উচ্চ রক্তচাপের মতো নিম্ন রক্তচাপও শরীরের জন্য খারাপ।
Published : 11 Feb 2024, 04:30 PM
রক্তচাপ সাধারণ মাত্রার নিচে নেমে গেলে নিম্ন রক্তচাপ দেখা দেয়। যা নানান রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
রক্ত চাপ কমে যাওয়া বিপজ্জনক। এর ফলে হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ভারতের ইন্টারনাল মেডিসিন’য়ের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ডা. প্রভাব রঞ্জন সিনহা হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য সাধারণ রক্তচাপ ১২০/৮০ এমএম এইচজি।
নিম্ন রক্তচাপ বলতে ৯০/৬০ এমএম এইচজি বোঝানো হয়।
রক্তচাপ কম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেনশনের লক্ষণসমূহ
সাধারণত ৯ ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে
মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা
নিম্ন রক্তচাপের ফলে মাথা ঘোরানো বা হালকা মাথাব্যথা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে এরকম হয়।
মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে সাময়িকভাবে সংবেদনে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।
অজ্ঞান হওয়া
“গুরুতর ক্ষেত্রে নিম্ন রক্তচাপের ফলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি হয়। ফলে সাময়িকভাবে চেতনা হারিয়ে যেতে পারে” বলেন ডা. সিনহা
ঝাপসা দেখা
নিম্ন রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তিরা অনেক সময় ঝাপসা দৃষ্টি অনুভব করেন। বিশেষ করে শরীরের অবস্থানের হঠাৎ কোনো পরিবর্তন ঘটলে এমনটা হয়।
এই সময়ে চোখে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়া দৃষ্টিশক্তির ওপর সাময়িকভাবে প্রভাব ফেলে। ফলে বস্তুগুলো অস্পষ্ট বা মনোযোগের বাইরে চলে যায়।
দুর্বল ভাব
নিম্ন রক্তচাপ দেহের কোষ ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহে হ্রাস করে। ফলে ক্লান্তিভাব অনুভূত হয়। অনেকে এই সময়ে দুর্বলতা বা শারীরিকভাবে কম সক্রিয় অনুভব করেন।
বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরানো
নিম্ন রক্তচাপের ফলে অনেকের বমিভাব হতে পারে। বিশেষ করে যদি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা বা গরম তাপমাত্রায় অনেক সময় থাকা হয়।
ঠাণ্ডা ও খসখসে ত্বক
হাইপোটেনশন ত্বকের তাপমাত্রা ও ‘টেক্সচার’য়ে পরিবর্তন ঘটাতে পারে। যে কারণে ত্বক ঠাণ্ডা হয়ে যায়, ত্বকের রক্ত প্রবাহ হ্রাস পায়। ফলে তাপ বিতরণ কমে।
নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের উষ্ণ পরিবেশেও ঠাণ্ডা অনুভূত হতে পারে।
দ্রুত শ্বাস নেওয়া
রক্তচাপ শ্বাসযন্ত্রের কার্যক্রিয়ার ওপর প্রভাব রাখে। ফলে শ্বাসগতি দ্রুত হয়। অগভীর শ্বাস-প্রশ্বাস বা শ্বাসকষ্টেরও সমস্যা হতে পারে।
দেহে রক্ত প্রবাহ হ্রাস পাওয়ার ফলে হৃদস্পন্দন ও শ্বাসযন্ত্রের গতি বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে শারীরিক পরিশ্রমের সময়।
মনোযোগে অসুবিধা
নিম্ন রক্তচাপের ব্যক্তিদের মাঝে জ্ঞানীয় লক্ষণ যেমন- মনোযোগ দিতে অসুবিধা বা মানসিক স্বচ্ছতার দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ কমে গেলে জ্ঞানীয় ক্রিয়া প্রভাবিত হয়। ফলে মনোযোগ স্থির রাখা স্মৃতিশক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা হয় বলে জানান, ডা. সিনহা।
দুর্বল বা দ্রুত নাড়ীর স্পন্দন
হৃদ গতি ও ছন্দের পরিবর্তনও নিম্ন রক্তচাপের সাথে জড়িত। ফলে অনেকের নাড়ীর স্পন্দন দ্রুত বা দুর্বল হতে পারে।
এই লক্ষণগুলো প্রতি সচেতন হলে নিজের সমস্যা নিজে চিহ্নিত করা যাবে। আর বিশেষজ্ঞের প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করে সঠিক চিকিৎসায় ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন