অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা অন্যের আগে নিজের জন্য চিন্তা করা বা নিজের মন মতো চলার কারণে পরে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। অথবা বলা যায়, এ কারণে অনেকেই তার ভালোবাসার মানুষ বা পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে থাকেন।
সত্যি বলতে এই বিষয়গুলো আশপাশের মানুষের উপর তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না।
লাইফস্টাইল বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে নিজের জন্য বা নিজের ভাল লাগার কোনো কাজ করার পর অন্যের কাছে ক্ষমা চাওয়া বা ‘সরি’ বলার বিষয়টি কতটুকু ভিত্তিহীন তারই কিছু দিক তুলে ধরা হয়।
নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে সময় ব্যয় করা
মাসে একবার পার্লারে মেডিকিওর, পেডিকিওর, ফেইশল বা স্পা করাতে একটু বেশি সময় এবং টাকা খরচ হতেই পারে। তবে অনেক মেয়েই চিন্তায় পড়ে যান এই ভেবে যে, পরিবারের কেউ হয়ত অতটা ভালো চোখে দেখবে না।
তাবে সাধারণভাবে দেখলে আর এই ধরনের মানসিক চাপে পড়তে হয় না। যেমন, সারা সপ্তাহ বা সারা মাস ঘর এবং অফিস সামলে নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য যদি কিছু বাড়তি খরচ হয় বা সময় ব্যয় হয় এতে দোষের কিছু নেই। নিজে যদি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ না থাকা যায় তবে অন্যদের খেয়াল ভালোভাবে রাখা সম্ভব নয়। তাই নিজের জন্য এই সময়টুকু আলাদা করে রেখে মন খারাপ করার বা হীনম্মন্যতায় ভোগার কোনো কারণ নেই।
বরং বিষয়টি আগেই আশপাশের মানুষ, যাদের উপর এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে থাকে তাদের জানিয়ে রাখা যেতে পারে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয়। তাই এ বিষয়ে কথা বলার আগে, কার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে তার মানসিকতা বুঝে নিতে হবে।
কোনো কারণে ‘না’ বলা
কিছু পছন্দ না হলে বা সময়ে না মিললে সেক্ষেত্রে ‘না’ বলার অধিকার সবারই আছে। বিশেষ করে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো অনেকক্ষেত্রেই চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় নারীদের উপর।
যেমন- জলদি বিয়ে করা, চাকরি করা বা না করা ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে অন্যের মতামত মেনে নিতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সুতরাং এক্ষেত্রে না বলতে শিখতে হবে। তবে ‘না’ বলে কখনও এটি চিন্তা করলে চলবে না প্রিয় মানুষটি কষ্ট পেলো কিনা! কারণ এ বিষয়গুলো জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তবে এই ‘না’ বলার ক্ষেত্রেও কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন, তর্ক না করে ভালোভাবে বুঝিয়ে বললে অনেক ক্ষেত্রেই তা ভালো ফলাফল দেবে।
নিজের কথা ভাবা
নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগা
অন্যের চোখে কোনটা ভালো তা ভেবে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা করার বা মন খারাপ করার কোনো মানে নেই। বেশি শুকনা বা অতিরিক্ত মোটা স্বাস্থ্য নিয়ে কম বেশি সব নারীরাই দুশ্চিন্তায় ভোগেন যে, ‘লোকে কী ভাববে!’ এ ধরনের চিন্তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলতে হবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের স্বাস্থ্য তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। গর্ভাবস্থায় অথবা অন্য সময় হরমোন পরিবর্তনের কারণে ওজন বাড়তে বা কমতে পারে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা নিয়ে মন খারাপ করার কোনো মানে হয় না।
বেশি অনুভূতি প্রবণ হওয়ার কারণে
খুব অল্পেই মন খারাপ হয়ে যাওয়া বা রেগে যাওয়া, কান্নাকটি করা ইত্যাদি মেয়েদের সাধারণ স্বভাব। আর এ নিয়ে অনেক মেয়েই হীনম্মন্যতায় ভোগেন। অনেক সময় মন খারাপ হলে বা রাগারাগির পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা দুঃখ প্রকাশ করে থাকেন বা ‘সরি’ বলেন।
মেয়েদের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণেই তারা পুরুষদের থেকে আলাদা। যদি পুরুষরা তাদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবে সমাজে এবং সম্পর্কে থাকতে পারে তবে মেয়েদেরও তাদের এই ছোটখাটো বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগা বা প্রিয় মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন নেই।
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স।