অতিরিক্ত ব্যায়ামের কুফল

শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন শারীরিক পরিশ্রম। তবে অরিতিক্ত ব্যায়াম করলে হতে পারে নানা রকম শারীরিক সমস্যা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2017, 09:01 AM
Updated : 10 July 2017, 09:02 AM

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন জানানো হয়, অনেক গবেষক মনে করেন, অতিরিক্ত পরিশ্রম শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। কখনও কখনও তা গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করে।

এই প্রতিবেদনে কয়েকটি লক্ষণের কথা উল্ল্যেখ করা হয়েছে যা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হয়ে থাকে। এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে পরিশ্রমের মাত্রা কমিয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। না হলে সমস্যা বাড়তে পারে।

কর্ম ক্ষমতা কম: অ্যারোবিক শরীরচর্চা যেমন- সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা এবং দৌড়ানো ইত্যাদি কাজে যদি নিজের কর্মক্ষমতার ঘাটতি দেখতে পান তাহলে বুঝতে হবে অতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে। পরিশ্রম খুব বেশি হলে তা মানুষের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

শক্তি কমা: যদি সাধারণ মাত্রায় শরীরচর্চা করতে না পারেন অথবা সবসময় শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত অনুভব করেন তাহলে বুঝতে হবে শরীর ক্লান্ত। আপনার পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন। 

মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি: প্রিভেন্টেটিভ মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, সপ্তাহে যদি সাড়ে সাত ঘন্টার চেয়ে বেশি সময় শরীরচর্চা করা হয় তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়া, হতাশা এবং মানসিকভাবে দুর্বল বোধ করতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করা শরীরকে দ্বিধা, উদ্বেগ, রাগ এবং 'মুড সুইং'য়ের মতো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।  

অনিদ্রা: পরিশ্রম করলে শরীর ঠিক থাকে এবং রাতে ভালো ঘুম হয়। তবে অতিরিক্ত পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা হলে সারা রাত খুব অস্থিরতার মধ্যে কাটে এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।

ব্যাথার সৃষ্টি: ব্যায়ামের পর পেশি পুনর্গঠনের জন্য সময় দেওয়া প্রয়োজন। না দিলে শরীরে ব্যাথা হয় যা দৈনন্দিন কাজ কর্মে বাধা তৈরি করে। পাশাপাশি বাজে অনুভূতির সৃষ্টি হয়। 

প্রস্রাবের রং পরিবর্তন: শারীরিক পরিশ্রমের পরে যদি প্রস্রাবের রং পরিবর্তন দেখতে পান তাহলে বুঝতে হবে এটা 'রাহবডোমায়োলাইসিস' অবস্থার লক্ষণ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত পেশির কোষ রক্তে মিশে যায়।  ফলে কিডনির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

হৃদপিণ্ডে সমস্যা: জার্মান বিজ্ঞানীদের গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে তাদের হৃদরোগ এবং স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

অনলাইন জার্নাল 'হার্ট'য়ে প্রকাশিত সুইডিশ বিজ্ঞানীদের এক গবেষণা থেকে জানা যায়, যারা ধ্যানজাতীয় শারীরিক পরিশ্রম করেন তারা বৃদ্ধাবস্থায় হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত গতিকে পাঁচ গুণ বেশি উন্নত করতে পারেন।

সংযোগস্থলের সমস্যা: সপ্তাহে একাধিকবার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে শরীরের সংযোগস্থলে আঘাতের সৃষ্টি করে । 

রজঃচক্রের অনিয়ম: অতিরিক্ত পরিশ্রম করা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে রজঃচক্রের অনিয়ম শুরু হতে পারে। যা 'অমিনোরিয়া' নামে পরিচিত। এর ফলে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। পরিণতিতে অস্টিওপোরোসিস নামক রোগের সৃষ্টি হয়। 

হৃদস্পন্দনের মাত্রা বৃদ্ধি: হৃদযন্ত্র খুব বেশি চাপে থাকলে এর স্পন্দনের মাত্রা বেড়ে যায়। সকালে হৃদস্পন্দনের মাত্রা পরিমাপ করা হলে এর পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে পারবেন। হৃদস্পন্দনের মাত্রা সাধারণের চেয়ে বেশি হলে বুঝতে হবে শারীরিক পরিশ্রম বেশি হচ্ছে।

ছবি: রয়টার্স।