সেরাম বা ক্রিম ব্যবহার করে ত্বক সুস্থ ও আর্দ্র রাখা যায়। একইভাবে মাথার ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানিভাব দূর করতে আর্দ্রতা রক্ষাকারী তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
এতে মাথার ত্বক ভালো থাকে এবং চুল সতেজ দেখায়।
‘স্ক্যাল্প অয়েল’ বলতে যা বোঝায়
চুলের যত্নে শ্যাম্পুর আগে তেল-ভিত্তিক উপাদান সরাসরি মাথার ত্বকে দেওয়া হয়।
সাধারণত ছোট ড্রপারের সাহায্যে ব্যবহার করা হয়। আর আলতোভাবে মালিশ করা হয়। মাথার ত্বকের আর্দ্রতা ও কোমলভাব ধরে রাখতে এটা চুলের গোড়ায় দিতে হয়।
তবে অনেকক্ষেত্রে এতে বাড়তি উপাদান যোগ করার ফলে মাথার চুল মসৃণ, পরিষ্কার এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি’তে অবস্থিত ‘মেভিন হেয়ার’য়ের নিবন্ধিত চুলসজ্জাকারী ব্রিটানি জনসন বলেন, “সবসময় শ্যাম্পু করা, ‘ম্যানিপুলেশন’ এবং ‘স্টাইলিং’ যন্ত্র ব্যবহার করার ফলে চুলের পুষ্টি উপাদান হ্রাস পায় এবং শুষ্ক হয়ে যায়। মাথার ত্বকে তেল ব্যবহার বাড়তি কোমলতা দান করে।”
আর বাজারে বিভিন্ন রকম ‘স্ক্যাল্প অয়েল’ পাওয়া যায়। তাই যে কেউ ত্বকের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করার জন্য বেছে নিতে পারেন।
সব থেকে বড় বিষয় হল- কখন মাথার ত্বকে তেল ব্যবহার করতে হবে, কতদিন পর পর পছন্দের হেয়ার স্টাইল করা যাবে তা বিবেচনা করতে হবে।
যেমন- চুলে সুরক্ষার স্তরের ব্যবস্থা করা হবে কী হবে না অথবা সাধারণ তেল ও ত্বক পরিচর্যা রুটিন অনুসরণ করা।
কতদিন পর পর মাথার ত্বকে তেল দিতে হবে?
মার্কিন চুলসজ্জাকর ফিলিপ বারকোভিৎজ বলেন, “কতদিন পর পর চুলে তেলের ট্রিটমেন্ট নিতে হবে তা কয়েকটি ভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে যেমন- চুলের ধরন, মাথার ত্বকের অবস্থা, কোন ধরনের তেল ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ব্যক্তিগত চাহিদা ইত্যাদি।”
তার মতে,
সাধারণ চুল ও মাথার ত্বকে -সপ্তাহে একবার।
শুষ্ক চুল ও মাথার ত্বকে- সপ্তাহে দুতিনবার।
তৈলাক্ত চুল ও মাথার ত্বকে দুই সপ্তাহ পর পর।
বারকোভিৎজ বলেন, “যদি চুলের বৃদ্ধি বা নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যে যেমন- খুশকি বা চুলকানি ইত্যাদির জন্য ব্যবহৃত তেল নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্যবহার করা উচিত। সপ্তাহে দুতিনবার ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।”
যদি আরও বেশি ভালো ফলাফল পেতে চাইলে সপ্তাহে দুয়েকবার তেল মেখে সারারাত রেখে দিতে হবে। আর পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
ব্যবহার পদ্ধতি
‘স্ক্যাল্প অয়েল’ ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং খুব কম সময়েই নিজের এই যত্ন করা যায়।
ধাপ ১: চুল কয়েক ভাগ করে তেল ব্যবহার
“একটা ড্রপার অথবা আঙ্গুলের ডগার সাহায্যে তেল সরাসরি মাথার ত্বকে সিঁথি কেটে ব্যবহার করতে হবে”- বলেন বারকোভেৎজ।
তেল মাথার সামনের দিক থেকে পেছনের দিক পর্যন্ত দিতে হবে। সেসব অংশে কিছুটা বাড়তি যত্নের প্রয়োজন সেখানে বেশি পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।
ধাপ দুই: আলতোভাবে পাঁচ মিনিট মালিশ করা
আলতোভাবে ‘স্ক্যাল্প অয়েল’ মাথায় ত্বকে আঙ্গুলের আগার সাহায্যে গোলাকারভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্যবহার করতে হবে। অথবা সিলিকন মেসেঞ্জার ব্যবহার করা যেতে পারে।
মালিশের ফলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় যা দ্রুত তেল শোষণে এবং চুল ও মাথার ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে ।
ধাপ ৩: ১৫ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করা
মাথার ত্বকে তেল শোষণের জন্য ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় দিতে হবে। চুল খুব বেশি শুষ্ক হলে চুলের মাঝ বরাবর থেকে নিচের অংশে তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে চুলে যেন খুব বেশি তেল দেওয়া না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
ধাপ ৪: শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও স্টাইল
চুল ভালো রাখতে মাথার ত্বকের সঙ্গে মানানসই এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। এতে বাড়তি তেল দূর হবে। শ্যাম্পু শেষে চুলে কন্ডিশন ব্যবহার করতে হবে। আর চাইলে স্টাইলিং করা যেতে পারে।
জনসন বলেন, “যদি এসেনশল অয়েল সমৃদ্ধ কোনো তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে তবে নিশ্চিত হতে হবে যেন এর সাথে কোনো বাহক তেল যেমন- নারিকেলের তেল ইত্যাদি যোগ করা হয়।”
এসব তেল সরাসরি ব্যবহার ঠিক নয়।
তিনি আরও পরামর্শ দেন, “কোনো পণ্য ব্যবহারের আগে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে নিতে হবে। বিশেষত যদি কেউ খুশকি, সেরোসিস, একজিমা বা অন্যান্য মাথার ত্বকের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বিশেষ কোনো চিকিৎসার সুপরামর্শ দিতে পারেন।”
আরও পড়ুন