বাঙালি খাবারে উদরপূর্তিতে মিলছে নানান পদ নানান রেস্তোরাঁতে।
Published : 13 Apr 2025, 04:45 PM
পহেলা বৈশাখে লাল-সাদা পোশাকে সাজে শহর, বাড়িতে চলে পান্তা-ইলিশের আয়োজন, আর প্রিয়জনদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার আনন্দ তো থাকেই।
এই দিনে রাজধানীর ছোট-বড় নানান রেস্তোরাঁও সাজিয়ে তোলে নিজেদের বৈশাখী আয়োজনে।
কেউ দিচ্ছেন বাঙালি প্লাটারে ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেল, কেউ বা আয়োজন করছে ‘লাইভ মিউজিক’ কিংবা বিশেষ মূল্যছাড় অফার।
পান্তা-ইলিশ থেকে সন্দেশ: বাঙালিয়ানা প্লাটারে সম্পূর্ণতা
‘এন’স কিচেন’ রেস্তোরাঁ চৈত্রসংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এনেছে বিশেষ প্লাটার।
১৩ এপ্রিল দুপুর ও রাত সংক্রান্তি স্পেশালে পাওয়া যাবে ভাত, নিম বেগুন, পাঁচ মিশালি শাক, তিল ভর্তা, কালোজিরা ভর্তা, শুক্তো, আম ডাল, আমের টক, লাউ পাতায় পাঁচ মিশালি ছোট মাছের পাতুরি, সন্দেশ, ছাতু ও ১১ পদের সঙ্গে থাকবে একটি ‘রিফ্রেশনিং’ শরবত।
১৪ এপ্রিল দুপুর ও রাতে নববর্ষ স্পেশালে থাকবে পান্তা ভাত/ গরম ভাত, রুই ভাজা, ডালের বড়া দিয়ে ঘি শুক্তো, বেগুন ভাজা, সরিষা মুরগি, চুই ঝালে গরু, ঝিরি আলু ভাজা, আম ডাল চচ্চড়ি, ডাবের পুডিং, লালমোহন, রিফ্রেশিং শরবত। এই প্ল্যাটারে খরচ হবে ১,৩৫০ টাকা।
গরুর মাংস খেতে না চাইলে খাসীর মাংসর ব্যবস্থা থাকবে। সেক্ষেত্রে দাম হবে ১,৪৫০ টাকার। আবার রুই না খেয়ে ইলিশ ভাজা নিতে চাইলে ১,৬৫০ টাকা খরচ পড়বে।
পহেলা বৈশাখে এখানে খেতে চাইলে ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যার মধ্যে অর্ডার করতে হবে। ঠিকানা ধানমন্ডি ৬/এ সাত মসজিদ রোড। বাড়ি ৬৯/বি।
আরাসান সিগ্নেচার রেস্তোরা ১৩, ১৪ ও ১৫ এপ্রিল তিন দিনের বিশেষ বৈশাখী প্লাটারের আয়োজন করেছে। যেখানে থাকবে পান্তা ভাত/পানি ভাত, ইলিশ ভাজা, আলু ভর্তা, ইলিশ মাছের লেজ ভর্তা, ডাল ভর্তা, পেঁয়াজ মরিচ ভর্তা, বেগুন ভর্তা, লাচ্ছি, ওয়েলকাম ডিংক্স।
তবে আগেই অর্ডার করে প্লাটার নিশ্চিত করতে হবে। ঠিকানা ধানমন্ডি ৯/এ, সাত মসজিদ রোড, বাড়ি ৪২/৪৩।
ঐতিহ্যবাহী ফিউশন: আধুনিক রেস্টুরেন্টের বাঙালি ছোঁয়া
মিরপুরের ক্যাফে রিও রেস্তোরাঁতে ব্যুফে’তে উপভোগ করা যাবে বৈশাখের খাবার। হাঁস ভুনা, মাছ, পোলাও, আলুর দম, লুচি-সহ বিভিন্ন স্বাদের খাবার থাকবে।
দুপুরের ব্যুফেতে থাকবে একশর বেশি পদ। রাতের ব্যুফেতেও তাই। থাকছে বিশেষ ছাড়া।
লাঞ্চ ব্যুফে ৯৯৯ টাকা হলেও বৈশাখী আয়োজনে মিলবে ৮৫০ টাকায়। রাতের ব্যুফে ৯৯৯ টাকার পরিবর্তে মিলবে ৮৯৯ টাকায়। এই আয়োজন ১৩ এপ্রিল থেকে চলবে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত।
ঠিকানা- সুলতান ম্যানসন, বেগম রোকেয়া সারণি, মিরপুর ১২।
পহেলা বৈশাখের জন্য পান্তা ও ইলিশের আয়োজন করেছে ঘুড়ি রুফটপ রেস্তোরাঁতে। সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত থাকবে বৈশাখী আয়োজন।
এছাড়া ফিউশন হিসেবে থাকবে আধুনিক খাবারের আয়োজনও। তবে খেতে ভাইলে আগেই বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। শান্তিনগরের এই রেস্তোরাঁয়।
বৈশাখে আধুনিক খাবারের আয়োজন
যারা আধুনিক খাবার পছন্দ করেন তাদের জন্য জো জো বিডি (xoxo Bd) রেস্তোরাঁটি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ফ্রাইড রাইস, চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস, চাইনিজ সবজি প্লাটারের ব্যবস্থা করেছে।
এছাড়াও থাকছে পিৎজা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস, চিকেন উইংস, সসেজ, মাসরুম মিক্স ও নুডুলসের প্লাটার। মিরপুর দুইয়ের ৬০ ফিটের রেস্তোরাঁটি পেয়ে যাবেন।
পরিবারভিত্তিক অফার: সবার জন্য একসঙ্গে আনন্দ
রিক্সা ক্যাফে নামের রেস্তোরাঁ পহেলা বৈশাখের সকাল থেকে আয়োজন শুরু করবে। সকাল ৯টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে এই রেস্তোরাঁতে বৈশাখের একবেলা কাটিয়ে দিতে পারবেন।
বাটা মসলায় বিভিন্ন বাঙালি খাবারের আয়োজন থাকবে এখানে। থাকবে পল্লী গানের ‘লাইভ অ্যাকুস্টিক’। গাছ ও সবুজে ঘেরা রেস্তোরাঁটি পূর্বাচলে অবস্থিত; ৩০০ ফিট, বসুন্ধারা আর/এ।
এদের প্লাটারে থাকবে ভাত, আস্ত রসুনের গরুর মাংস, ইলিশের নানান পদ, কয়েক পদের ভর্তা, বেগুন ভাজা ও বাঙালি নানান পদ। এই অন্দরসজ্জায় এনেছে বৈশাখী থিম। কাঁথা-শাড়ির টেবিল ম্যাট ও নকশা আঁকা পানির কলস দিয়ে সাজিয়েছে পুরো জায়গা।
পারিবারিক প্লাটারের খেতে চাইলে রয়েছে ‘রোডসাইড কিচেন’। মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বসুন্ধরা ও খিলগাঁওতে আছে রেস্তোরাঁটির শাখা। যেখানে থাকছে বালতি খাবার। বালতিতে দেওয়া হবে ভাত ও মুরগি।
খাবার যেমন বাঙালির সংস্কৃতির বড় অংশ, তেমনি উৎসবের দিনগুলোতে এই খাবারের আয়োজন হয়ে ওঠে আনন্দের সম্পূর্ণতা। পহেলা বৈশাখে রেস্তোরাঁগুলোতে গিয়ে খাওয়া মানে পরিবার আপনজন নিয়ে সংস্কৃতিক আনন্দযাত্রা।
তাই এবারের বৈশাখে পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে শহরের কোনো বৈশাখী আয়োজনে একবার ঢুঁ মেরে আসতেই পারেন!
ছবি: স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ফেইসবুক থেকে।