সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতির মধ্যেই আদালতের এ সিদ্ধান্ত এল।
Published : 12 Mar 2025, 01:41 PM
ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে দুটি রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেয়।
রায়ে আদালত বলেছে, এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া আজ পর্যন্ত যারা ডাক্তার পদবি ব্যবহার করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে বৃহস্পতিবার থেকে আইন ভঙ্গ করে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না– এই নিয়মসহ পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতির মধ্যেই আদালতের এ সিদ্ধান্ত এল।
মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন, যাদের একটি দাবি হল তাদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ লেখার বৈধতা দেওয়া। এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসকরা সেটি মানতে রাজি নন।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন হয়। ‘ডিএমএফ’ (ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি) ডিগ্রিধারীদের (ডিপ্লোমাধারী হিসেবে নিবন্ধিত) ক্ষেত্রে আইনটির ‘বৈষম্যমূলক প্রয়োগের’ অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন আহ্বায়ক শামসুল হুদাসহ অন্যরা ২০১৩ সালে একটি আবেদন রিট করেন।
ওই আইনের ২৯ ধারার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিশনের সভাপতি ও সেক্রেটারি গত বছর অপর রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালের ১১ মার্চ হাই কোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়। দ্বিতীয় রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৫ নভেম্বর হাই কোর্ট রুল দেয়।
রুলে ‘বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০’ এর ২৯ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এ দুটি রিটের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের এই বেঞ্চ রায়ের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করে।
এই রায়কে কেন্দ্র করে পাঁচ দফা দাবিতে বুধবার সকাল থেকে সব সরকারি হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোর সেবা বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা। তবে হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু রাখা হয়েছে।
রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম সাইফুল করিম শুনানি করেন। মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কাজী এরশাদুল আলম।
রায়ের পর সাদ্দাম হোসেন বলেন, “আদালত রায়ে বলেছে, এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে এ পর্যন্ত যারা এ পদবি ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আদালত আরও বলেছেন, এরপর ব্যবহার করলে শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারবে।”