নানান ধরনের খাবার তৈরিতে সয়াবিন তেল ব্যবহার করার প্রচলন সব দেশেই রয়েছে।
আর আমাদের দেশে অন্যান্য তেলের চাইতে সয়াবিন তেলের ব্যবহারই বেশি। তবে ঘরে যে তেল ইতোমধ্যেই আছে সেটা দিয়ে চুল পরিচর্যার পদ্ধতি জানা থাকলে সাশ্র্রয় করাও সম্ভব।
সয়াবিন এক ধরনর ভেষজ তেল যা নানান পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। চুলে এই তেল ব্যবহারে ভিটামিন ই এবং পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি যেমন- ওমেগা-থ্রিস ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়।
যে কারণে চুলের জন্য সয়াবিন তেল উপকারী
সয়াবিনের পুষ্টিগুণ চুলের ফলিকল ও মাথার ত্বক উন্নত রাখে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলকে করে তোলে মজবুত ও উজ্জ্বল ।
এই বিষয়ে হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. ডিএম মাহাজন বলেন, “ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের ফাটাভাব কমাতে সহায়তা করে।
গভীর থেকে মসৃণ করে: সয়াবিন তেল চুল আর্দ্র রাখে। এতে আছে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন ও তেল যৌগ যা চুল গভীর থেকে কন্ডিশন করতে ও আর্দ্র রাখতে সহায়তা করে।
চুলের আগা ফাটা ও মাথার ত্বকের শুষ্কতা সয়াবিন তেল ব্যবহারের মাধ্যমে সমাধান করা যায়।
চুলে পুষ্টি যোগায়: সয়াবিন তেলে থাকা উপাদান যা চুলের ফলিকলে গভীর থেকে পুষ্টি যুগিয়ে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।
মসৃণ ও কোমলভাব: সয়াবিন তেল চুলের কিউটিকেল মসৃণ রাখে। ফলে চুলে কোঁকড়া ও উস্কোখুস্কো-ভাব কমাতে সহায়তা করে।
কন্ডিশনার, সেরাম বা হেয়ার ট্রেটমেন্টের সাথে এই তেলের ব্যবহার চুলে মসৃণ ও চকচকেভাব আনে।
চুলের গঠন উন্নত করে: সয়াবিন তেলের নির্যাস চুলের যত্নে নানান প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয়। এই তেল সহজেই মাথার ত্বকে শোষিত হয়। ফলে চুলে একধরনের পিচ্ছিলভাব কাজ করে।
প্রদাহরোধী উপাদান সমৃদ্ধ: সয়াবিন তেলে আছে ভিটামিন ই যা প্রদাহনাশক গুণ সম্পন্ন। এতে মাথার ত্বকের প্রদাহ এবং খুশকি হ্রাস পায়।
ব্যবহার পদ্ধতি
বেশ সহজেই সয়াবিন তেল ব্যবহার করে চুলের পরিচর্যা করা যায়।
গরম তেল মালিশ
এক টেবিল-চামচ সয়াবিন তেল কুসুম গরম করে আলতোভাবে মাথার ত্বক ও চুলে মালিশ করতে হবে। ৩০ থেকে ৬০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই পদ্ধতি মাথার ত্বক ও চুল আর্দ্র রাখতে কার্যকর।
শ্যাম্পুর আগে ব্যবহার
শ্যাম্পুর আগে চুলে অল্প পরিমাণে সয়াবিন তেল মালিশ করা ‘প্রি-শ্যাম্পু ট্রিটমেন্ট’ হিসেবে কাজ করে। এতে চুলের শুষ্ক ও ভঙ্গুরভাব কমে।
সারা রাত ডিপ কন্ডিশনিং পদ্ধতি
মাথার ত্বকে সয়াবিন তেল ব্যবহার করে সারা রাত শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। সপ্তাহে দুয়েকবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করে চুলকে গভীর থেকে কন্ডিশন করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে
যদিও অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে সয়াবিন তেল ইতিবাচক কাজ করে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যেমন-
যাদের সয়াবিনে অ্যালার্জি আছে তাদের জন্য এটা ব্যবহার না করাই ভালো।
অতিরিক্ত ব্যবহারে চিটচিটে ও ভারীভাব সৃষ্টি হতে পারে।
সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারীদের মাথার ত্বকের লোমকূপ আবদ্ধ করে ব্রণ ও জ্বলুনির সমস্যা বাড়াতে পারে।
তবে মনে রাখতে হবে পরিমিত ও নিয়ন্ত্রিত উপায়ে সয়াবিন তেল ব্যবহার চুলের জন্য উপকারী।
আরও পড়ুন