নিউটন সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত তার 'মাথায় আপেল পড়ার' কাহিনি থেকে।
Published : 05 Aug 2023, 04:27 PM
দুনিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন (১৬৪৩-১৭২৭) ছিলেন কৃষকপুত্র। যুক্তরাজ্যের লিংকনশায়ারে জন্ম নেওয়া এ বিজ্ঞানী একাধারে পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং আলকেমিস্ট। তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন।
নিউটন সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত তার 'মাথায় আপেল পড়ার' কাহিনি থেকে। ১৬৪৩ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের সময় তার আকৃতি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় খুব ছোট। জন্মের তিনমাস পর তার বাবা আইজ্যাক নিউটন সিনিয়র মারা যান, বাবা ছিলেন একজন কৃষক।
পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর তিন বছরের মাথায় মাকেও হারান নিউটন। ১৬৪৫ সালে নিউটনের বয়স যখন দুই তখন তার মা হান্না আস্কিউ আরেকটি বিয়ে করেন। সৎ বাবা নিউটনকে রাখতে চাননি। তারপর নিউটন তার নানির সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। নিউটন ধীরে ধীরে তার প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। স্কুলজীবন থেকেই তিনি মেধার পরিচয় দিতে শুরু করেন। বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরিতে তার ঝোঁক ছিল। তাছাড়া স্কুলে তিনি ছিলেন মেধাবী ছাত্র।
১৬৫২ সালে নিউটনের সৎ বাবা মারা যান। এদিকে তার মা তার কাছে ফিরে আসেন। নিউটনের মা এসেই তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেন। নিউটনের মায়ের উদ্দেশ্য ছিল নিউটনকে কৃষক বানানো। তিনি চেয়েছিলেন নিউটনও তার বাবার মতো ক্ষেত খামারের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করুক। তখন নিউটনের বয়স মাত্র নয় বছর। কিন্তু নিউটনের মা ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন ছেলেকে কৃষিকাজ না করিয়ে পড়াশোনা করানো উচিত হবে। তাই নিউটন আবার স্কুলে ফিরে যান এবং পড়াশোনা চালিয়ে যান।
ধীরে ধীরে নিউটন গবেষণায় মনোনিবেশ করেন নিজেকে। বিজ্ঞানচর্চায় মনোযোগী নিউটন জীবনে বিয়ে করেননি। ছোট থেকে পরিবারের স্নেহবঞ্চিত হওয়ায় নিউটন একা থাকতে পছন্দ করতেন। ছোটবেলায় যাকে তার মা কৃষক বানাতে চেয়েছিলেন তাকে ছাড়া আজ বিজ্ঞান অসম্পূর্ণ।
মৃত্যুর আগে বিনয়ী নিউটন বলেছিলেন, “জানি না পৃথিবীর কাছে আমি কীভাবে উপস্থাপিত হয়েছি, কিন্তু আমার কাছে নিজেকে মনে হয় এক ছোট্ট বালক যে কেবল সাগরের তীরে একটি ছোট্ট নুড়ি নিয়ে খেলছে, অথচ সত্যের মহাসাগর তার সামনে পড়ে রয়েছে যা এখনও অনাবিষ্কৃতই রয়ে গেলো।”
তথ্যসূত্র: টোটালিহিস্ট্রি ডটকম