বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত প্রতিটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র তার চারপাশে ‘ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ফিল্ড (ইএমএফ)’ তৈরি করে। দীর্ঘদিন ধরে এই ‘ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ফিল্ডে’য়ের সংস্পর্শে আসার ফলে হতে পারে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসমস্যা, যেমন- ক্যান্সার, শিশু প্রতিবন্ধী হওয়া, পার্কিন্সন’স ও আলৎঝাইমার’স কিংবা বন্ধ্যাত্ব।
এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত একটি স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে তেজস্ক্রিয়তা উৎস হিসেবে চিহ্নিত কয়েকটি ঘরোয়া পণ্যের তালিকা দেওয়া হল।
মোবাইল ফোন: নিত্য ব্যবহার্য গ্যাজেটের মধ্যে মোবাইল ফোন সম্ভবত সবচাইতে বেশি সময় কাছে থাকে। আর তেজস্ক্রিয়তার দিক থেকে প্রায় প্রতিটি মোবাইলই একটি ছোটখাট মাইক্রোওয়েইভের সমতুল্য। নেটওয়ার্ক কম থাকা বা অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানে এই তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেড়ে যায়। মোবাইল কানে ধরে কথা বলা সবচাইতে বিপজ্জনক। কারণ এর থেকে তৈরি তেজস্ক্রিয়তা মস্তিষ্কে আঘাত হানে খুব কাছ থেকে।
মোবাইলের তেজস্ক্রিয়তার থেকে বাঁচতে হেডফোন ব্যবহার করা উচিত। এর সাহায্যে মোবাইল থেকে তৈরি প্রায় ৯৮ শতাংশ তেজস্ক্রিয়তা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
ওয়াইফাই রাউটার: বাসা, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেস্তোরাঁ সবখানেই প্রয়োজন ইন্টারনেট। আর সেজন্য চাই ওয়াইফাই রাউটার। তবে তেজস্ক্রিয়তার বিবেচনায় এক একটি রাউটার ছোট মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারের সঙ্গে তুলনাযোগ্য। আর ওয়াইফাই রাউটার দিনের পর দিন একটানা চলতে থাকে, ফলে ক্রমাগত তেজস্ক্রিয়তা ছড়াতে থাকে।
তাই যখন ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে না তখন রাউটার বন্ধ রাখা উচিত। সম্ভব হলে তারযুক্ত ইন্টারনেটের লাইন ব্যবহার করতে হবে।
ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার/ইনভার্টার: ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি গৃহস্থালী যন্ত্রের সঙ্গে এই যন্ত্র ব্যবহার হয়, যা আশপাশে তিন থেকে পাঁচ ফিট পর্যন্ত ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ফিল্ড ছড়ায়।
তাই শোবার ঘরে কিংবা এর কাছাকাছি স্থানে স্ট্যাবিলাইজার রাখা যাবে না। আর ইনভার্টার রাখা উচিত ঘরের বাইরে ছাউনির নিচে।
পুরনো বৈদ্যুতিক বোর্ড: পুরানো ভবনের বৈদ্যুতিক বোর্ড, পুরো বাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়ন্ত্রণের ‘মেইন সুইচ’ ইত্যাদি থেকে অবিরাম তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়। যাতে আক্রান্ত হয় ওই ভবনের বাসিন্দারা।
তাই পুরানো বৈদ্যুতিক সংযোগ বদলে ফেলাই ভালো।
ইলেক্ট্রিক শেইভার, হেয়ার ড্রায়ার: এই যন্ত্রগুলোতেও তেজস্ক্রিয়তার ঝুঁকি রয়েছে। ব্যবহারের সময় যন্ত্রগুলো শরীরের অত্যন্ত কাছে থাকার কারণে ক্ষতির তীব্রতা বেশি হয়। ইলেক্ট্রিক শেইভারের মাথা ও হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাস বের হওয়ার জায়গা থেকে ৭০/১০০ এমজি মাত্রায় ইএমএফ তৈরি হতে পারে।
তাই যন্ত্রগুলো যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে। হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাথা থেকে কমপক্ষে এক ফিট দূরে রাখুন।
ল্যাপটপ: এই যন্ত্রের নিচের অংশে তীব্রমাত্রার ইএমএফ তৈরি হয় যার সংস্পর্শে আসলে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
তাই নাম যতই ‘ল্যাপটপ’ হোক, কোলে বা পায়ের উপর রেখে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর ব্যবহার করতে হবে ল্যাপটপ রেডিয়েশন শিল্ড।
ছবি: রয়টার্স।