একদিন পিছিয়ে শনিবার রাত ৮টার সংবাদের পর প্রচারিত হবে জনপ্রিয় এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি।
Published : 29 Jul 2023, 01:08 AM
জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ দেখার জন্য এখনও সময় ধরে টেলিভিশনের সামনে বসে থাকেন অনেক দর্শক। গেল রোজার ঈদেও ইউটিউব ট্রেন্ডে শীর্ষ তালিকায় ছিল ইত্যাদি।
এবারও নতুন পর্ব নির্মিত হয়েছে অনুষ্ঠানটির। শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) প্রচার হওয়ার কথা ছিল। অনেক দর্শক অপেক্ষায়ও ছিলেন। কিন্তু রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হয়নি।
কেন প্রচার হয়নি? তার ব্যাখ্যা স্পষ্ট করেননি ‘ইত্যাদির নির্মাতা হানিফ সংকেতও। তবে তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবারের পরিবর্তে শনিবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হবে। সেজন্য দুঃখপ্রকাশও করেছেন।
হানিফ সংকেত বলেন, “অনিবার্য কারণে শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচার নির্ধারিত ইত্যাদির মুন্সীগঞ্জ পর্বটি প্রচার করা হয়নি। আমরা জানি মুন্সীগঞ্জের দর্শকদের মত দেশ-বিদেশের অসংখ্য দর্শক ইত্যাদি দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন। কারণ এই প্রচার সময়টি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রোমো, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনসহ আমাদের বিভিন্ন ফ্যান পেইজ থেকেও উল্লেখ করা হয়েছিল।”
ইত্যাদির প্রচারের সূচি নির্ধারণের দায় বিটিভির, তেমন ইঙ্গিত দিয়ে হানিফ সংকেত বলেন, “আপনারা নির্দিষ্ট সময়ে ইত্যাদি দেখতে না পারায় আমরাও আন্তরিকভাবে দুঃখিত। যেহেতু ইত্যাদি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয় তাই প্রচার সময়সূচি পরিবর্তনের ব্যাপারে ফাগুন অডিও ভিশনের কিছুই করার থাকে না। কর্তৃপক্ষই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
“বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে শনিবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর অনুষ্ঠানটি একযোগে প্রচারিত হবে।”
তিন দশকের নিয়মিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি' এবার ধারণ করা হয়েছে মুন্সীগঞ্জে; যাতে দেখা যাবে ওই জেলার সন্তান ফেরদৌস ওয়াহিদ, তাহসান ও বালামকে।
বরাবরের মতো হানিফ সংকেতের রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি নির্মাণ করার কথা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ফাগুন অডিও ভিশন।
এবারের পর্বের মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে ইছামতি নদীর তীরে প্রত্ননিদর্শন ইদ্রাকপুর কেল্লার সামনে, পুকুরের মাঝখানে। কেল্লার আদলে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান মঞ্চ। গত ১৪ জুলাই ধারণ করা অনুষ্ঠানটির মঞ্চ দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছিল কেল্লার সামনে আর একটি ভাসমান কেল্লা।
ফাগুন অডিও ভিশন জানিয়েছে, এবারের অনুষ্ঠানে একটি নতুন গান পরিবেশন করেছেন মুন্সীগঞ্জের সন্তান শিল্পী তাহসান। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল; সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন সাজিদ সরকার।
এছাড়া আবদুল আলীমের গাওয়া একটি গান নতুন সংগীতায়োজনে গেয়েছেন সৈকত শিশু- জাহিদ, বাদশা ও শাহজাহান। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন আকাশ মাহমুদ।
ইত্যাদি অনুষ্ঠানটি যেখানে ধারণ করা হয় সেই জেলার একটি পরিচিতি পর্ব থাকে। আর এই পর্বেও মুন্সীগঞ্জের পরিচিতমূলক গানের সঙ্গে স্থানীয় শতাধিক নৃত্যশিল্পীর নাচ দেখানো হবে। পদ্মাপাড়ে ধারণ করা গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল, সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদি। কণ্ঠ দিয়েছে পুলক ও তানজিনা রুমা। নৃত্য পরিচালনা করেছেন মনিরুল ইসলাম মুকুল।
দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী, ধারণস্থান মুন্সীগঞ্জকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে চারজন দর্শক নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচিত দর্শকদের সঙ্গে একটি পর্বে অংশ নেন নন্দিত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ এবং বর্তমান প্রজন্মের শিল্পী বালাম; যাদের বাড়িও মুন্সীগঞ্জে।
নির্বাচিত দর্শক ও আমন্ত্রিত শিল্পীরা গেয়েছেন ফেরদৌস ওয়াহিদের একটি জনপ্রিয় গান; ফেরদৌস ওয়াহিদের প্রয়াত চার বন্ধু আজম খান, ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর ও পিলু মমতাজের একটি করে জনপ্রিয় গানের অংশবিশেষও গাইবেন তারা।
এবারের অনুষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে সবার সচেতনতা বাড়াতে একটি ছোট্ট নাটিকা প্রচার করা হবে। এতে অভিনয় করেছেন মীর সাব্বির, শাহেদ আলী ও শামীম আহমেদ।
রয়েছে মুন্সীগঞ্জের ঐতিহ্যে পরিণত হওয়া টিনের ঘর নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। তুলে ধরা হয়েছে বরগুনার তালতলী উপজেলার একটি গ্রামের চার বোনের জীবনচিত্র।
অনুষ্ঠানে মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে যাদু দেখাবেন প্রবাসী যাদুশিল্পী ফারহানুল ইসলাম, যিনি ব্রাউন ম্যাজিক নামে পরিচিত। কানাডা প্রবাসী এ শিক্ষক দেশের কোনও টেলিভিশন পর্দায় এই প্রথম যাদু দেখাবেন।
মুন্সীগঞ্জ মঞ্চে যথারীতি সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে রয়েছে নানি-নাতির কথার মাতামাতি। নিয়মিত অন্যান্য পর্বসহ রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে নাট্যাংশ।
টেলিভিশনে ‘বিকৃত উচ্চারণ’ এবং ‘ভাষা ব্যঙ্গ’, ভিউ দিয়ে শিল্পীর মান বিচার, সততার শিক্ষা, অনলাইন যেখানে অফলাইন, তৈল বনাম ভাগ্যগুণ, কৃষকের কথা, অপ্রিয় সত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।
এবারের ইত্যাদিতে অংশ নেওয়া অন্য শিল্পীদের মধ্যে আরও আছেন- সোলায়মান খোকা, জিয়াউল হাসান কিসলু, মাসুম বাশার, সুভাশিষ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান, শবনম পারভীন, মিলি বাশার, আমিন আজাদ, কামাল বায়েজিদ, বিণয় ভদ্র, ইকবাল হোসেন, নিপু, বিলু বড়ুয়া, সুজাত শিমুল, মুকিত জাকারিয়া, তারিক স্বপন, আনোয়ার শাহী, সাবরিনা নিসা, নজরুল ইসলাম, সুবর্ণা মজুমদার, জামিল হোসেন, আবু হেনা রনি, আনোয়ারুল আলম সজল, সাজ্জাদ সাজু, জাহিদ শিকদার, বেলাল আহমেদ মুরাদ, রবিন চৌধুরী, বাহার, মতিউর রহমান, রিমু রোজা খন্দকার।
এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন রানা সরকার ও মোহাম্মদ মামুন।