে হতে পারে নানান রোগ।
এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত স্বাস্থবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে প্রতিদিন কাজে লাগে এরকম কিছু জিনিসের নাম, সেগুলো পরিষ্কার রাখা ও সাবধান থাকার উপায় জানানো হল।
এটিএম মেশিন: প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে কেউই হাত ধুয়ে এসে ব্যবহার করেন না। আর বাইরের ধুলাবালি, বাতাসে ভেসে বেড়ানো বিভিন্ন জীবাণুও পড়ে এগুলোতে। তাই এটিএম মেশিন ব্যবহারের পর হাত পরিষ্কার করতে হবে।
কিচেন স্পঞ্জ বা মাজুনি: প্রতিদিনের এঁটো বাসন, রান্নাঘরের সিঙ্ক ইত্যাদি পরিষ্কার করতে নিয়মিত ব্যবহৃত হয়ে থাকে কিচেন স্পঞ্জ বা মাজুনি। খাবার তৈরির সরঞ্জাম এবং প্লেট-গ্লাস পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহৃত এই জিনিস পরিপূর্ণ থাকে ব্যাক্টেরিয়ায়। আর ব্যাক্টেরিয়াপূর্ণ মাজুনি বা কাপড় দিয়ে প্রতিবার মোছার সময় ক্ষতিকারক জীবাণু ছড়িয়ে যায় রান্নায় ব্যবহৃত অন্য সব সরঞ্জামেও। তাই জীবাণুর বিস্তার ঠেকাতে প্রতিবার ব্যবহারের পর স্পঞ্জটি সঠিকভাবে পরিষ্কার করে রাখা জরুরি।
টুথব্রাশ: প্রতিবার দাঁত মাজার পর দাঁত ও মুখের জীবাণু এঁটে যায় ব্রাশে। আর বেশিরভাগ মানুষই টুথব্রাশ রাখেন বাথরুমে বা বাথরুমের কাছাকাছি বেসিনের ওপর। ফলে যেসব ব্যাক্টেরিয়া বাতাসে ভেসে বেড়ায় সেগুলোও আটকে যায় ব্রাশে।
অফিসের বিভিন্ন আসবাব: অফিসের ওভেনের সুইচ, ফ্রিজের দরজার হাতল, প্রিন্টার ও ফটোকপি মেশিনের সুইচ, পানির কল সবকিছুই জীবাণুতে সয়লাব। যার প্রধান কারণ অনেকগুলো মানুষের নিয়মিত ব্যবহার। তাই এগুলো ব্যবহারের পর হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
পার্স বা ব্যাগ: শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে, প্রতিদিনের ব্যবহৃত পার্স ও ব্যাগেও প্রচুর পরিমাণে ব্যাক্টেরিয়া থাকে। কারণ ব্যাগ নিয়ে অনেক জায়গায় যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়। আর সেখানকার জীবাণু লেগে যায় ব্যাগে। আর সেটা তেমনভাবে পরিষ্কার করাও হয় না।
শপিং কার্ট: সুপার শপে কেনাকাটা করার সময় বেশিরভাগ মানুষই কার্ট কিংবা ঝুড়ি ব্যবহার করেন। কাঁচা মাছ-মাংস, তরকারি, প্যাকেট, টিন ইত্যাদি সবই রাখা হয় এই ঝুড়ি কিংবা কার্টে। আর প্রতিদিন একটি ঝুড়ি ব্যবহার করেন কয়েকজন ক্রেতা, ফলে তাদের হাত থেকেও জীবাণু ছড়ায় এগুলোতে।
তোয়ালে: গোছল বা রান্নাঘরে ব্যবহৃত তোয়ালে যদি প্রায় ২০ মিনিট বা তার বেশি সময় ভেজা অবস্থায় থাকে তবে ছত্রাক ও ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে শুরু করে। তাই ভেজা তোয়ালে ভালো মতো শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
রোদে বা খোলা জায়গার বাতাসে শুকানো সবচেয়ে ভালো। তিন-চার ঘণ্টা ব্যবহারের পর গরম পানিতে ক্লোরিন ব্লিচ মিশিয়ে ধুতে হবে তোয়ালে। আর এসব করেও যদি আঁশটে গন্ধ- যা ছত্রাকের কারণে হয়, সেটা না যায় তবে বুঝতে হবে নতুন তোয়ালে কেনার সময় হয়েছে।
রান্নাঘরের সিঙ্ক: দেখা গেছে টয়লেট সিটের তুলনায় ১০ গুণ বেশি ব্যাক্টেরিয়া থাকে রান্নাঘরের সিঙ্কে। কারণ হিসেবে ধরা হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়ে থাকলেও রান্নাঘরের সিঙ্কের প্রতি তেমন একটা যত্নবান নন অনেকেই। এটা বেশিরভাগ সময়ই ভেজা থাকে আর খাবারের অংশ, শাকসবজির টুকরা প্রায়ই পড়ে থাকে। যা থেকে ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। তাই রান্নাঘরের সিঙ্ক নিয়ম করে পরিষ্কার করা জরুরি।
প্রতি সপ্তাহে দুতিনবার রান্নাঘরের সিঙ্ক পরিষ্কার করা উচিত। বিশেষ করে রান্নার পর এবং বাসন ধোয়ার পর অবশ্যই সিঙ্ক পরিষ্কার করা দরকার। বিশেষ করে বেসিনের পানি যাওয়ার জায়গা ভালো মতো গরম পানি ও জীবাণুনাশক উপাদান দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।
তাই ভালোমতো হাত ধুরে পেপার-টাওয়েল বা টিস্যু ব্যবহার করে হাত মুছুন। কেননা গরম হাওয়া দেওয়া হাত শুকানোর যন্ত্র থেকেও জীবাণু ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
ছবি: নিজস্ব ও রয়টার্স।
আরও পড়ুন