Published : 30 Apr 2025, 09:45 PM
অতিরিক্ত শব্দ কেবল কানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না এটি আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। উচ্চশব্দে আমাদের অনিদ্রা, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। কিন্তু আমরা শব্দদূষণ নিয়ে মোটেও সচেতন নই।
হরহামেশা মাইক বাজিয়ে, আতশবাজি ফুটিয়ে, উচ্চ শব্দে গান বাজনা করে আমরা নানা অনুষ্ঠান করি। এছাড়া রাস্তায় অযথা উচ্চশব্দে হর্ণ বাজানো তো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। উচ্চশব্দের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আমরা কেউ যেন ভাবিই না।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি)’র ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শব্দ দূষণে বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে।
‘ফ্রন্টিয়ারস ২০২২: নয়েজ, ব্লেজেস অ্যান্ড মিসম্যাচেস’ শীর্ষক সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় শব্দের সর্বোচ্চ তীব্রতা ১১৯ ডেসিবেল—যা বিশ্বের ৬১টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে ২০০৬ সালে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা তৈরি করে। সেখানে এলাকা অনুযায়ী শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাসিক এলাকায় দিনের বেলায় ৫৫ ডেসিবেল এবং রাতের বেলায় ৪৫ ডেসিবেল ধরা হয়েছে।
বিধিমালায় বলা আছে, বিশেষ প্রয়োজনে অনুমতি নিয়ে সামাজিক অনুষ্ঠান করা যাবে তবে দিনে সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা এবং রাত ১০টার পর কোনো উচ্চশব্দ ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া কেউ এই আইন অমান্য করলে প্রথমবার এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডই হতে পারে।
শব্দদূষণ রোধে প্রতি বছর এপ্রিলের শেষ বুধবার বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস পালিত হয়। এদিন বিশ্বজুড়ে মানুষকে শব্দদূষণের ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়।
শ্রবণস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘সেন্টার ফর হিয়ারিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন’ (সিএইসি) নামের একটি সংস্থা ১৯৯৬ সালে প্রথম দিবসটি পালন শুরু করে। সংস্থাটি ১৯১০ সাল থেকে নিরাপদ শ্রবণ ও শ্রবণস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে।
বাংলাদেশেও প্রতি বছর আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস পালিত হয়। ‘আর নয় শব্দদূষণ, চাই সুস্থ জীবন’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে ৩০ শে এপ্রিল জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে মানববন্ধন করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ময়মনসিংহ।