হৃদরোগ ইনস্টিউট কর্তৃপক্ষ বলছে, রোবোটিক করোনারি এনজিওপ্লাস্টি বাংলাদেশে এই প্রথম; রোগীদের অবস্থাও আগের চেয়ে ভালো।
Published : 24 Jan 2024, 04:11 PM
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রথমবারের মত রোবটের সাহায্যে দুই রোগীর হৃদযন্ত্রের ধমনীতে রিং বা স্টেন্ট পরানো হয়েছে।
ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক প্রদীপ কুমার কর্মকারের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক রোববার এই স্টেন্ট পরান বলে পরিচালক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম মিলন জানান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোবোটিক করোনারি এনজিওপ্লাস্টি বাংলাদেশে এটাই প্রথম। রোগীদের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।
ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ কুমার বলেন, “রোবটের দুটি অংশ। একটি অংশে রোবটের একটি হাত যা ক্যাথল্যাবে থাকে। আরেকটি অংশ কন্ট্রোল সেকশন, যেখান থেকে কার্ডিওলজিস্ট রিং পরানোর কাজটি দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন।
“হৃদরোগ চিকিৎসকরা এখনো ক্যাথল্যাবে নিজেরা রোগীর কাছ থেকে রোগীদের হার্টের রিং পরান। আর রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি হল সর্বশেষ উদ্ভাবন; এর মাধ্যমে চিকিৎসকরা দূর থেকে নিখুঁতভাবে হৃদরোগীদের হার্টের ধমনীতে রিং পরাতে পারেন।”
এই চিকিৎসক বলেন, “অনেক সময় হার্টের রিং নিখুঁতভাবে বসানোর জন্য এক মিলিমিটার সামনে অথবা এক মিলিমিটার পিছনে নেওয়ার প্রয়োজন হয়। হাত দিয়ে করলে এই কাজটি কঠিন হয়, কিন্তু রোবটের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে করা যায়। এনজিওপ্লাস্টির সময় হার্টের ভেতরে ক্যাথেটার, তার, বেলুন, রিং রাখতে হয়। এটা যত কম রাখা যায় তত ভালো। রোবটের মাধ্যমে এনজিওপ্লাস্টি করতে সময় কম লাগে। এছাড়া এই পদ্ধতি চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে।”
যে দুজনের এনজিওপ্লাস্টি হয়েছে তাদের একজন মোরশেদুল আলম (৫৪)। সৌদি প্রবাসী মোরশেদুলের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায়। আরেকজনের নাম আজম আলী, বয়স ৬৫ বছর। বুধবারই তাদের হাসপাতাল ছাড়ার কথা রয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মোরশেদুল বলেন, সৌদি থাকার সময় হার্টে দুটি ব্লক ধরা পড়লে ওপেন হার্ট সার্জারি করাতে বলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তিনি দেশে ফিরে হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি হন।
“ওইখানে ডাক্তাররা বলেছিল, একটা ৮০ ভাগ আরেকটা ৯০ ভাগ ব্লক হইছে। ওপেন হার্ট সার্জারি করতে হবে। কিন্তু দেশে ফিরে এই হাসপাতালে আসি। তারা সব দেখে বলছেন রিং পরালেই হবে। রোবটের মাধ্যমে রিং পরাইছে। এখন ভালো আছি।”
হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অবকাঠামো রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টির জন্য উপযোগী কিনা, তা দেখতে ফ্রান্স থেকে এই যন্ত্রটি আনার কথা জানান প্রদীপ কুমার।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এক মাস পর যন্ত্রটি ফেরত যাবে। এনজিওপ্লাস্টির প্রক্রিয়াটি সফল হলে হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোবটিক সিস্টেমটি কেনার জন্য সরকারকে অনুরোধ করবে।”
জানতে চাইলে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক কামরুল ইসলাম মিলন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফ্রান্স থেকে চিকিৎসকদের একটি দল এসেছেন ওই যন্ত্রটি নিয়ে। তারা পরীক্ষামূলকভাবে রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি করেছেন। এ ধরনের এনজিওপ্লাস্টি বাংলাদেশে এই প্রথম।
“আমাদের রোগীর ওপর পদ্ধতিটি প্রয়োগ করে তারা দেখেছেন। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি যদি ব্যবহার করা যায় তাহলে রোগীরা উপকৃত হবে।”