শীতে শিশুর ত্বকের যত্ন

শিশুর ত্বকের যত্নের ব্যাপারে মায়ের ভূমিকাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। মায়েরা যদি কিছু কিছু বিষয়ে সচেতন হোন, তবে অনেক চর্মরোগই প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর নিম্নলিখিত কয়েকটি বিষয় শিশুর বিভিন্ন চর্মরোগ প্রতিরোধে নিঃসন্দেহে সহায়ক:

>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2018, 04:57 AM
Updated : 5 Dec 2018, 04:57 AM

১. শিশুকে প্রতিদিনই গোসল করানো ভালো। তবে সাবান ও শ্যাম্পু প্রতিদিন ব্যবহার না করলেও চলে। পানি যেন অবশ্যই পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, গোসল শেষে নরম শুকনো সুতি কাপড় দিয়ে ভালোভাবে পানি মুছে ফেলতে হবে, যাতে কোনো স্থানে, বিশেষ করে শরীরের ভাঁজগুলোতে পানি লেগে না থাকে। কারণ, এথেকে ছত্রাকজাতীয় জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।

২. গরমের দিন যন্ত্রণাদায়ক ঘামাচি এবং শীতের দিন শুষ্কতার কারণে শিশুর ত্বক ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি। তাই গরমের দিন বেবি ট্যালকম পাউডার এবং শীতের দিন তেল বা লোশন জাতীয় জিনিস নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত।

৩. শিশু প্রস্রাব-পায়খানা করার পর যত শিগগিরই সম্ভব ভেজা ন্যাপকিন বদলে ফেলা উচিত। কারণ, দীর্ঘক্ষণ থাকলে ন্যাপকিন র‍্যাস বা ন্যাপকিন অ্যাকজিমা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

৪. শিশুর কাপড়-চোপড় সাবান দিয়ে ধোয়ার পর পরিষ্কার পানিতে বারবার চুবিয়ে সম্পূর্ণ সাবানমুক্ত করে শুকানো উচিত। কারণ, সাবানের ক্ষারযুক্ত শুকনো কড়কড়ে কাপড় শিশুর নরম ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।

৫. শিশুরা হাত-পা বেশি নাড়াচাড়া করে এবং হাত মুখে দেয়, তাই নখ কেটে ছোট রাখতে হবে, যাতে নিজের মুখে নিজে আঘাত না পায় এবং রোগজীবাণু নখের মাধ্যমে মুখে না যায়।

মডেল: শিশু সুহাইমা হোসেইন যুওয়াইনাহ ও তার মা তাসফিয়া তাহের ঋদ্ধি

 

৬. শিশুর ত্বকে অ্যান্টিসেপটিক ও কসমেটিকস-জাতীয় কোনো মলম যখন-তখন না লাগানোই ভালো। কারণ, এতে শিশুর নরম ত্বকে অনেক সময় এগুলো সহ্য হয় না এবং সমস্যা সৃষ্টি হয়।

৭. ত্বকে আঘাত পেতে পারে এরকম খেলনা বা ব্যবহার্য জিনিসপত্র সবসময় শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা উচিত।

৮. কাদামাটি, ধুলাবালি ও কড়ারোদ থেকে শিশুদের দূরে রাখুন।

৯. মশা-মাছি, পোকামাকড়, পিঁপড়া ইত্যাদি যেন শিশুকে কামড়াতে না পারে, সেদিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখুন। কারণ, এথেকে হঠাৎ মারাত্মক অ্যালার্জিক রিয়েকশন হতে পারে।

১০. বাড়িতে পোষাকুকুর-বিড়াল না রাখাই ভালো। কারণ, এদের শরীর থেকে বেশকিছু চর্মরোগের জীবাণু সংক্রমণ হয়ে থাকে। এটি শিশুকে সহজেই আক্রান্ত করতে পারে।

১১. একটি শিশুর পরিধেয় কাপড়-চোপড় অবশ্যই খসখসে বা অমসৃণ হওয়া উচিত নয়, হতে হবে নরম ও মসৃণ। কাপড়টি সুতির হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কারণ, ত্বকের জন্য সুতির কাপড়ই সবচেয়ে নিরাপদ। কাপড়টি বেশি আঁটসাঁট হওয়া উচিত নয়। কারণ, আলো-বাতাস প্রবেশ করতে না পারলে ঘাম আটকে থাকে এবং বিভিন্ন চর্মরোগ সৃষ্টি হয়। তাই পোশাক-পরিচ্ছদ যতটা সম্ভব ঢিলেঢালা হওয়াই ভালো। আর পোশাক-পরিচ্ছদ সবসময় শীত-গ্রীষ্মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

শেষকথা হলো, শিশুর ত্বকে কোনো সমস্যা দেখা দিলে কখনো অবহেলা করবেন না। কারণ, শিশুদের খুব ছোট্ট রোগও অনেক সময় অল্পতেই মারাত্মক আকার ধারণ করে। যেমন সাধারণ খুজলি-পাঁচড়া থেকেও কিডনি নষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু হতে পারে। মনে রাখবেন, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সুস্থ ত্বকই সুন্দর ত্বক।

শিশুটি কালো কি ফর্সা, এটি কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। কাজেই আপনার শিশুর সুস্থ-সুন্দর দেহ ও ত্বকের জন্য শিশুকে সঠিকভাবে পরিচর্যা করুন, শিশুকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।

এই লেখাটির সর্বস্বত্ব টগুমগু কর্তৃক সংরক্ষিত। টগুমগু প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রেগন্যান্সি ও প্যারেন্টিং বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছে। টগুমগুর নিজস্ব প্যারেন্টিং ব্লগ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনুমতি না নিয়ে লেখাটি অন্য কোথাও প্রকাশ অথবা বাণিজ্যিক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!