পর্যাপ্ত ঘুমের পাশাপাশি নিয়মিত সময়ে ঘুমানো এবং না উঠলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
Published : 02 Dec 2024, 05:34 PM
একেক দিন একেক সময় ঘুমানো আর একেক সময় ওঠার সাথে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এমনকি পর্যাপ্ত ঘুম হলেও এই ঝুঁকি থেকে যায়।
সম্প্রতি কানাডা’র ‘ইউনিভার্সিটি অফ অটোয়া’র গবেষকরা ৭২ হাজার ২৬৯ অংশগ্রহণকারীর ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেন।
৪০ থেকে ৭৯ বয়সি এই অংশগ্রহণকারীদের সাত দিন ধরে পর্যালোচনা করা হয়। তাদের কারও মধ্যে হৃদসংক্রান্ত কোনো সমস্যা ছিল না।
গবেষকরা প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর ‘স্লিপ রেগুলারিটি ইনডেস্ক (এসআরআই) স্কোর’ বা ঘুমের নিয়মানুবর্তিতার সূচক গণনা করেন। যার মান যত বেশি সে তত বেশি নিয়মিত ঘুমান বলে ধরে নেওয়া হয়।
এরপর অংশগ্রহণকারীদের আট বছর ধরে তাদের হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলুয়র এবং স্ট্রোক সংক্রান্ত ঘটনাগুলো অনুসরণ করা হয়।
দেখা গেছে, নিয়মিত সময়ে যারা ঘুমিয়েছেন তাদের তুলনায় যারা অনিমিত সময়ে ঘুমিয়েছেন তাদের ওপরের যে কোনো একটি সমস্যায় ভোগার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে ২৬ শতাংশ।
অনিমিয়ত ঘুমের ধরন বলতে গবেষণায় বোঝানো হয়েছে, একেক সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং একেক সময় ঘুম থেকে ওঠা।
২৬ শতাংশের মধ্যে আরও অন্যান্য বিষয় যুক্ত করা হয়েছিল। যেমন- বয়স, শারীরিক কর্মকাণ্ড, অ্যালকোহল সেবন এবং ধূমপান। আরও এগুলো অসুস্থ হওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
যেহেতু গবেষণাটি পর্যবেক্ষণমূলক, তাই কারণ নয় বরং অনিয়মিত ঘুমের সাথে অসুস্থ হওয়ার সম্পর্ক নির্ণয় এখানে গুরুত্ব পেয়েছে।
আগের অনেক গবেষণায় অপর্যাপ্ত ঘুমের সাথে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। তবে এই গবেষণায় দাবি করা হয়, পর্যাপ্ত অর্থাৎ দৈনিক সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম হলেও অনিমিয়ত সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ওঠার কারণে হৃদসংক্রান্ত সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে মানুষ।
এই বিষয়ে প্রধান গবেষক অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুরোগের অধ্যাপক জিন পিয়েরে শাপুট সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “পর্যাপ্ত ঘুমের চাইতেও অনিয়মিত ঘুমের ধরন হতে পারে মৃত্যুর ঝুঁকি আন্দাজ করার ক্ষেত্রে শক্তিশালী নিয়ামক।”
হৃদসংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ এবং উল্লেখিত ঝুঁকির ব্যাপারে গুরুত্ব দেন এই অধ্যাপক।
তিনি বলেন, “প্রত্যেকের অবশ্যই সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস গড়া জরুরি। কারণ অপর্যাপ্ত ঘুমের সাথে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে।”
আরও বলেন, “ঘড়ি ধরে নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিরাতে রাতে শোয়া আর প্রতি সকালে সময় মতো ঘুম থেকে উঠতে হবে বিষয়টা সেরকম না। দেহের ঘুম জাগরনের স্বাভাবিক চক্রের অনুযায়ী আধা থেকে এক ঘণ্টা এদিক সেদিক হতেই পারে।”
স্বল্প পরিমাণে ভিন্নতা হতেই পারে। মনে রাখতে হবে নিয়মিত ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস গড়লে ঘুমের মানও উন্নত হয়, মনমেজাজ ভালো থাকে মস্তিষ্ক ভালোমতো কাজ করে আর স্বাস্থ্য ও হৃদসংক্রান্ত অসুস্থতার ঝুঁকি কমে।
আরও পড়ুন