চিকিৎসক হিসেবে পেশাগত কাজের জন্য বিএমডিসি থেকে সনদ নিতে হয়, সময়ে সময়ে তা নবায়নও করতে হয়। ডা. সংযুক্তা সাহা নিবন্ধন নিয়েই কর্মজীবন শুরু করেছিলেন, তবে তা নবায়ন করেননি গত ১৩ বছরে।
কাজের ব্যস্ততায় সময় করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎক; এটা যে ভুল হয়েছে, তাও স্বীকার করছেন তিনি।
শনিবার ঢাকার পরীবাগে নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল-বিএমডিসির সনদ নবায়ন না করার ভুল স্বীকার করেন ডা. সংযুক্তা সাহা। সেই সঙ্গে সেন্ট্রাল হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও কথা বলেন।
ডা. সংযুক্তা বলেন, “আমার নিবন্ধন নেই, বিষয়টি কিন্তু এমন না। নিবন্ধন আছে, তবে সেটি রিনিউ করা হয়নি।
“বিএমডিসিতে রিনিউয়ের একটা ফি দিতে হয়, এটা গত বছর থেকেই অনলাইন সিস্টেম ছিল, এটা আমি জানতাম না। আমার আগেই নিবন্ধন নেওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু আমি এত ব্যস্ত থাকি যে অনেক সময় বাসায় আসার সময়ও পাইনি। এটা করতেও সময় পাইনি, আমার ভুল হয়েছে।”
স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসবের জন্য গত ৯ জুন রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে আসেন কুমিল্লার গৃহবধু মাহবুবা রহমান আঁখি। তিনি সংযুক্তা সাহার অধীনে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসবের জন্য এসেছিলেন।
সংযুক্তা সাহা বিদেশে থাকার মধ্যে তার সহযোগী চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেদিন আঁখির সন্তান প্রসব করায়। পরদিন নবজাতকটি মারা যায়। ১৮ জুন মারা যান আঁখিও।
এ ঘটনার পর থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতাল এবং সংযুক্তা সাহা পরস্পরকে দায়ী করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে সংযুক্তা সাহাকে আইনি নোটিসও দিয়েছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল।
এরমধ্যে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলন করে সেন্ট্রাল হাসপাতালকে দায়ী করে বক্তব্য দেন ডা. সংযুক্তা। এরপর সেন্ট্রাল হাসপাতাল তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে, বক্তব্য প্রত্যাহার করতেও বলে।
এখন পদক্ষেপ কী হবে- জানতে চাইলে সংযুক্তা সাহা বলেন, “বক্তব্য প্রত্যাহার করব কি না, বিষয়টি নিয়ে আমি একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছি। বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলবেন।”
এই ঘটনার পর ফেইসবুকসহ সোশাল মিডিয়ায় চিকিৎসকদের আত্ম প্রচার নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে সংযুক্তা সাহা বলেন, ফেইসবুক লাইভ করা অনৈতিক হলে তিনি তা আর করবেন না।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসকদের এ ধরনের প্রচার চালানো যে যায় না, তা তিনি জানতেন না।
“যদি সরকার মনে করে যে এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে, এটা অন্যায় করা হচ্ছে, তাহলে এটা নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে। এতদিন এটা নিয়ে আমাকে কেউ নোটিফাই করেনি। আজ এটা আমি জানলাম, এখন হয়ত আর এটা করা হবে না।”
“যদি মনে করে এটা হিতে বিপরীত হচ্ছে, জনগণের উপকার না করে অপকার করছে, তাহলে অবশ্যই এটা আমি বন্ধ করে দেব। আমরা একটা ভালো কাজের জন্য এগিয়েছি, যদি সেটা ১০টা খারাপ কাজ করে, তাহলে তো সেটা চালানো যাবে না,” বলেন এই চিকিৎসক।