পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৫ লাখ শিশু এই সেবা থেকে উপকৃত হবে বলে আশা করছে বিশ্ব ব্যাংক।
Published : 31 Aug 2023, 12:48 PM
বাংলাদেশে শহর এলাকায় ডেঙ্গুর মত মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণসহ নাগরিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক।
বুধবার বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড সভায় এই ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
‘আরবান হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন’ শীর্ষ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং সাভার ও তারাবো পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গুসহ সাধারণ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও চিকৎসা এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যয় করা হবে ওই অর্থ।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে যার আওতায় স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা দেওয়া হবে।
পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৫ লাখ শিশু এই সেবা থেকে উপকৃত হবে বলে আশা করছে বিশ্ব ব্যাংক।
বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এক বিবৃতিতে বলেন, “গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু শহর এলাকায় নাগরিক স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ এখনও সীমিত। ফলে দরিদ্র এবং বস্তিবাসীদেরও বাধ্য হয়ে ব্যয়বহুল বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে হয়।
“তাছাড়া জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্রুত নগরায়ণের কারণে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ বাড়ছে, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা খাতে।”
ডেঙ্গু প্রতিরোধে আসছে ‘সমন্বিত উদ্যোগ’
এই প্রকল্পের আওতায় নারীদের মাতৃত্বকালীন সেবাও দেওয়া হবে। আড়াই লাখ নারী তাদের গর্ভকালীন সময়ে অন্তত চারটি চেকআপের সুযোগ পাবেন।
এছাড়া ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক উচ্চ রক্তচাপের স্ক্রিনিং এবং ফলো-আপ চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। সরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেব কেন্দ্র ও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে দরিদ্র নাগরিকদের সেবাপ্রাপ্তির খরচ কমিয়ে আনতেও সহায়ক হবে এই প্রকল্প।
মশা নিয়ন্ত্রণ, আবহাওয়াজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা, মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি দূষণ রোধ করে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালানোর বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হবে এই প্রকল্পে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এ প্রকল্পের আওতায় মৌসুমভিত্তিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে কাজ করা হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে ওই ২০ কোটি ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরের মধ্যে ওই ঋণ শোধ করতে হবে।
গত অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশকে সব মিলিয়ে চার হাজার কোটি ডলারের মত দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামো নির্মাণসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে এই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।