Published : 10 Oct 2024, 09:44 PM
অসচেতনতা, জ্ঞানের অভাব আর আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে দেশের অনেকেই স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জানিয়ে ঢাকায় এক সেমিনারে বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তারা বলছেন, অনেকেই আংশিক চিকিৎসার পর চিকিৎসায় বিরতি দেন কিংবা বাদ রাখতে বাধ্য হন। ফলে ক্যান্সার আরও বিপজ্জনকভাবে ফিরে আসতে পারে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
বিশ্ব স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস উলপক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সেমিনার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম’।
সেখানে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যান্সার হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, “দিবসটি পালন হচ্ছে স্তন ক্যান্সার দ্রুত নির্ণয় ও পরিপূর্ণ চিকিৎসার গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দিয়ে। অনেক রোগীর ক্যান্সার নির্ণয় হওয়ার পরও অসচেতনতা, অজ্ঞতা ও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে চিকিৎসা নিতে পারেন না।
“অনেকেই আংশিক চিকিৎসার পর চিকিৎসায় বিরতি দেন বা দিতে বাধ্য হন। এতে ক্যান্সার আরও বিপজ্জনক হতে পারে। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ছাড়াও চিকিৎসা সুবিধা ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিকভাবে সবার নাগালের মধ্যে আনা জরুরি। এজন্য আগামী এক বছর ফোরাম এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করে যাবে।”
‘বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের’ প্রধান সমন্বয়কারী ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন, দারিদ্র্য স্তন ক্যান্সার রোগীদের অনেকে অর্থের অভাবে অপারেশন করাতে পারছেন না। পাঁচ হাজার টাকা খরচে এমন একশ রোগীকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে দক্ষ ক্যান্সার সার্জন দিয়ে অপারেশন করানোর উদ্যোগ নিয়েছে ফোরাম।
সেমিনারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, “ক্যান্সারের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। আমরা দেখছি কিছু করা যায় কিনা।
“একইসঙ্গে ক্যান্সারের সকল ওষুধ ট্যাক্স ফ্রি করার কথাও ভেবে দেখার সময় এসেছে। আশা করছি, আগামী বাজেটের আগেই এ ব্যপারে আমরা কিছু করতে পারব।”
আন্তর্জাতিক সংগঠন আইএআরসির গ্লোবক্যান ২০২২ এর হিসাবে, প্রতি বছর বাংলাদেশে ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রায় ৬ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। নারীদের মধ্যে এই ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি।
স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবসে প্রেস ক্লাব এলাকায় শোভাযাত্রা ও লিফলেট বিতরণও করেন ফোরামের কর্মীরা।
জনস্বাস্থ্য ও প্রজননস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আখতার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল, ফোরামের সমন্বয়কারী ও সিওসি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মোছাররত সৌরভ, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, সাবেক অতিরিক্ত সচিব আব্দুল হাকিম মজুমদার, সাংবাদিক শাহনাজ পলি, নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাশহুদা শেফালী, সিওসি ট্রাস্টের সম্পাদক ও ট্রাস্টি ইকবাল মাহমুদ আলোচনায় অংশ নেন।