সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেকেই পর্যাপ্ত ঘুমাচ্ছেন না, কেউ আবার অনেক বেশি ঘুমাচ্ছেন।
Published : 18 May 2016, 05:03 PM
গবেষণা বলে, মাত্রাতিরিক্ত ঘুম স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ায়। ঘুম নিয়ে প্রচলিত বিভিন্ন ভুল ধারণা তুলে ধরেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইট।
দিনের তন্দ্রায় রাতের ঘুম হারাম: এটা ঠিক নয়। বরং দিনের বেলা তন্দ্রা বা হালকা ঘুম প্রকৃতপক্ষে রাতে ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের কর্মরত ‘মেমরি’ হালকা করতে সাহায্য করে। ফলে রাতে ঘুমিয়ে পড়া সহজ হয়, ঘুমও হয় গাঢ়। তবে তন্দ্রা ২০ মিনিটের বেশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়া উচিৎ নয়। আর হতে হবে দুপুর দুইটা থেকে বিকাল চারটার মধ্যে।
ঘুমাতে হবে আট ঘণ্টা: ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমিয়েও ভালো মতো নিজেদের কাজ চালাতে পারেন অনেকেই। তাই ঘড়ি মেপে আট ঘণ্টাই ঘুমাতে হবে এমনটা জরুরি নয়। যদি সুস্থ অনুভব করেন, তবে পর্যাপ্ত ঘুম হয়েছে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই।
যত খুশি তত ঘুম: গবেষকদের মতে, ১০ ঘণ্টা বা তার বেশি ঘুম ততটাই ক্ষতিকর যতটা ছয় ঘণ্টার কম ঘুম। দীর্ঘসময় শুয়ে থাকলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। রক্তে শর্করার পরিমাণও কমে যায়। ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে ঘুম ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
শরীর ও মস্তিষ্কের কাজ থামাতে ঘুম: তবে আমাদের শরীর ও মস্তিষ্ক কখনও থেমে থাকে না, ঘুমানোর সময়ও না। অভ্যন্তরীন শারীরিক কাজ, স্মৃতি তৈরি করা, হাড় গঠন, টিস্যু পুর্নগঠন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, দূষিত উপাদান অপসারণ এবং রক্তে শর্করার ভারসাম্য রক্ষার কাজে অবিরাম ব্যস্ত থাকে।
বয়স্কদের ঘুমের প্রয়োজন কম: এটা অতি প্রচলিত একটি ভ্রান্ত ধারণা। বয়স বাড়ার সঙ্গে ঘুমের মান খারাপ হয়, পরিবর্তন আসে ঘুমের অভ্যাসে। কারও বার বার ঘুম ভেঙে যায়। কারও ঘুম গভীর হয় না। আবার কারও তন্দ্রা বেড়ে যায়।
শরীরচর্চা ঘুমে সহায়ক: শরীরচর্চা ঘুমের গভীরতা বাড়ায় তা ঠিক। তবে ঘুমানোর সময়ের কাছাকাছি সময়ে ভারি ব্যায়াম ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
মদ্যপান ঘুমে সহায়ক: মদ্যপান ঘুমের অভ্যাস ওলটপালট করে দিতে পারে, বিশেষ করে গভীর রাতে। প্রাথমিকভাবে হয়ত ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করবে, তবে পরে তৃষ্ণায় ঘুম ভেঙে যেতে পারে।
ছুটির দিনে ঘুমের ঘাটতি পূরণ: ঘুমের ঘাটতি পূরণ করা প্রকৃতপক্ষে সম্ভব নয়। কারণ ঘুমালেও ভালো ঘুম নাও হতে পারে। দীর্ঘসময় বিছানায় পড়ে থাকা শরীরে স্বাভাবিক রুটিন নষ্ট করে। ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে, কাজেও মন বসে না। এক্ষেত্রে ঘুমাতে যান জলদি। তবে ঘুম থেকে উঠুন প্রতিদিনের সময় মতো।
ছবি: রয়টার্স।