হরমোনের ভারসাম্যহীনতা

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অকারণেই ক্লান্ত লাগছে? মনে হচ্ছে দুনিয়াটা দুলছে বা রাতে ঘুমের মধ্যে ঘেমে যাচ্ছেন! এসব লক্ষণ হতে পারে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।

লাইফস্টাইল ডেস্ক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2014, 04:28 PM
Updated : 14 Oct 2014, 04:28 PM

প্রতিমাসে স্বাভাবিক ঋতুচক্রের পর মেয়েদের শরীর হরমোনের গড়মিলের হিসেব মিলিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে। আর এই কর্মকাণ্ড ঠিকমতো না হলেই নানান রকম অস্থিরতা দেখা দেয়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

একটি স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে মেয়েদের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা লক্ষণ সম্পর্কে জানিয়েছেন নিউ ইয়র্কের মাউন্ট কিসকো মেডিকেল গ্রুপের ধাত্রী ও স্ত্রীরোগবিদ্যা বিশেষজ্ঞ অ্যালিসা ডোয়েক।

ক্লান্তি

ফাইনাল পরীক্ষা শেষে বা অনেক রাত জেগে কাজ করার পরদিন যদি ক্লান্ত লাগে সেটা আলাদা ব্যাপার। তবে প্রতিনিয়ত যদি অবসাদ ভর করে, ওজন বাড়ে, ক্ষুদা মন্দার পাশাপাশি শরীরের অন্ত্র ঠিকভাবে কাজকর্ম না করে তাহলে এটা থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। ক্লান্ত লাগাটা স্বাভাবিক। তবে অবসাদের কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

ত্বক পরিবর্তন

আপনি হয়ত ভেঙে পড়েছেন, মুখে হঠাৎ ব্রণ দেখা দিয়েছে। মনে করছেন প্রায় রাতেই মুখ পরিষ্কার করে ঘুমাতে যাওয়া হয়নি তাই এসব হচ্ছে। তবে এটা অন্য কিছুর লক্ষণও হতে পারে। মুখের অর্ধেক অংশ জুড়ে ফুসকুড়ি বা বড় ব্রণ হওয়ার অন্যতম লক্ষণ হল শরীরের টেসটোসটেরনের পরিমাণ বেশি হয়ে যেতে পারে।

তবে এতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধের মাধ্যমে হরমোন লেভেল স্বাভাবিক করা সম্ভাব। সেই সঙ্গে ব্রণের সমস্যাও দূর হবে।

চুল ওঠা

এখানে খুবই দ্রুত চুল গজানোর কথা বলা হচ্ছে। যেমন: এক মাসের মধ্যেই চিবুকে দাড়ি বের হওয়া, বুকে মোটা করে লোম গজানো, হাতে লোম ওঠা। এগুলো হঠাৎ হলে ধরে নেওয়া হয় শরীরের টেসটোসটেরন হরমন টিউমার তৈরির ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ভয়ের কিছু নেই, প্রাথমিক অবস্থায় টিউমার ওষুধ বা ছোট অপারেশনের মাধ্যমেই সারিয়ে ফেলা সম্ভব। তাই উল্লেখিত লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অনাকাঙ্ক্ষিত মাসিক

অনিয়মিত মাসিক হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন: অবসাদ, থাইরয়েড সমস্যা বা শরীরে অল্প ইস্ট্রোজেন। এছাড়া আরেকটি কারণ হতে পারে পলিসাইটিক ওভারি সিন্ড্রম (পিসিওএস), যার মানে অনিয়মিত মাসিক বা সঠিক তারিখের মধ্যে মাসিক না হওয়া। তবে এর সঙ্গে ওজন কমাতে ব্যর্থ হওয়া ও অনাকাঙ্ক্ষিত লোম উঠার সমস্যাও থাকতে হবে।

সাধারণত পিসিওএস সমস্যা খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে দূর করা যায়। এছাড়া ডাক্তারের পরামর্শে জন্মনিরোধক বড়ি খেলেও উপকার পাওয়া যায়। তবে এর জন্য ডাক্তারের সঙ্গে খোলা মনে কথা বলতে হবে।

রাতের ঘাম

শোবার ঘরের তাপমাত্রা বেশি হলে অন্যকথা। তবে কোনও কারণ ছাড়াই যদি শরীর গরম হয়ে যায় আর ঘামের কারণে ঘুম ভাঙে তাহলে ধরে নিতে হবে শরীরে ইস্ট্রোজেনের স্বল্পতা রয়েছে। সেই সঙ্গে অনিয়মিত ডিম্বস্ফোটন হতে পারে, যা 'পেরিমেনোপজ'-এর লক্ষণ। আর এই পেরিমেনোপজ নির্দিষ্ট বয়সে মেনোপজ হওয়ার ১০ বছর আগ থেকেই শুরু হতে পারে।

যদি ৪০ বছর বয়সের আগ পর্যন্ত মাসিক নিয়ে কোনও সমস্যা না থাকে তবে এই 'ভূতুড়ে ঘাম' হতে পারে নির্দিষ্ট সময়ের আগে মেনোপজ হওয়ার লক্ষণ। আর এরকম হলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।