শেষ বিকেলের সূর্যটা পশ্চিমে হেলে পড়লে আমরা বাড়ির পথ ধরলাম।
Published : 27 Apr 2025, 09:36 PM
আমি ঘুরতে পছন্দ করি। তাই পড়ালেখার ফাঁকে সময় পেলেই কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাই। এবারের গন্তব্য বাড়ি থেকে খুব দূরে না হলেও জায়গাটি ছিল বেশ দারুণ। বলছি আমার জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ির কথা।
ভ্রমণের সপ্তাহ খানেক আগে সেখানে যাওয়ার রাস্তা সম্পর্কে বাবার থেকে জেনে নিই। বাবা ম্যাপ এঁকে সেখানে যাওয়ার পথ বুঝিয়ে দিলেন। আর ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে পেলাম আমার মামাতো ভাই রিফাতকে।
আমাদের ঘুরতে যাওয়ার দিনটি ছিল এপ্রিলের ১৮ তারিখ। আমি আগের রাতেই ক্যামেরার ব্যাটারি চার্জ দিয়ে রেখেছিলাম। কারণ আমি কোথাও ঘুরতে গেলে ছবি তুলতে পছন্দ করি।
সকাল ৯টার দিকে আমরা অটোরিকশায় চড়ে রওনা দিলাম। ঘণ্টা দুই পর গন্তব্যে পৌঁছালাম।
প্রথমেই জমিদার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললাম। এক কোণে ছিল একটি কুয়া। এই কুয়ার পানি একসময় জমিদার বাড়ির খাবার ও গোসলের কাজে ব্যবহৃত হতো বলে স্থানীয়রা জানালেন।
তারপর ধীরে ধীরে গেট পেরিয়ে ভিতরে যেতেই চোখে পড়লো জীর্ণশীর্ণ দেয়াল। মনে হচ্ছিল কেউ ইচ্ছে করে দেয়ালগুলোর এই হাল করেছে। পরে এক বৃদ্ধ দাদুর কাছ থেকে জানলাম অযত্ন, অবহেলা আর মানুষের অসচেতনতায় ধীরে ধীরে বাড়িটা নষ্ট হয়ে গেছে।
জমিদার বাড়ির দেবী মন্দিরটা ঘুরে দেখে পাশের দেয়াল ঘেরা জায়গাটা লক্ষ্য করলাম। সেখানে এখন কিছু মানুষ বসবাস করছে। তাদের একজন বললেন, জমিদারের কেউ নেই তাই তারা থাকছেন। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা এই স্থাপনাকে এমন অযত্নে পরে থাকতে দেখে খুবই অবাক হলাম, কষ্টও পেলাম।
শেষ বিকেলের সূর্যটা পশ্চিমে হেলে পড়লে আমরা বাড়ির পথ ধরলাম। ফিরে এসে ভাবছিলাম,নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়িটি কেবল একটি পুরোনো বাড়ি নয়,এটি আমাদের ইতিহাসের অংশ। এর সংরক্ষণ করা আমাদের সবার দায়িত্ব। সরকারেরও উচিত এই স্থাপনাটিকে রক্ষা করা।
প্রতিবেদকের বয়স: ১২। জেলা: কুড়িগ্রাম।