পিংকির দিকে তাকিয়ে লোকটি মৃদু হেসে বলেন, “আমি জীবনানন্দ দাশ”।
Published : 15 Feb 2025, 11:49 PM
পিংকি বরিশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। চঞ্চল মেয়ে, সারাদিন ছুটোছুটি, খেলাধুলায় মেতে থাকে।
কিন্তু একদিন ফুটবল খেলতে গিয়ে পা ভেঙে যায় তার। বাধ্য হয়ে থাকতে হয় ঘরে, একা। মা অফিসে, ভাই স্কুলে— সময় যেন কাটতেই চায় না। জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে পিংকি, মন খারাপ করে।
ঠিক তখনই ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা। দুপুরের নিস্তব্ধতার মধ্যে দরজায় কড়া নাড়ে এক আগন্তুক। বয়স মাঝারি, পরনে ধুতি-পাঞ্জাবি, পায়ে পুরোনো জুতো। কপালে গভীর ভাঁজ, চোখ দুটো যেন কুয়াশার মতো স্বপ্নিল।
পিংকির দিকে তাকিয়ে লোকটি মৃদু হেসে বলেন, আমি জীবনানন্দ দাশ। পিংকির অবাক চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এক কবি! লোকটি জানালেন, তিনি মাহীন নামে একজনকে খুঁজতে এসেছেন।
মাহীন কে? লোকটি যেন শুনতেই পান না। বরং উলটো প্রশ্ন করেন, তোমার নাম কী? উত্তর এল, ‘পিংকি’। লোকটির চোখ মুহূর্তেই এক অদ্ভুত দ্যুতিতে জ্বলে ওঠে। তিনি বলেন, তোমার মতো দেখতে একটা মেয়ে ছিল। ওর নাম মঞ্জু।
পিংকির কেমন যেন শিহরন জাগে! এই লোক কি তাকে অন্য কারো ছায়া ভেবে বসেছেন? কিন্তু এই নাম, এই চেহারা... কিছু যেন কোথাও মিলে যাচ্ছে!
পিংকি হঠাৎই মনে করতে পারে, তার বড় ভাইয়ের বাংলা বইয়ে এই লোকটির ছবি দেখেছে! কিন্তু তা কি সম্ভব? কবি জীবনানন্দ দাশ তো বহুদিন আগে মারা গেছেন! তাহলে?
পিংকির মা সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলে সে উত্তেজিত গলায় বলে ওঠে, মা, জীবনানন্দ কাকু এসেছিল! মা প্রথমে অবাক হন, তারপর একটু বিরক্ত গলায় বলেন, কোন জীবনানন্দ? পুবপাড়ার রমেশ দারোগার ছেলে? না মা, কবি জীবনানন্দ দাশ।
মায়ের মুখ একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে যায়। ঠোঁট কাঁপে, চোখে ভেসে ওঠে বিস্ময়ের ছায়া। এই নামে তো তাদের পরিচিত কেউ নেই! তাছাড়া, যদি সত্যিই তিনি জীবনানন্দ দাশ হন, তাহলে… তাহলে তো তিনি বহু বছর আগেই…
ঘরের বাতাস হিম হয়ে আসে। জানালার বাইরে অন্ধকার গাঢ় হতে থাকে। পিংকির বুকের ভেতর শিহরন খেলে যায়। তাহলে কি সে এক অতিপ্রাকৃত ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল?
এই রহস্যময়তার জট খুলবে ‘পিংকি ও জীবনানন্দ কাকু’ গল্পে। কিশোর পাঠকদের জন্য এক অনন্য মায়াময়, রহস্যময় আর রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছেন লেখক মাসউদ আহমাদ।
রাজীব দত্তের চিত্রে প্রচ্ছদ করেছেন আজহার ফরহাদ। বইটি প্রকাশ করেছে কিন্ডারবুকস, পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলায়, স্টল ৯০৮-৯০৯-এ, মূল্য ২৬০ টাকা।