“ব্যাপারটি আইনি কাঠামোর মধ্যে চলে গেছে, সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- হচ্ছেও তাই,” বলেন মন্ত্রী।
Published : 18 Jun 2023, 06:33 PM
কুমিল্লা থেকে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে এসে নবজাতক হারানোর পর মা মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার বিকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ধরনের মৃত্যু অপ্রত্যাশিত। আমাদের আশা থাকে বেসরকারি হাসপাতালে মানসম্মত সেবা দেবে। এ ধরনের অবহেলাজনিত মৃত্যু দুঃখজনক।”
অস্ত্রোপচার ছাড়া সন্তান জন্ম দিতে নিজের ইচ্ছের কথা স্বামীকে জানিয়েছিলেন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মাহবুবা রহমান আঁখি। সেজন্য গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রসবব্যথা উঠলে গত ৯ জুন মধ্যরাতে কুমিল্লা থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে আঁখিকে নিয়ে আসেন তার পরিবার।
আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলীর ভাষ্য, প্রসূতিকে ভর্তির সময় ডা. সংযুক্তা হাসপাতালেই আছেন বলা হলেও আসলে তিনি ছিলেন না। সেই রাতে ওই চিকিৎসকের সহকারীরা প্রথমে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। সে সময় জটিলতা তৈরি হলে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুটি ওইদিনই মারা যায়।
সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আঁখিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুর আড়াইটার কিছু আগে তার মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আঁখির ঘটনা তিনি শনিবার জেনেছেন। এ বিষয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
যদিও এর আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, “ওই হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটা টিমও পাঠানো হয়েছিল। কোথায় অপারেশন হয়েছিল, তাদের আইসিইউ ছিল না কি না- সেটাও তারা দেখেছে। তারা দেখেছেন আইসিইউ নাই তাদের। যে কারণে সমস্ত অপারেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
“তাদের বলা হয়েছে, অপারেশন করতে হলে প্রয়োজনীয় যা লাগে, যে প্রটোকল তা মেনে কাজ করতে হবে। এই মুহূর্তে হাসপাতালে অপারেশন বন্ধ থাকবে- এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেটি এখনও বহাল আছে।”
ওই হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহা ওই হাসপাতালে আপাতত কোনো বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে পারবেন না বলেও নির্দেশনা এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে বুধবার ধানমণ্ডি থানায় মামলাও করেছেন ইয়াকুব। সেই মামলায় ডা. সংযুক্তা সাহার দুই সহযোগী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা গ্রেপ্তার করে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ। পরে তাদের কারাগারে পাঠায় আদালত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ব্যাপারটি আইনি কাঠামোর মধ্যে চলে গেছে, সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- হচ্ছেও তাই। যারা ওখানে ওই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা জেলহাজতে আছে।”
পুরনো খবর:
সেন্ট্রাল হাসপাতালে সন্তান হারানো আঁখিও চলে গেলেন
সেন্ট্রাল হাসপাতালে সব অস্ত্রোপচার বন্ধ
‘ভালো’ চিকিৎসা নিতে এসে হারালেন সন্তান, নিজেও সিসিইউতে